Skip to main content

Posts

Showing posts with the label রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জেনেভায় বঙ্গবন্ধু ওয়ালিউর রহমানঃ

জেনেভায় বঙ্গবন্ধু ওয়ালিউর রহমানঃ ১৯৭২ সালে মার্চের শেষে জেনেভায় যাওয়ার আগে হঠাৎ বঙ্গবন্ধুর একটি টেলিফোন পেলাম। তিনি বললেন, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল এ্যাক্টের একটি ড্র্যাফট পাঠালাম, তুই একটু দেখতো। এই মহান মানুষটি সম্পর্কে যখন লিখতে যাই তখন কেমন জানি আনমনা হয়ে যাই। হারিয়ে যাই সেই অতীতের স্মৃতিতে। তখন চোখ দুটি অশ্রুতে ছল ছল করে ওঠে। এই মহান মানুষটিকে একনজর দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসত, মানুষের ঢল পড়ে যেত। আর তাকে কত কাছ থেকে দেখেছি, জেনেছি, উপলব্ধি করেছি তার অসাধারণ ভাবনাগুলোকে। তাঁর সংস্পর্শে থেকে তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি। অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। এটা ছিল পরম সৌভাগ্য। এই মহান নেতার জন্ম না হলে আমরা একটি স্বাধীন বাংলাদেশ পেতাম না। তাঁর সঙ্গে কাটানো প্রতিটি স্মৃতিই নাড়া দেয় মনকে। বঙ্গবন্ধুকে দেখার প্রথম স্মৃতি। ১৯৭২ সালে আগস্ট মাসে হঠাৎ প্রয়াত রফিকুল্লাহ চৌধুরীর ফোন আসে। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একান্ত ব্যক্তিগত সচিব এবং বর্তমানে জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পিতা। তিনি বললেন, বঙ্গবন্ধু জেনেভায় আসতে চান। বিষয়টা দেখেন। শতাব্দীর মহানায়ক বাংলাদেশের প্রত...

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন: বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের পটভূমিতে অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ আখ্যান ইতিহাসকে করেছে সমৃদ্ধ, করেছে জনপ্রিয়। বাঙালীর ইতিহাস শাশ্বত, সত্য ও চিরন্তন। এই ইতিহাস সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ সকল কিছুই বাঙালীর জীবনকে অর্থবহ করেছে, দিয়েছে পূর্ণতা। বাঙালী জাতি অন্যদের নিকট হয়েছে মর্যাদাবান। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে প্রতি বছর ২৬ মার্চকে যথেষ্ট ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পালন করে থাকে সমগ্র বাঙালী জাতি। আবার ১৯৭১ সালে আজকের এ দিনেই অর্থাৎ ২৫ মার্চের প্রথম প্রহরে বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। দেশব্যাপী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাকে প্রচারের নিমিত্তে যোগাযোগের সকল মাধ্যম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন গবেষণা গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হলে তাঁর অনুপস্থিতিতে...

শেখ মুজিবের সুচিন্তা থেকে আজকের বাঙালিরও শেখার আছে – অমর্ত্য সেন

শেখ মুজিবের সুচিন্তা থেকে আজকের বাঙালিরও শেখার আছে – অমর্ত্য সেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে একটা কথা মনে হচ্ছে। তিনি শুধু বাংলার বন্ধু ছিলেন না, তাঁর ভূমিকা ছিল আরও অনেক বড়, এবং অতুলনীয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের মহান রাজনৈতিক নায়ক, বাংলার সবচেয়ে সমাদৃত মানুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার। বাংলাদেশের জনজীবনে তাঁর প্রভাব আজও বিপুল। তাঁকে ‘বাংলাদেশের জনক’ বা বঙ্গবন্ধু বলাটা নিতান্তই কম বলা। তিনি যে এর চেয়ে বড় কোনও অভিধা চাননি, সেটা তাঁর সম্পর্কে আমাদের একটা সত্য জানায়— তিনি নাম কিনতে চাননি, মানুষ তাঁকে অন্তর থেকে ভালবাসত। এক জন অতি চমৎকার মানুষ এবং এক মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে, তাঁর চিন্তাভাবনা কেন আজকের পক্ষেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে-বিষয়ে কিছু কথা বলা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধুকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাঁর পরিচ্ছন্ন চিন্তা ও দৃষ্টির সম্পদ কেউ আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। তাঁর সেই চিন্তাভাবনা আজ আমাদের বড় রকমের সহায় হতে পারে। উপমহাদেশ আজ আদর্শগত বিভ্রান্তির শিকার হয়ে এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে, এই দুর্দিনে পথনির্দেশ এব...

