Skip to main content

জাতীয় চার নেতার ঘাতকেরা এবং হত্যার ইতিবৃত্ত



জাতীয় চার নেতার ঘাতকেরা এবং হত্যার ইতিবৃত্ত



জেল হত্যা নিয়ে অনেক সমীকরণ সামনে চলে আসে অন্তদৃষ্টি এবং একটু ফ্যাক্ট নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করলে…
মোশতাকের নির্দেশে এই নির্মম বর্বরোচিত হত্যাকান্ড ঘটলেও অনেকে এই ঘটনায় মৌন সমর্থন দিয়ে সুবিধা নিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসতে চেয়েছিলেন ।তার প্রমাণ খালেদ মোশাররফ তেমন কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি জাতীয় চার নেতার হত্যার খবর শুনেও।এমনকি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরেও তার কোন প্রতিবাদ কিংবা প্রতিক্রিয়ার কথা শোনা যায় না।অথচ পঁচাত্তরের পুরো ঘটনাপ্রবাহে খালেদ মোশাররফ রহস্যময় ভূমিকা রেখেছেন।
খালেদ মোশাররফ বঙ্গবন্ধু হত্যা কিংবা জাতীয় চার নেতা হত্যার ঘটনাপ্রবাহের অনেক ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন খুব সম্ভবত। না হলে তিনি নিজে ১৯৭৪ সালের শেষের দিকে অভ্যুত্থান করতে চেয়ে ব্যর্থ হওয়া ফারুকের বিচার না করে উল্টো একটি রেজিমেন্টের দায়িত্ব দিতেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরেও খালেদ মোশাররফ প্রকাশ্যে কোন প্রতিক্রিয়া দেখাননি।৪ নভেম্বরের অভ্যুত্থানে তিনি করেছিলেন ক্ষমতা অধিগ্রহণের অভিলাষ থেকেই।তিনি ক্ষমতা পেয়ে কি করেছিলেন ? বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের নিরাপদে বিদেশে পালিয়ে যেতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছিলেন।
আরেকটু পরিষ্কার হয়ে যাবেন আপনারা নিম্নোক্ত আন্তঃসম্পর্কে চোখ বুলালে
ফারুক ছিল খালেদের আপন বোনের ছেলে ✓ রশিদ ছিল মোশতাকের ভাগিনা। রাশিদ-ফারুক ভায়রা ভাই। এরা ১৫ আগস্টের মূল ঘাতক।
এই ছিল ১৫ আগস্ট থেকে ৬ রা নএইম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত খালেদ মোশাররফের দ্বিমুখী নীতি। এজন্যই হয়ত খালেদ মোশাররফের নির্মম পরিণতি হয়েছিল। ইতিহাস ক্ষমা করেনি খালিদ মোশাররফকে।
এবার আসি এই উপমহাদেশে জন্ম নেওয়া সবচেয়ে বড় বাটপারের ভূমিকা নিয়ে ১৫ আগস্ট থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঘটনা প্রবাহে সবচে বড় বেনিফিশিয়ারি ছিল জিয়া। জিয়া ছিল পর্দার অন্তরালের ঘাতক। আরো কিছু তথ্য দিয়ে রাখি সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের হোতা রশিদ ফারুক সরাসরি জিয়ার ছাত্র । ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকান্ডের ঘাতক মুসলেহ উদ্দিনের সাথে জিয়ার সখ্যতা ছিল বিভিন্ন সময়ে জিয়ার অধীনে কাজ ও করেছ ঘাতক মোসলেহ উদ্দিন। আর যখন জেল হত্যাকান্ড ঘটে তখন ও কিন্তু সেনা প্রধান জিয়াউর রহমান।রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন সে ছিল ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন অফিসার।
৪ নভেম্বরের হোতাদের আন্তঃসম্পর্ক
রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন ✓ রশিদ ফারুকের আস্থাভাজন। রশিদ,ফারুক ✓ মোশতাক, জিয়া, খালেদ মোশারফের আস্থাভাজন।
জিয়া সিআইএ’র গোপন চর সেই ১৯৬০ এর দশক থেকেই অন্যদিকে মোশতাক মার্কিন পন্থী রাজনীতিবিদ পঞ্চাশের দশক থেকেই । ১৫ আগস্ট এবং জেল হত্যাকান্ডের হোতাদের মূল কোথায় আশা করি আপনাদের বোধগম্য হয়েছে। জিয়া মোশতাক বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতা হত্যাকান্ডের প্রধান মাস্টারমাইন্ড ।
জিয়া – সি আই এ – মোশতাক
জিয়া চতুর ছিল বিধায় সে সবাইকে টেক্কা দিয়ে ক্ষমতা কদিন টিকিয়ে রাখতে পেরেছিল।কিন্তু এই ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সে ৪১৮৬ সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করে বিনা বিচারে।আর সেখানে অধিকাংশ সদস্য ছিল মুক্তিযোদ্ধা।যা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন হত্যাকান্ড।ইতিহাস জিয়াকে ক্ষমা করেনি খালেদ মোশাররফের মত। জিয়া আরেকটি কাজ করেছিলেন ক্ষমতা অবৈধভাবে দখল করে মোশতাককে জেলে আটকে রেখে ক্ষমতার মসনদ পাকা করে কদিন পর ছেড়ে দিয়েছিল। জিয়া- মোশতাকের আতাতের ঘটনা এখনো রহস্যময়।জেনারেল জিয়া তার সাড়ে পাঁচ বছরের শাসনমলে ১৯৭৫ এ সালের নভেম্বরে তৎক্ষণাৎ গঠিত ‘তদন্ত কমিশন’ এ বিচার তো দূরের কথা সেই কমিশনকে কাজ পরিচালনা করার সুযোগ দেননি।
১৫ আগস্ট থেকে নভেম্বরের ঘটনা প্রবাহে জেনারেল শফিউল্লাহর অবদান ও কম না,এই লোকের কাপুরুষতার মূল্য এখনো বাঙালিকে দিতে হচ্ছে…বেঁচে থাকলে শফিউল্লাহকে ট্রায়ালে আনতে পারলে অনেক সত্য উন্মোচিত হতো।
ব্রিটিশরা ১৭৫৭ সালে বাংলার মসনদ যখন দখল করে তখন মীর জাফরকে ক্ষমতায় বসিয়ে অল্প কদিনের মাথায় যেভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিল ঠিক সেরূপ জিয়া মোশতাককে ক্ষমতায় কিছুদিন বসিয়ে প্রেক্ষাপট নিজের অনুকূলে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে নেয়। পুরোপুরি ১৭৫৭ সালের ঘটনার পুণমঞ্চায়ন ঘটায় ১৯৭৫ সালে জিয়া। এ যেন ১৭৫৭ সালের ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৯৭৫ সালের জিয়া!
১৫ আগস্ট থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের ঘটনা প্রবাহে মোশতাক জিয়া মূল ঘাতক হলেও খালেদ মোশাররফ, শফিউল্লাহ কম দায়ী না। এসমন্ধে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন আন্তঃ
সম্পর্কগুলো খতিয়ে দেখলে।

Comments

Popular posts from this blog

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918)

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918) Introduction The Ahmedabad Satyagraha of 1918 marks a significant chapter in India's struggle for independence. It was a labor strike initiated by the mill workers in Ahmedabad, Gujarat, demanding an increase in wages. The strike was not just a protest against economic injustice, but it also symbolized the fight against oppressive colonial rule. The term 'Satyagraha' was coined by Mahatma Gandhi, which translates to 'insistence on truth' or 'soul force'. It was a method of non-violent resistance, and the Ahmedabad Satyagraha was one of the early instances where this method was employed in the Indian independence movement. The Satyagraha in Ahmedabad was a turning point as it marked the beginning of Gandhi's active involvement in Indian politics. It was here that Gandhi first introduced his methodology of peaceful resistance and negotiation as a means to achieve political and social change. The event holds histori...

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন

বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সুচিপত্র ভূমিকা পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বছরগুলি (1757-1857) 1857 সালের বিদ্রোহ এবং এর প্রভাব প্রয়াত ঔপনিবেশিক সময়কাল (1858-1947) বঙ্গভঙ্গ (1905) ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত বিভাজন (1947) উপসংহার বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন (1757-1947) পরিচয় বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন 1757 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী বিস্তৃত ছিল। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন দেখা যায় যা এই অঞ্চলে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলার ইতিহাসের জটিলতা এবং ঔপনিবেশিকতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর স্থানকে উপলব্ধি করার জন্য এই ঐতিহাসিক যুগকে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ...

Comprehensive Guide on Media and Entertainment Law in Bangladesh

Comprehensive Guide on Media and Entertainment Law in Bangladesh Comprehensive Guide on Media and Entertainment Law in Bangladesh Introduction Overview of Media and Entertainment Law Definition and Scope Media and entertainment law encompasses a broad spectrum of legal issues related to the creation, production, distribution, and consumption of media and entertainment content. This includes various sectors such as film, television, music, publishing, digital media, and advertising. The scope of this law covers intellectual property rights, contracts, censorship, licensing, and regulatory compliance. It is essential for protecting the rights of creators, producers, and consumers, ensuring fair use, preventing unauthorized exploitation, and maintaining ethical standards in content creation and distribution. ...