Skip to main content

নামজারি করার নিয়ম ২০২৩ । নামজারি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ৪৩ টি জিজ্ঞাসা ও উত্তর


নামজারি করার নিয়ম ২০২৩ । নামজারি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ৪৩ টি জিজ্ঞাসা ও উত্তর|


প্রথমেই আসুন জানি নামজারি কী এবং কখন করতে হয়? কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বৈধ পন্থায় জমি বা ভূমির মালিকানা অর্জন করলে সরকারি রেকর্ড সংশোধন করে তার নিজের নামে রেকর্ড Up to Date বা হালনাগাদ করাকেই নামজারি বলে।


কোন নামজারি সম্পন্ন হলে জমির মালিক কে একটি খতিয়ান দেয়া হয় যেখানে তার অর্জিত জমির একখানি সংক্ষিপ্ত হিসাব বিবরণী যেখানে খতিয়ানে মালিকের নাম, মৌজা, মৌজার নম্বর (জে এল নম্বর), জরিপের দাগ নম্বর, দাগে জমির পরিমান, জমির শ্রেণি, একাধিক মালিক হলে তাদের নির্ধারিত অংশ ও প্রতি বছরের ধার্যকৃত খাজনা (ভূমি উন্নয়ন কর) ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। খারিজ করার সময় সীমা ২০২৩ । জমির নামজারির বিস্তারিত জানুন



নামজারি যেসকল কারনে করার প্রয়োজন হয় তা হলোঃ


০১) ভূমি বা জমির বর্তমান মালিকের মৃত্যুর কারণে উত্তরাধিকারদের নামে সরকারি রেকর্ডে রেকর্ডভুক্ত করতে হলে নামজারি করতে হয়।

০২) জমি বিক্রি, দান, ওয়াকফ, হেবা, অধিগ্রহণ, নিলাম ক্রম, বন্দোবস্ত ইত্যাদি সূত্রে হস্তান্তর হলে নতুন ভূমি বা জমি মালিকের নামে রেকর্ডভুক্ত করতে হলে নামজারি করতে হয়;

০৩) কোর্টের রায়ে জমির মালিকানা লাভ করলে সে রায় মোতাবেক নামজারি করতে হয়।


নামজারি নিয়ে সাধারণ প্রশ্ন-উত্তর:

(১) নামজারি সেবা প্রাপ্তি সময়

  • সাধারণ ক্ষেত্রে ২৮ (আটাশ) কার্য দিবস ।
  • প্রবাসীদের জন্য ( মহানগর এলাকায়) ১২ (বার) কার্য দিবস ।
  • প্রবাসীদের জন্য ( অন্যান্য এলাকায়) ০৯ (নয়) কার্য দিবস ।
  • সনদ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাগণের জন্য ১০(দশ) কার্য দিবস ।
  • গুরুত্বপূর্ণ/রপ্তানীমুখী/বৈদেশিক বিনিয়োগপুষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ০৭ (সাত) কার্য দিবস ।

(২) নামজারি প্রয়োজনীয় ফি (সকল ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে)



নামজারী করতে সর্বমোট ১১৭০ টাকা লাগে ।



বিস্তারিত নিম্নরূপ:-
আবেদনে কোর্ট ফী ২০ টাকা ,

নোটিশ জারি ফী ৫০ টাকা ,

খতিয়ান ফি ১০০ টাকা ,

রেকর্ড সংশোধন ফি ১০০০/-টাকা


ই-মিউটেশনের আবেদনের সাথে কোর্টফি ও নোটিশ জারি ফি বাবদ একত্রে ৭০/ টাকা এবং নামজারি অনুমোদনের পর বাকি ১১০০ টাকা পরিশোধ করতে হয়। সকল ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। নামজারি বা মিউটেশন করার উপায় ২০২৩ | Mutation Form বা খারিজের ফরম সংগ্রহ করুন


(৩) জমির মালিকানা সূত্র কি কি ভাবে হতে পারে- জমির মালিকানা সূত্র নিম্নরূপ-

  • ক্রয় সূত্র: প্রকৃত ভূমি মালিকের নিকট থেকে জমি দলিলমূলে ক্রয় করা হলে।
  • ওয়ারিস সূত্র: ভূমি মালিকের মৃত্যুর পর তাঁর জমিজমা উত্তরাধিকারীগণ প্রাপ্ত হলে।
  • হেবা সূত্র: প্রকৃত ভূমি মালিক কর্তৃক কাউকে কোন জমি দান করা হলে।
  • ডিক্রি সূত্র : বিজ্ঞ আদালতের রায় ডিক্রিমূলে কোন জমি প্রাপ্ত হলে ।
  • নিলাম সূত্র : সরকারি পাওনা অনাদায়ে রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতের আদেশে কোন দায়বদ্ধ জমি নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় হলে।
  • বন্দোবস্ত সূত্র: সরকারি খাসজমি দীর্ঘমেয়াদি লিজ (সাধারণ ক্ষেত্রে ৯৯ বৎসরের জন্য) নেয়া হলে।
  • অধিগ্রহণ সূত্র: সরকার বা ব্যক্তি উদ্যোগে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থাবর সম্পত্তি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল আইন অনুযায়ী সরকার কর্তৃক সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা প্রত্যাশীর অনুকূলে কোন জমি অধিগ্রহণ করা হলে।

(৪) নামজারি বাতিলের জন্য করণীয় কি?


নামজারী বাতিলের জন্য উক্ত নামজারীর আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে কাগজপত্রসহ উপযুক্ত কারণ বর্ণনা করে উপজেলা ভূমি অফিসে মিস কেস দায়ের করার মাধ্যমে নামজারী বাতিল করা যায়। ৩০দিনের বেশী বিলম্বের ক্ষেত্রে উক্ত বিলম্বের উপযুক্ত কারণ বর্ণনা করতে হবে। এক্ষত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ১৫০ ধারার বিধান মতে আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।

(৫) নামজারি আবেদন না মঞ্জুর হলে করনীয়

বিভিন্ন কারণে নামজারি আবেদন বাতিল কিংবা নামঞ্জুর হতে পারে। কাগজপত্রে ঘাটতির জন্য বা অসম্পূর্ণ আবেদনের জন্য তদন্ত ও শুনানীর পূর্বেই নামজারি আবেদন বাতিল হলে বাতিলের কারণ নির্নয় করে উক্ত কারণ দূরীভূত করে পুনরায় আবেদন করতে হবে।


(ক) শুনানী নিয়ে নামজারি আবেদন নামঞ্জুর হলে সহকারী কমিশনার (ভূমি)র আদেশের বিরুদ্ধে ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব)র নিকট আপিল দায়ের করা যাবে ।

(খ) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) এর আদেশের বিরুদ্ধে ৬০ ( ষাট) দিনের মধ্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(রাজস্ব)র নিকট আপিল দায়ের করা যাবে । এবং

(গ) অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার(রাজস্ব)র আদেশের বিরুদ্ধে ৯০(নব্বই) দিনের মধ্যে ভূমি আপিল বোর্ডে আপিল দায়ের করা যাবে।

রিভিউ আবেদন যে কর্মকর্তা আদেশ দিয়েছেন, তাঁর বরাবরই রিভিউ করতে হবে। রিভিউ করতে হয় ৩০ দিনের মধ্যে। তবে আপিল করা হলে আর রিভিউ আবেদন করা যায় না।


(৬) ভূমি মালিকের ওয়ারিশ সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি। উক্ত সম্পত্তি ওয়ারিশদের মধ্যে একজন বিক্রয় করতে চাইলে তার নামজারি থাকতে হবে কিনা? নামজারী থাকতে হবে ।

(৭) ভূমি মালিকের ওয়ারিশ সম্পত্তি বণ্টন করা হয়নি। উক্ত সম্পত্তি ভূমি মালিক হেবা/দানপত্র করতে চাইলে তার নামজারি থাকতে হবে কিনা? নামজারী থাকতে হবে ।
(৮) জমির রেকর্ড এর ধারাবাহিকতা কিভাবে জানা যাবে

পূর্ববর্তী রেকর্ডীয় মালিক হতে উত্তরাধিকার বা হস্তান্তর দলিল সূত্রে মালিকানা পরিবর্তনের প্রমাণ পত্র পরবর্তী রেকর্ডের সাথে মিলিয়ে জমির রেকর্ডের ধারাবাহিকতা জানা যাবে। প্রতিটি জরিপে নতুন প্রস্তুতকৃত মৌজা নকশায় প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে নতুন করে দাগ নম্বর দেয়া হয়, যা্র ভিত্তিতে ভূমি মালিকের জমির নতুন খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। প্রতিটি রেকর্ডে পূর্ববর্তী খতিয়ান ও দাগের সম্পর্ক দাগ সূচি ও মাঠ পর্চায় উল্লেখ করা থাকে, যা দেখে তার পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা বুঝা যায়।

(৯) বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত ভূমি জরিপ এবং সংশ্লিষ্ট জরিপে প্রস্তুত খতিয়ান সরকার নির্দিষ্ট সময় পর পর মাঠপর্যায়ে সার্ভে করে মালিকানার নাম প্রকাশ করে থাকে। এপর্যন্ত করা সার্ভে নিম্নরূপ:


(ক) সিএস(CS) = ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দ সাল থেকে ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ সাল পর্যন্ত বৃটিশ সরকারের তত্ববধানে বাংলায় একটি ভূমিজরিপ হয় যাকে C.S (Cadastral Survey ) বলে। Cadastral Survey হচ্ছে কোন এলাকায় প্রথম পূর্ণাঙ্গ জরিপ, যেখানে ইতোপূর্বে কখনও জরিপ হয়নি বা পূর্ববর্তী জারিপ মানচিত্র বা জরিপ রেকর্ড নাই। রামু থানা থেকে শুরু করে দিনাজপুরে এ জরিপ শেষ হয়. এটাই ব্রিটিশ ভারতের প্রথম ভূমি জরিপ। এই জরিপের কৃত নকশাকে C.S নকশা বলে,খতিয়ানকে C.S খতিয়ান বলে।

(খ) এসএ (SA) = জমিদারি উচ্ছেদ হওয়ার পর ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ সাল থেকে ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দ সাল পর্যন্ত জমিদারদের নিকট থেকে অধিগ্রহণকৃত ভূসম্পত্তির হিসাব নির্ণয়ের জন্য যে জরিপ করা হয় SA (State Aquisition ) জরিপ বলে। এই জরিপে কৃত নকশাকে এস এ নকশা বলে এবং খতিয়ানকে এস এ খতিয়ান বলে।

(গ) আর এস (RS) = C.S জরিপের পর ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দ সাল থেকে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দ সাল পর্যন্ত সংশোধনী জরিপকে R.S জরিপ বলে। এস এ জরিপের পর ১৯৬৫ সালে রাজশাহী হতে শুরু হওয়া ১৯৬৮ হতে ১৯৮০ এর মধ্যে সমাপ্ত জরিপকে আর এস ২ বলে। উভয় জরিপে প্রস্তুত খতিয়ানকে আর এস খতিয়ান বলে।

(ঘ) বি আর এস (BRS)/ বিএস (BS) = বাংলাদেশ আমলে ১৯৯৮-৯৯ সালে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক সংশোধনী জরিপকে বিএস বা বিআরএস জরিপ বলে। অনেক ক্ষেত্রে তা এখনও চলমান আছে। এ জরিপে প্রস্তুতকৃত খতিয়ানকে এলাকাভেদে বিএস বা বিআরএস খতিয়ান বলে।

(ঙ) বিডিএস(BDS) = বর্তমানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে যে ভূমি জরিপ হচ্ছে সেই জরিপকে BDS ( Bangladesh Digital Survey) বলে। এই জরিপ এখনও চলমান। এই জরিপে যে সকল খতিয়ান প্রস্তুত হবে তাকে বিডিএস খতিয়ান বলা হবে।

(চ) সিটি জরিপ = সাম্প্রতিক কালে মোটামুটি ২০০০ সালের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে সম্পন্ন সংশোধনী জরিপকে সিটি জরিপ এবং এর মাধ্যমে প্রস্তুত খতিয়ানকে সিটি খতিয়ান বলে।

(ছ) দিয়ারা জরিপ = প্রধানতঃ নদী ভাঙ্গনকৃত এলাকায় বিশেষায়িত পদ্ধতিতে দ্রুত জরিপের জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে দিয়ারা জরিপ অপারেশন নামে আলাদা একটি ইউনিট রয়েছে। এই ইউনিটের ব্যবস্থাধীনে প্রধানতঃ নদী এলাকায় জরিপ করে যে রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় তাকে দিয়ারা জরিপ বলে।





(১০) প্রবাসীরা কিভাবে বিদেশে বসে নামজারি করতে পারবেন? অনলাইনে নামজারি আবেদন এবং ফী পরিশোধ করবেন। অনলাইনে শুনানীর মাধ্যমে নামজারি কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারবেন।



(১১) ওয়াকফ বা দেবোত্তর জমি নামজারি করা যাবে কিভাবে? ওয়াকফ ও দেবোত্তর সম্পত্তি সাধারণভাবে বিক্রয় বা হস্তান্তর নিষিদ্ধ । অপরিহার্য প্রয়োজনে ওয়াকফ সম্পত্তির কিছু অংশ বিক্রয় বা হস্তান্তর করতে হলে ওয়াকফ প্রশাসকের নিকট অবেদন করতে হয়, ওয়াকফ প্রশাসকের সভাপতিত্বে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি যাচাই বাছাই করে প্রস্তাবিত হস্তান্তর একান্তই অপরিহার্য দেখা গেলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে বিক্রয় বা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অপর দিকে দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রয় বা হস্তান্তরের অনুমোদনের জন্য বিজ্ঞ আদালতে যেতে হয়। কাজেই ওয়াকফ সম্পত্তি ক্রেতার আবেদনে নামজারি করতে হলে দলিল ছাড়াও অবশ্যই ওয়াকফ প্রশাসকের মাধ্যমে বৈধভাবে অনুমতি প্রাপ্ত কিনা তার প্রমাণপত্র লাগবে। দেবোত্ত্বর সম্পত্তি ক্রেতার আবেদনে নামজারি করতে হলে অবশ্যই দলিল ছাড়াও বিজ্ঞ সিভিল কোর্টের রায় ডিক্রির প্রমাণ পত্র দেখতে হবে।



(১২) খাস জমি কী নামজারি করা যায়? ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যে জমি সরকারের পক্ষে কালেক্টর তত্ত্বাবধান করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে। খাস জমি ক্রয় বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যায় না বিধায় তৎসূত্রে নামজারি করা যায় না। কিন্তু সরকার খাস জমি কাউকে স্থায়ী বন্দোবস্ত দিলে তার নামে নামজারি করা যায় এবং এইরূপ স্থায়ী বন্দোবস্তকৃত খাসজমি কেবলমাত্র উত্তরাধিকারসূত্রে নামজারি করা যায়। যেমন- ভূমিহীনদের মাঝে সরকার যে খাসজমি দিয়ে থাকেন তা উত্তরাধিকারসূত্রে নামজারি করা যায়। আবার স্থায়ী বন্দোবস্তকৃত খাসজমি অধিগ্রহণ সূত্রে মালিকানা পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রেও নামজারি করা যায়।



(১৩) কি কি ধরণের ভুলের কারণে নামজারি আবেদন না-মঞ্জুর হয়ে থাকে? নামজারি আবেদনে সাধারণত যে সকল ভুল পরিলক্ষিত হয় এবং আবেদনটি মঞ্জুর করা সম্ভব হয় না, তা নিম্নরূপ:



ক) নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় তথ্য বা কাগজপত্র না থাকা, যেমন-

  • নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষরিত মূল আবেদন পত্র (ই-নামজারির জন্য অনলাইনে আবেদন )।
  • আবেদনকারীর ১(এক )কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি (একাধিক ব্যক্তি হলে প্রত্যেকের ছবি )।
  • প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রতিনিধির ১(এক )কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • আবেদনকারীর পরিচয়পত্রের সত্যায়িত অনুলিপি (জাতীয় পরিচয়পত্র/ভোটারআইডি/জন্ম নিবন্ধন
  • সনদ /পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা অন্যান্য)।
  • সংশ্লিষ্ট খতিয়ানের ফটোকপি /সার্টিফাইড কপি।
  • বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের দাখিলা।
  • সর্বশেষ জরিপের পর থেকে বায়া দলিলের সার্টিফাইড কপি বা ফটোকপি। (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  • উত্তরাধিকারসূত্রে মালিকানা লাভ করলে অনাধিক তিন মাসের মধ্যে ইস্যুকৃত ওয়ারিশ সনদ পত্র।
  • আদালতের রায় ডিক্রির মাধমে মালিকানার ক্ষেত্রে রায় ডিক্রির সার্টিফাইড কপি বা ফটোকপি।



খ) ক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত জমির আবেদনে ভুল –

  • সংযুক্ত দলিলের নামের সহিত আবেদনকারীর নামের মিল না থাকা ।
  • আবেদনের সহিত সংযুত্ত দলিলে দাতার নামের সহিত রেকর্ডীয় মালিকের মিল না পাওয়া ।
  • আবেদনে সংযুক্ত দলিলে দলিল গ্রহিতা এবং নামজারী প্রস্তাবে গ্রহীতার ভিন্নতা থাকা ।



গ) ওয়ারিশ সংক্রান্ত আবেদনে ভুল –



  • আবেদনে ওয়ারিশ সনদপত্র সংযুক্ত না থাকা ।
  • জাল ওয়ারিশ সনদ জমা দেয়া ও অংশীদের তথ্য গোপন করা ।
  • ওয়ারিশ দের মাঝে জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ এবং আপত্তি থাকা ।
  • যৌথ মালিকানাধীন অথবা ওয়ারিশভুক্ত জমি হস্তান্তরের সময় দলিলদাতাদের বাটোয়ারা দলিল না
  • থাকায় এবং দলিল দাতা প্রাপ্যতার চেয়ে বেশী জমি হস্তান্তর করা ।



ঘ) অন্যান্য যেমন-

  • আবেদনে দাতার খতিয়ানে জমি না থাকায়, অর্থাৎ দাতা খতিয়ানে থাকা জমির পরিমানের থেকে বেশি
  • জমি বিক্রয় / হস্তান্তর করে ঢাকা।
  • আবেদিত জমি বিষয়ে মামলা চলমান থাকায় ।
  • দলিলে দাগ ভুল, অর্থাৎ ভুল দাগ নম্বর দিয়ে দলিল করা ।
  • আবেদনকারী মৃত হলে ।
  • আবেদনকৃত জমির আবেদনকারীর তথ্যে গরমিল থাকা ।
  • আবেদনকৃত জমির শ্রেণী দলিলে ভিন্নতা থাকা ।
  • আবেদিত জমিতে সরকারি স্বার্থ জড়িত থাকা ।
  • হাল রেকর্ড মোতাবেক আবেদন না করায় ।
  • ভায়া দলিল না থাকা, অর্থাৎ সর্বশেষ জরিপ / রেকর্ডের পরবর্তী হস্তান্তর দলিল না প্রদান করা ।
  • বাদির ফোন নম্বর সঠিক প্রদান না করা ।
  • শুনানির জন্য দাতার সকলকে বিবাদি না করা ।
  • ভি পি মিস কেসের আদেশ এর কপি না থাকায়, অর্থাৎ আবেদিত জমি ভি পি কেস হতে মুক্ত বলে দাবি করলেও এর স্বপক্ষে রায়ের কপি সংযুক্ত না করা ।
  • এলএ কেসের একোয়ারভূক্ত ভূমি, যাহা পরবর্তীতে গেজেটের মাধ্যমে অবমুক্ত হয়, নামজারি আবেদনে জেলা প্রশাসনের এল এ শাখা অনাপত্তি পত্র সংযুক্ত না থাকা ।
  • আবেদনে রাজউকের অনুমতিপত্র সংযুক্ত না থাকা ।
  • আবেদনে সংযুক্ত খতিয়ান অষ্পষ্ট ও ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করা 


(১৪) নামজারি করতে ২৫ বছরের মালিকানা স্বত্ব প্রদান করা বাধ্যতামূলক কিনা? নামজারী করতে ২৫ বছরের মালিকানা স্বত্ব বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু সর্বশেষ রেকর্ড বা সর্বশেষ নামজারি হতে মালিকানা স্বত্ব পরিবর্তনের প্রমানপত্র বা বায়া দলিলাদি দেয়া বাধ্যতামূলক।

(১৫) নামজারি আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করার কোনো সুযোগ আছে কি?


নামজারি আবেদন দাখিল, তদন্ত ও শুনানীর জন্য প্রয়োজনীয় সময় আবশ্যক। সঠিক তথ্য প্রদান এবং শুনানিতে প্রমাণক উপস্থাপন করলে ভূমি নামজারি কাজে সময় সাশ্রয় হয়ে থাকে। জনগণকে দ্রুত সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনামতে ২৮ দিনের মধ্যে নামজারি আবেদন নিস্পত্তি হয়ে থাকে। তদন্ত ও শুনানীতে সময় কমিয়ে এর কম সময়ে নামজারি করা যেতে পারে। একটি ভূমি অফিসে আবেদিত একটি নামজারি ছাড়াও আরও অনেক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়, নির্ধারিত ২৮ দিনের চেয়ে কম দিনে নামজারি করে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ ঠিক হবেনা। তবে বিশেষ বিবেচনায় প্রবাসী নাগরিক, খেতাব প্রাপ্ত মুক্তি যোদ্ধা ও রপ্তানীমুখী শিল্পের ক্ষেত্রে কম দিনে নামজারি করে দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে।





(১৬) আমার আবেদনে তথ্য প্রদানে ভুল করেছি এবং আবেদন ইতিমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে – আমি কী করতে পারি?




সহকারি কমিশনার (ভূমি) এই আবেদনটি প্রক্রিয়া শুরু না করা পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন তথ্য সংশোধন করা যাবে। আবেদন সাবমিট করার পর পরই আবেদনকারি তাঁর মোবাইলে একটি OTP পান। তথ্য সংশোধন করতে চাইলে আবেদন সার্চ করলে OTP প্রদান করে টাইপ করে পুনরায় ফরমটি ওপেন করতে পারবেন। বিভাগ, জেলা, উপজেলা ছাড়া সব কিছু সংশোধন করতে পারবেন। প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে আবেদনকারি আর সংশোধনের সুযোগ পাবেন না, তবে আবেদনকারী শুনানির সময় সহকারি কমিশনার (ভূমি) মহোদয়ের নিকট তথ্য সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন।

(১৭) অনলাইনের পরিবর্তে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আবেদন করার সুযোগ আছে কি? বর্তমানে ই-নামজারি ব্যতীত কোনো ধরণের ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আবেদন করার সুযোগ নাই।

(১৮) আমি অনলাইন অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা পেয়েছি – আমি কী করতে পারি?

সাধারণত নামজারিতে চালানের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধিত হবার পর সেবা নিশ্চিত করা হয় এবং আপনার পরিশোধিত অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরকারের চালান সিস্টেমে জমা হয়ে চালান ইস্যু হতে কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। অনলাইনে অর্থ প্রদানে সমস্যা হলে ভূমি মন্ত্রণালয়ে হটলাইন ১৬১২২ নম্বরে জানাতে পারবেন।
(১৯) নামজারি করার জন্য ফি পরিশোধ প্রক্রিয়া কি কি?


আবেদন সাবমিট করার সময় ফি প্রদানের অপশন আসবে। যেকোন একটি পেমেন্ট ইন্সট্রুমেন্ট ব্যাবহার করে পেমেন্ট করতে পারবেন। আবেদন সাবমিট করে যদি পরবর্তীতে ফি প্রদান করতে চান তাহলে mutation.land.gov থেকে আবেদন নম্বর জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর ব্যবহার করে আবেদন ট্রাকিং করে ফি প্রদান করা যাবে।অনুরূপভাবে আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে DCR ফি দেওয়া যাবে।

(২০) আমার নামজারি আবেদনের শুনানির সময়সূচী পাইনি। এক্ষেত্রে করণীয় কি?

সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবেদনের জন্য শুনানির তারিখ নির্ধারণ না পর্যন্ত সময়সূচি আবেদনকারি পাবেন না। ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে প্রতিবেদন পাবার পরে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করলে আবেদনে প্রদানকৃত মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে জানতে পারবেন। ২৮ দিনের মধ্যে নামজারি আবেদন নিস্পত্তির নির্দেশনা আছে। ইতোমধ্যে বেশ সময় অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও শুনানীর সময় ধার্য্য হয়নি, বুঝা যায় তদন্ত বা অন্য কোন পর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাফিলতি করছেন, যা কাম্য নয়। আপনি এ বিষয়ে অভিযোগ জানাতে ভূমি সেবা হেল্পলাইন ১৬১২২ নাম্বারে কল করতে পারেন।


(২১) অনলাইন শুনানির সময় পরিবর্তন করা যাবে কি? নাগরিক কর্নার থেকে সিস্টেমের মাধ্যমে শুনানির সময় পরিবর্তন করা যাবে না। তবে, শুনানির তারিখে হাজির হতে না পারলে সহকারী মকমিশনার(ভূমি)র সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তী সুবিধাজনক তারিখে শুনানি গ্রহণের সুযোগ আছে।


(২২) আমার নামজারি আবেদন শুনানি অনলাইনে করতে চাই। এটি কিভাবে পেতে পারি

আপনি অনলাইনে শুনানি করতে চাইলে পেমেন্ট করার পর্যায়ে এই প্রশ্নে হ্যাঁ নির্বাচন করবেন অথবা http://oh.lams.gov.bd লিংকে অনুরোধ প্রদান করতে হবে। এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন এবং অনলাইন শুনানির জন্য একটি লিংক আবেদনে প্রদত্ত মোবাইলে পাঠাবেন।

(২৩) অনলাইনে নামজারি শুনানিতে কি কি প্রস্তুতি রাখতে হবে?
আপনার আবেদনে স্বপক্ষে দলিলাদি উপস্থাপন করা লাগবে। একইসঙ্গে, দাতা ও গ্রহিতার সকলের পরিচয় নিশ্চিত করা, আবেদনে প্রদত্ত তথ্যাদি সম্পর্কে সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর প্রশ্নের উত্তর সঠিক দেয়া এবং খতিয়ান / দাগে জমির পরিমান সম্পর্কে ধারাবাহিকতা সংক্রান্ত তথ্য প্রস্তুত রাখা। তবে, সহকারি কমিশনার (ভূমি) অনলাইন শুনানিতে প্রদত্ত তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে, তিনি তাঁর অফিসে স্বশরীরে শুনানি এবং সংশ্লিষ্ট দলিলাদি উপস্থাপনের জন্য নির্দেশ প্রদান করতে পারবেন।

(২৪) আমার নামজারি আবেদনের অগ্রগতি কিভাবে দেখতে পারব?

mutation.land.gov.bd সাইটে গিয়ে আবেদন ট্রাকিং করলে বিস্থারিত জানাযাবে। বিভাগ, আবেদন নম্বর, আবেদনে প্রদানকৃত জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে ট্রাকিং করতে পারবেন।

(২৫) মূল খতিয়ান নিতে কি ভূমি অফিসে যেতে হবে?

অনলাইনে ডিসিআর (DCR) ফী ১,১০০ টাকা পরিশোধ করলে অনলাইনেই চালান প্রক্রিয়া শুরু হবে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালান পরিশোধিত হলে https://mutation.land.gov.bd/ এই লিঙ্ক এ গিয়ে আবেদন ট্র্যাকিং করে খতিয়ান প্রিন্ট এবং ডিসিআর প্রিন্ট কপিটি পাবেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের ০২.১১.২০২১.খ্রিস্টাব্দের স্মারক নং ৩১.০০.০০০০.০৪২.৮.০১১.২০-৫৫৯ নির্দেশনা মোতাবেক কিউআর কোডযুক্ত (Quick Response Code) অনলাইন খতিয়ান আইনগতভাবে বৈধ ও সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য ও ব্যবহারোপযোগ্য হবে। তাই আপনাকে ভূমি অফিসে গিয়ে কোনো ম্যানুয়াল খতিয়ান সংগ্রহ করতে হবে না।

(২৬) অনলাইনে যে খতিয়ান দেয়া হবে, তা কি আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য বা অনলাইন খতিয়ানে ভূমি অফিসের স্বাক্ষর ও সিল লাগবে কিনা?


ভূমি মন্ত্রণালয়ের ০২.১১.২০২১ খ্রিঃ তারিখের স্মারক নং ৩১.০০.০০০০.০৪২.৮.০১১.২০-৫৫৯ নির্দেশনা মোতাবেক কিউআর কোডযুক্ত (Quick Response Code) অনলাইন খতিয়ান আইনগতভাবে বৈধ ও সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য ও ব্যবহারোপযোগ্য হবে। তাই আপনাকে ভূমি অফিসে গিয়ে কোনো ম্যানুয়াল খতিয়ান সংগ্রহ করতে হবে না এবং অনলাইন খতিয়ানে ভূমি অফিসের স্বাক্ষর ও সিল লাগবে না। ই নামজারি করার নিয়ম । ভূমির ই-নামজারি করার জন্য ব্যবহার নির্দেশিকা ২০২২

(২৭) একটি খতিয়ান সঠিক কিনা তা আমি কিভাবে নিশ্চিত হবো?

কিউআর কোডযুক্ত (Quick Response Code) অনলাইন খতিয়ান সঠিক কিনা যাচাইয়ের জন্য কিউআর কোড মোবাইলে স্ক্যান করলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের পোর্টাল (mutation.land.gov.bd) এ উক্ত কোডের বিপরীতে তথ্য দেখানো হবে। যে সকল খতিয়ান কিউআর কোডযুক্ত নয়, তা যাচাইয়ের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ই-নামজারি অথবা ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড (ই-পর্চা) ব্যবহার করতে পারবেন।


(২৮) কি কারণে আবেদন বাতিল হলো তা জানার জন্য কার কাছে যাবো?


সহকারি কমিশনার (ভূমি) সুনির্দিষ্ট কারণেই নামজারি আবেদন বাতিল বা নামঞ্জুর করেন এবং তা ই-নামজারি সিস্টেমে লিপিবদ্ধ করেন। নামজারি কোনো আবেদন বাতিল বা নামঞ্জুর হলে আবেদনের বিপরীতে আদেশটি অনলাইনেই দেখা যাবে। এজন্য ভূমি অফিসের কারো কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

(২৯) আবেদনকারি চূড়ান্ত নামজারি খতিয়ান পাওয়ার পরে খতিয়ানে কোন ভুল তথ্য পেলে তা সংশোধনের উপায় কি?

খতিয়ানসহ সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। সহকারি কমিশনার (ভূমি) খতিয়ানের তথ্য সংশোধন করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এবং এক্ষেত্রে সংশোধনের জন্য কোনো ফী প্রয়োজন নেই।


(৩০) মিউটেশন অর্ডার চূড়ান্ত স্বাক্ষর হবার পূর্বে তথ্য নির্ভুল আছে কিনা তা দেখার কোনো বিধান আছে কি?


ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা (ULAO) যখন সহকারি কমিশনার (ভূমি)’র কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন তখন নাগরিক কর্নার থেকে আবেদন ট্রাকিং করে আবেদনকারি খসড়া খতিয়ানের সকল তথ্য দেখতে পারেন। এখানে যদি কোন ভুল থাকে সেটা শুনানির সময় সহকারি কমিশনার (ভূমি)কে অবগত করবেন। তখন সহকারি কমিশনার (ভূমি) এটি সংশোধন করে দিবেন।

(৩১) ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ভুল দিয়ে মিউটেশন করা হয়, তাহলে প্রতিকারের কি ব্যবস্থা? জমি যদি এই ভুল ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দিয়ে একাধিক মিউটেশন হয়ে যায়, তখন সর্বশেষ ক্রেতার করণীয় কি?



পূর্ববর্তী মিউটেশনে ভুল তথ্য দিয়ে বেশী জমি মিউটেশন করে নেয়ায় সর্বশেষ বৈধ ক্রেতা যদি ক্রয়কৃত জমির মিঊটেশন করাতে না পারেন, তবে তিনি পূর্ববর্তী মিউটেশন সমূহ বাতিলের বা সংশোধনের জন্য সহকারী কমিশনার(ভূমি)র নিকট মিস কেস দায়ের করতে পারেন


(৩২) মালিকানার তথ্য বুঝতে কিভাবে পর্চা ও মৌজা ম্যাপ ব্যবহার করা হবে?


মালিকানার তথ্য মৌজা ম্যাপে থাকে না। মৌজা ম্যাপে জমির অবস্থান এবং দাগ নম্বর দেখা যায়। পর্চা বা খতিয়ান হচ্ছে সরকার প্রদত্ত আইনগত দলিল যেখানে দাগ নম্বর অনুযায়ী মালিকের বিবরণ ও জমির পরিমান উল্লেখ করা হয়। পর্চা বা খতিয়ান থেকে মালিকানার তথ্য পাওয়া যাবে। কাজেই খতিয়ানে উল্লেখিত মালিকের দাগে জমির পরিমান এবং মৌজা ম্যাপে সংশ্লিষ্ট দাগে জমির পরিমান মিলিয়ে মালিকানার তথ্য যাচাই করে নেয়া যাবে। মিউটেশন করার নিয়ম ২০২৩ । ই নামজারি করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

(৩৩) পর্চা ও মৌজা ম্যাপ কি পরিবর্তন হতে পারে? তাহলে, কোন পর্চা ও মৌজা ম্যাপ যাচাই করা প্রয়োজন

প্রত্যেক নতুন জরিপের মাধ্যমে পূর্বের জরিপে প্রস্তুত মৌজাম্যাপ এবং খতিয়ান (পর্চা) বাস্তব অবস্থার সাথে মিলিয়ে পরিবর্তন হয়ে থাকে। নতুন জরিপের মৌজা ম্যাপ ও পর্চা সংগ্রহ করে আপনার জমির অবস্থান, দাগ নম্বর ও পরিমান; ম্যাপে, খতিয়ানে ও সরেজমিনে মিলিয়ে নিতে পারেন।


(৩৪) মিউটেশন খতিয়ান কি ক্রেতাকে সেটেলমেন্ট অফিসে পাঠাতে হবে, নাকি ভূমি অফিস পাঠাবে?সেক্ষেত্রে সংশোধন খতিয়ান ও ম্যাপ কখন তৈরী হয়?



জরীপের সময় ভূমি মালিক জরিপ কর্মচারীদের তাঁর জমির কাগজপত্রাদি বিশেষ করে নামজারির কাগজ দেখিয়ে নিজের জমির রেকর্ড করিয়ে নিতে হবে। জরীপকালে ভূমি মালিকের নামজারি খতিয়ানের কপি ভূমি অফিস জরিপ অফিসে সরবরাহের বিধান নেই। ভূমি অফিস শুধু সরকারি জমির খতিয়ান কপি জরিপ অফিসে দিয়ে থাকেন। জরিপের প্রাথমিক স্তরে কিস্তোয়ার পর্যায়ে ম্যাপ এবং খানাপুরী ও বুঝারত পর্যায়ে প্রাথমিক খতিয়ান বা পর্চা তৈরী হয়।


(৩৫) জমির বিপরীতে খাজনা বকেয়া বা সার্টিফিকেট মামলা আছে কিনা, তা কিভাবে জানা যাবে?


ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপজেলা ভূমি অফিস ছাড়া সার্টিফিকেট মামলা দেখার সুযোগ নেই। অবশ্যই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তলব বাকি রেজিস্টারে দেখতে হবে সেখানে ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়ার কোন তথ্য আছে কিনা? সার্টিফিকেট মামলা আছে কিনা তা সরাসরি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে জানা যাবে।


(৩৬) জমির বিপরীতে কোনো মামলা আছে কিনা, তা কিভাবে জানা যাবে?


জমি নিয়ে মামলা আছে কিনা তা তৃতীয় পক্ষের দাপ্তরিকভাবে জানার সুযোগ কম। সংশ্লিষ্ট এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন। তাছাড়া যখন নিশ্চিত হবেন যে অমুক কোর্টে একটি মামলা আছে, তখন সংশ্লিষ্ট কোর্টের সেরেস্তায় গিয়ে জমির তফসিল দিয়ে তল্লাশী দিয়ে এ বিষয়ে জানতে পারেন। তাছাড়া মামলায় সরকারকে পক্ষ করা হলে ইউনিয়ন ভূমি অফিস নোটিশ পায়, এক্ষেত্রে ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে তথ্য জানতে পারেন


(৩৭) সহকারী কমিশনার (ভূমি) কি নিজ উদ্যোগে জমা একত্রীকরণ করতে পারেন? যদি একই মালিকের একই মৌজায় একাধিক দাগে জমি থেকে থাকে?


যেসকল জমি সরকারিভাবে বরাদ্ধ দিয়ে থাকেন যেক্ষেত্রে সহকারি কমিশনার (ভূমি) নিজ উদ্যোগে জমা একত্রীকরণ করে থাকেন (যেমন গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের সকল জমি) । এলটি নোটিশের ভিত্তিতে সহকারী কমিশনা (ভূমি) নিজ উদ্যোগে নামজারি মামলা শুরু করতে পারেন, তবে এক্ষেত্রে ভূমি মালিককে শুনানীতে অংশ নিতে হবে ও নামজারি ফি প্রদান করতে হবে।


(৩৮) মিউটেশন কাজের সঙ্গে সঙ্গে সংশোধিত দাগের ম্যাপ গ্রহণ করার সুযোগ আছে কিনা?

খতিয়ানে নামজারির সাথে সাথে মৌজাম্যাপে সংশ্লিষ্ট দাগ সমূহ বিভাজন করে দেয়ার আইনগত বিধান বিদ্যমান আছে। কিন্তু এ কাজটি করার জন্য জন্য মৌজা ম্যাপ ডিজিটালাইজেশন প্রয়োজন যা ইতিপূর্বে ছিল না। ডিজিটাল ভূমি জরিপ সম্পন্ন করার পর এবং অন্যন্য ক্ষেত্রে বিদ্যমান মৌজাম্যাপ সমূহ ডিজিটাইড করার পর ই-নামজারি প্ল্যাটফর্মে কাজটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

(৩৯) ভূমি মন্ত্রণালয়ের ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ তারিখের ভূঃমঃ/শা-৩/বার-৪৬/৯৪/৬৩৭ নম্বর পরিপত্র মোতাবেক হোল্ডিং মালিকের মৃত্যুর পর ১২০ দিনের মধ্যে ওয়ারিশগণের নামে নাম খারিজ করার জন্য তহশিলদারগণকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উক্ত নির্দেশ ১২০ দিনের মধ্যে প্রতিপালন না করলে কোন সমস্যা আছে কি না?

ভূমি মালিকের মৃত্যুর পর ওয়ারিশগণের মধ্যে নামজারি করার বিষয়টি ত্বরান্বিত করার জন্য বর্ণিত পরিপত্রে ১২০ দিনের সময় উল্লেখ করে দেয়া হয়। ১২০ দিনের মধ্যে নামজারি না করলে কোন ভূমি মালিকদের কোন সমস্যা হবে না। তবে ভূমি মালিকের মৃত্যুর পর ওয়ারিশগণ যথাশীঘ্র জমির নামজারি করে নেয়া উত্তম।


(৪০) কোন জমি খাস খতিয়ান ভুক্ত/ সায়রাত মহাল ভুক্ত/ পাবলিক ইজমেন্ট সম্পর্কিত/ অর্পিত সম্পত্তি ভুক্ত কিনা তা কিভাবে জানা যাবে? উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে জানা যাবে।

(৪১) মিউটেশন শুনানিতে তথ্যের গরমিল এড়াতে দলিলে প্রণীত জমির তফসিলের সঙ্গে কোন খতিয়ানের তফসিল যাচাই করা প্রয়োজন?


আবেদন কারী জমি কেনার সময় খতিয়ান দেখে তদনুযায়ী জমি দলিলে জমির সঠিক তফসিল বুঝে নিয়ে জমি কিনবেন। মিউটেশন আবেদনে দাখিলকৃত দলিলে দেয়া জমির তফসিলের সাথে খতিয়ানের তথ্য শুনানিতে যাচাই ও পর্যালোচনা করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন। গরমিল পরিলক্ষিত হলে নামজারি দেয়া সম্ভব নয়।



(৪২) নামজারীর কোনো ধাপে যদি ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা / কর্মচারী নির্ধারিত সময়ের বেশি দেরি করেন, তাহলে কোনো প্রতিকার আছে কি? ভূমিসেবা সংক্রান্ত সমস্যা জানানোর জন্য https://hotline.land.gov.bd লিংক ব্যবহার করুন।



(৪৩) জরিপকালে মিউটেটেড খতিয়ান নিয়ে কাজ করলে পুরোনো রেকর্ড কেনো তৈরি হবে? তাহলে সেটেলমেন্ট অফিস কি মিউটেটেড খতিয়ান আমলে নেয় না? জরিপকালে মালিকানার নাম ও পিতার সঠিক নাম নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক কিনা?



নতুন জরিপের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূমিস্বত্বের হালনাগাদ স্বত্বলিপি বা রেকর্ড প্রণয়ন। কাজেই হাল জরিপে ভূমির বর্তমান মালিকানার প্রমাণপত্রাদি দেখেই জরিপ রেকর্ড প্রস্তুত করতে হবে। মালিকানার প্রমাণপত্রাদির মধ্যে দলিল আদালতের রায়, খতিয়ান, মৃত খতিয়ানধারীর বর্তমান উত্তরাধিকারী বা স্বার্থাধিকারীএবং তাদের অনুকূলে মিউটেশন বিবেচ্য। যদি কোন জরিপ কর্মকর্তা চলমান জরিপে এসব আমলে না নিয়ে পুরাতন রেকর্ডের মতো জরিপ রেকর্ড করে যান, তাহলে তিনি দায়িত্বে অবহেলা করছেন। এইক্ষেত্রে উক্ত দায়িত্বে অবহেলা কারীর বিরুদ্ধে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর এবং ভূমি মন্ত্রণালয় বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিবে। জরিপ কালে ভূমি মালিকগণ উপস্থিত থেকে খসড়া পর্চায় অর্থাৎ বউঝআরত/তসদইক খতিয়ানে, খসড়া প্রকাশনায় স্বস্ব নাম ঠিকানা দেখে এনআইডি্র সাথে মিলিয়ে নিবেন, নইলে ভবিষ্যতে মালিকানায় সমস্যা হতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918)

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918) Introduction The Ahmedabad Satyagraha of 1918 marks a significant chapter in India's struggle for independence. It was a labor strike initiated by the mill workers in Ahmedabad, Gujarat, demanding an increase in wages. The strike was not just a protest against economic injustice, but it also symbolized the fight against oppressive colonial rule. The term 'Satyagraha' was coined by Mahatma Gandhi, which translates to 'insistence on truth' or 'soul force'. It was a method of non-violent resistance, and the Ahmedabad Satyagraha was one of the early instances where this method was employed in the Indian independence movement. The Satyagraha in Ahmedabad was a turning point as it marked the beginning of Gandhi's active involvement in Indian politics. It was here that Gandhi first introduced his methodology of peaceful resistance and negotiation as a means to achieve political and social change. The event holds histori...

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন

বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সুচিপত্র ভূমিকা পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বছরগুলি (1757-1857) 1857 সালের বিদ্রোহ এবং এর প্রভাব প্রয়াত ঔপনিবেশিক সময়কাল (1858-1947) বঙ্গভঙ্গ (1905) ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত বিভাজন (1947) উপসংহার বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন (1757-1947) পরিচয় বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন 1757 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী বিস্তৃত ছিল। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন দেখা যায় যা এই অঞ্চলে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলার ইতিহাসের জটিলতা এবং ঔপনিবেশিকতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর স্থানকে উপলব্ধি করার জন্য এই ঐতিহাসিক যুগকে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ...

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড সূচিপত্র ভূমিকা অধ্যায় 1: ভাড়াটিয়া হিসেবে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব বুঝুন অধ্যায় 2: বহিষ্করণ ও ভাড়াদারি শেষ অধ্যায় 3: ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা অধ্যায় 4: রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত অধ্যায় 5: আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে ভাড়াটিয়া পরামর্শ দিতে পারে উপসংহার অতিরিক্ত সংস্থান যোগাযোগের তথ্য ভূমিকা ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইন বুঝতে ভাড়াটিয়াদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পূর্ণ গাইডের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের তাদের সম্পত্তি পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা। আপনি একজন অভিজ্ঞ ভাড়াটিয়া হোক বা শুরু করছেন, এই নিবন্ধটি আপনাকে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব, বহিষ্করণ প্রক্রিয়া, ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত, এবং আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে বিশেষজ্ঞ আইনি পরামর্শ দিতে পারে তা ব...