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নারী জাগরণে যার চিন্তা চেতনা ছিল সমসাময়িক অবস্থার চেয়ে অনেক অগ্রসর (ঠাকুর বাড়ির মেয়েরা)

  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যার চিন্তা চেতনা ছিল সমসাময়িক অবস্থার চেয়ে অনেক অগ্রসর রবি ঠাকুরের মা   নারীবাদীর দৃষ্টি কোন  থেকে দেখলে সে সময়ের সমাজ ব্যবস্থায় নারীর করুন অবস্থা দেখা যায়। আর এই অবস্থা থেকে জোড়া সাঁকোর ঠাকুর বাড়িও ব্যতিক্রম ছিল না।    রবি ঠাকুরের অন্দর মহলের নারীরা কঠোর পর্দা প্রথার মধ্যে থাকতেন। তারা ছিলেন  অবরুদ্ধ। রেনেসার আগে ঠাকুর পরিবারে পর্দা প্রথা এতোই কঠিন ছিল যে তখন নারীরা  গঙ্গা স্নান করতে যেতে পারতেন না। যেতে পারতেন বছরে একবার মাত্র। সেটা ছিল মেয়েরা পালকির মধ্যে বসে থাকতো এবং  তা বিরাট এক চাদর দিয়ে ঢাকা থাকতো,  যাকে বলা হতো ‘প্যালেনকুইন’। চাদর  দিয়ে ঢাকা অবস্থাতেই মেয়েদেরকে পানিতে ডুবানো হতো। পালকিতে বসানো অবস্থাতে তারা স্নান সারতেন।         এই সেই অন্দর মহল ,যেখানে ঠাকুর বাড়ির নারীরা অবরুদ্ধ থাকতেন       অপ্রাপ্ত বয়েসে  বিবাহ   জ্ঞানদা নন্দিনী মাত্র সাত বছর বয়সে এবং কাদম্বরী দেবী মাত্র নয় বছর বয়েসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ...

রবীন্দ্রনাথ গল্পে কোন ধরনের ভাষার পক্ষে ছিলেন? কাব্যাড়ম্বরপূর্ণ নাকি সরল ভাষা!

গল্পের ভাষা কেমন হওয়া উচিত—সরল, জটিল না কৌতুকপূর্ণ? এ বিষয়ে কী বলেন রবীন্দ্রনাথ? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (২৫ বৈশাখ ১২৬৮—২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘মোপাসাঁর যেসব বিদেশি লেখকের কথা তোমরা প্রায়ই বলো, তাঁরা তৈরি ভাষা পেয়েছিলেন। লিখতে লিখতে ভাষা তৈরি করতে হলে তাদের কী দশা হতো জানি নে।’ গদ্য তৈরির সেই পথরেখা রবীন্দ্রনাথের একাধিক গল্পের চরিত্রদের নিজেদের লেখার মধ্যে আছে। ‘নষ্টনীড়’ গল্পে অমল যা লিখত, ‘আমার খাতা’—‘হে আমার শুভ্র খাতা, আমার কল্পনা এখনো তোমাকে স্পর্শ করে নাই। সূতিকাগৃহে ভাগ্যপুরুষ প্রবেশ করিবার পূর্বে শিশুর ললাটপত্রের ন্যায় তুমি নির্মল, তুমি রহস্যময়।’...আর ‘আষাঢ়ের চাঁদ’ রচনায় অমল লিখেছিল, ‌‘আজ কেন আষাঢ়ের চাঁদ সারা রাত মেঘের মধ্যে এমন করিয়া লুকাইয়া বেড়াইতেছে। যেন স্বর্গলোক হইতে সে কী চুরি করিয়া আনিয়াছে, যেন তাহার কলঙ্ক ঢাকিবার স্থান নাই।’ ইত্যাদি। আর চারু কী লিখেছিল? ‘কোনোমতেই অমলের গণ্ডি এড়াইতে না পারিয়া অবশেষে চারু রচনার বিষয় পরির্বতন করিল। চাঁদ, মেঘ, শেফালি, বউ-কথা-কও এ সমস্ত ছাড়িয়া সে “কালীতলা” বলিয়া একটা লেখা লিখিল। তাহাদের গ্রামে ছায়ায়-অন্ধকার পুকুরটির ধারে কালীর...