পুরাতন মোটর সাইকেল বা গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের আইনগত পদ্ধতি | Legal procedure to buy used car or motorbike

পুরাতন মোটর সাইকেল বা গাড়ি ক্রয়-বিক্রয়ের আইনগত পদ্ধতি | Legal procedure to buy used car or motorbike




আমরা অনেকেই সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত মোটর বাইক বা গাড়ি ব্যাবহার এর উদ্দেশে ক্রয় বা বিক্রয় করে থাকি। কিন্তু অনেকেই মোটর যান ক্রয় বিক্রয় এর সঠিক পদ্ধতি ও কি কি কাগজপত্র লাগে তা সন্মন্ধে জানেন না।

আজকের এই লেখাটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন একটি মোটর বাইক বা গাড়ি ক্রয় অথবা বিক্রয় এর সময় কি ধরনের পদক্ষেপ নিলে ভবিষতে অনাকাঙ্খিত ঝামেলা এড়ানো এবং নিরাপদ ভাবে ক্রয়-বিক্রয় করা সম্বব। এই পদ্ধতিটি মোটর বাইক এবং মোটর গাড়ি- প্রাইভেট কার, জীপ ইত্যাদি উভয় ক্ষেত্রে প্রোযোজ্য হবে। Both procedures are pretty much same.

১) বিক্রেতা কাছ থেকে মোটর সাইকেল দেখার পর মোটর সাইকেল এর কাগজ, যেমনঃ রেজিস্ট্রেশান পেপার, ফিটনেস পেপার, ব্লু বুক এর ফটোকপি নিয়ে বি আর টি এ অফিসে গিয়ে তে নিজে গিয়ে চেক করুন ।

২) কাগজ ওকে থাকলে একজন মেকানিক কে দিয়ে ইঞ্জিন নং এবং চেসিস নং ঠিক আছে কি না, মিলিয়ে দেখুন।

৩) সব ঠিক থাকলে বিক্রেতা কে অনুরধ করুন প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো নিয়ে আসতে বলুন, যা যা আনতে হবে তা হল-

* বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র অরিজিনাল কপি, আপনি নিজে দোকান থেকে ফটোকপি করে নিবেন এবং বিক্রেতা অপরিচিত হলে বা অতিরিক্ত সর্কতা অবলম্বন করার জন্য তার এন.আইডি নম্বর দিয়ে অনলাইনে চেক করে দেখুন, আইডিটি নির্বাচন কমিশনের ডেটাবেইজে আছে কিনা। অনলাইনে কি ভাবে জাতীয় পরিচয় পত্র যাচাই করতে হয়, তার বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করে আমাদের এই ভিডিওটি দেখে আসতে পারেন।

* বিক্রেতার অন্য কোনও আইডি কার্ড থাকলে তার ফটোকপি। যেমনঃ জব আইডি কার্ড, ভার্সিটি আইডি কার্ড ইত্যাদি।

* বিক্রেতার ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙ্গিন ছবি। যার পিছনে বিক্রেতার স্বাক্ষর নিয়ে নিবেন।

* মোটর সাইকেল ক্রয় এর রশিদ। অর্থাৎ যে দোকান বা শোরুম থেকে মোটর সাইকেল বিক্রেতা ক্রয় করেছিলেন সেই অরিজিনাল রশিদ টি।

একটা চুক্তিপত্র কম্পিউটারে কম্পোজ করে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রিন্ট করতে হবে।
এর পরের অংশে চুক্তিপত্রের এই লেখা গুলোর উপর বিশেষ গুরুত্ব দিবেন-

“” উক্ত গাড়ী্টি আমার নামে থাকা কালে কোন মামলা মোকাদ্দামা কিংবা ব্যাংকে কোন মর্টগেজ ছিল না । মালিকানা পরিবর্তনে কোন সমস্যা হইলে দ্বিতীয় পক্ষ টাকা দেয়া সাপেক্ষে তাহা আমি প্রথম পক্ষ নিজ দায়িত্বে করিয়া দিতে বাধ্য থাকিব কিন্তু ২য় পক্ষকে অবশ্যই আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নাম ট্রান্সফার করতে হবে, অন্যথায় আমি ১ম পক্ষ দায়ভার বহন করিবে না এবং অদ্য……………………………………ইং তারিখ হইতে আমি দ্বিতীয় পক্ষ উল্লেখিত গাড়ীটির সমস্ত দায়িত্বে দায়বহন করবো ।
যদি নাম ট্রান্সফারে কোন বিগ্ন ঘটে, তাহা হইলে ১ম পক্ষ উপস্তিত থেকে উহা করিয়া দিতে বাধ্য থাকিবে ।””

আপনারা চাইলে এই ফরম্যাটটা ইউজ করতে পারেন, আবার নিজের মত করেও লিখতে পারেন। আমি ভিডিও ডিসক্রিপশনে এটার লিংক দিয়ে দিব। কারো দরকার হলে ডাউনলোড করে করে ব্যবহার করতে পারেন।

স্ট্যাম্পে বিক্রেতার ডিটেইলস্‌ বিক্রেতাকে দিয়েই পূরণ করিয়ে নিন।

চুক্তি পত্রে প্রতি পাতা তে দুই বার করে বিক্রেতার স্বাক্ষর নিবেন। স্বাক্ষর এর নিচে মোবাইল নং ও নিবেন। একদম শেষ পাতা তে বিক্রেতার স্বাক্ষর এর সাথে বিক্রেতার বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুলির ছাপ নিবেন। কারন স্বাক্ষর জাল হতে পারে কিন্তু আঙ্গুলের ছাপ জাল বা নকল হতে পারে না।

সব কিছু সাইন করা হয়ে গেলে বিক্রেতার স্বাক্ষর জাতীয় পরিচয়পত্র, রেজিস্ট্রেশান পেপার, ফিটনেস পেপার সব জায়গার বিক্রেতার স্বাক্ষর এর সাথে মিলিয়ে দেখুন এবং চুক্তিপত্রটি আরো একবার ভালো করে পড়ুন। সব যদি মিল থাকে তাহলে তারপর টাকা-পয়সা লেনদেন করুন। এধরনের চুক্তি এবং লেনদের সময় কখনো একা যাবেন না,দু-তিন জন একসাথে যান এবং কোন নিরাপদ জায়গায় বসে সম্পন্ন করুন। অবশ্যই চুক্তিনামাটি উকিল বা নোটারি পাবলিক দিয়ে নোটারি করিয়ে নিবেন। সব কাগজ এর ফটোকপি করে এক সেট আপনার বাসায় রেখে দিবেন।

বিক্রেতার ক্ষেত্রে তেমন কিছু করনীয় নেই। যার নিকট বিক্রয় করছেন তার এন আই ডি কার্ডের ফটোকপি, ফোন নম্বর এবং পার্সপোর্ট সাইজের ছবি এবং বিক্রয় চুক্তির ফটোকপি সংরক্ষণ করে রাখবেন।

ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হয়ে গেলে যদ দ্রুত সম্ভব ক্রেতার উচিত, মোটোর যানের মালিকানা ট্রান্সফার বা নাম ট্রান্সফার করে নেওয়া। বি.আর.টি.এ থেকে কি ভাবে মালিকানা পরিবর্তন বা নেম ট্রান্সফার করতে হয় পরবর্তী কোন ভিডিওতে তা নিয়ে আলোচনা করব।

আজকের আর্টিকেল এপর্যন্তই, দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোন বিষয় নিয়ে, সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।

Comments

Popular posts from this blog

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

একটি ভিত্তিহীন গুজব উড়িয়ে দেওয়া: বাংলাদেশী সাংবাদিকদের ফ্রেঞ্চ ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়নি৷

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন