পাকিস্তানিরা শেখ মুজিবের চেয়ে তাজউদ্দীনকে বেশি ভয় পেত কেন?

পাকিস্তানিরা শেখ মুজিবের চেয়ে তাজউদ্দীনকে বেশি ভয় পেত কেন?

শেখ মুজিবের চেয়ে তাজউদ্দীনকে কেন পাকিস্তানিরা বেশি ভয় পেত?

২৫ মার্চ: শেখ মুজিব ও তাজউদ্দীন

25 মার্চ, 1971 তারিখে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশী জনগণের উপর নৃশংস দমন-পীড়ন শুরু করে। শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। ক্র্যাকডাউনের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ ভারতে পালিয়ে যান। শেখ মুজিবের অনুপস্থিতিতে, তিনি 1971 সালে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের সূচনা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতে নির্বাসিত অবস্থায় এর নেতৃত্ব দেন।

ভারতের সাথে বোঝাপড়া

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের সাথে একটি বোঝাপড়া তৈরিতে তাজউদ্দীন আহমদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে দেখা করেছিলেন, ভারত সরকারের কাছ থেকে সর্বাত্মক সমর্থন চেয়েছিলেন। তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ইন্দিরা গান্ধী ও তাজউদ্দীন আহমদ

তাজউদ্দীন আহমদ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছিলেন। এই বৈঠকগুলি বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের সমর্থন নিশ্চিত করতে সহায়ক ছিল। ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে তাজউদ্দীনের পারদর্শিতা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিসভা গঠিত

তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। তিনি 1971 সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্ব দেন। এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের সমন্বয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

খন্দকার মুশতাকের নিমকাহারামি

খন্দকার মোশতাক আহমেদ, যিনি পরবর্তীতে বাংলাদেশের চতুর্থ রাষ্ট্রপতি হন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। হত্যার পরপরই তিনি রাষ্ট্রপতির ভূমিকা গ্রহণ করেন।

তাজউদ্দীনের বিচক্ষণতা

তাজউদ্দীন আহমদকে বাংলাদেশের জন্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বিচক্ষণতা এবং নেতৃত্ব, তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনে তার ভূমিকা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের প্রমাণ দেয়।

উপসংহার

উপসংহারে, তাজউদ্দীন আহমদের প্রতি পাকিস্তানিদের যে ভয় ছিল তা বাংলাদেশ গঠনে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য দায়ী করা যেতে পারে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার নেতৃত্ব, তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনে তার ভূমিকা ছিল দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য অবদান। ভারতের সাথে তার বোঝাপড়া এবং ইন্দিরা গান্ধীর সাথে তার বৈঠক বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য ভারতের সমর্থন নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা এবং খন্দকার মোশতাকের উত্থান সহ পরবর্তী মর্মান্তিক ঘটনাগুলি সত্ত্বেও, তাজউদ্দীনের উত্তরাধিকার বাংলাদেশের স্বাধীনতার কারণের প্রতি তাঁর নিবেদন এবং অঙ্গীকারের প্রমাণ হিসাবে রয়ে গেছে। তার বিচক্ষণতা ও নেতৃত্ব বাংলাদেশীদের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। তার গল্পটি প্রতিকূলতার মুখে দৃঢ়প্রত্যয়, কূটনীতি এবং নেতৃত্বের শক্তির স্মরণ করিয়ে দেয়।

```

Comments

Popular posts from this blog

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

একটি ভিত্তিহীন গুজব উড়িয়ে দেওয়া: বাংলাদেশী সাংবাদিকদের ফ্রেঞ্চ ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়নি৷

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন