Skip to main content

সফলতা পেতে কারো সমালোচনায় কান দিবেন না


সফলতা পেতে কারো সমালোচনায় কান দিবেন না





দুটো ব্যাঙ। দুজনে খুব ভালো বন্ধু। দুই বন্ধু গল্প করতে করতে হাঁটছিল, মহা আনন্দ তাঁদের জীবনে। সামনে যে বিশাল একটা গর্ত, সে খেয়াল নেই তাঁদের।


এই বেখেয়ালই বলতে গেলে ওদের সর্বনাশ করলো। হাঁটতে হাঁটতেই ধুপ করে গর্তে পড়ে গেল দুজনেই। গর্ত অনেক গভীর, ব্যাঙদের রাজ্যে আবার কোন মই-টইও নেই। তাই আশেপাশের যে ব্যাঙগুলো ছিলো তারা ধরেই নিলো যে এই ব্যাঙদুটোর সলিল সমাধি ওখানেই হচ্ছে। ওরা আর সাহায্য করতেও গেলো না, কে নিজের প্রাণটা হারাতে যায়?


সাহায্য না হয় না করলো, গর্তে পড়া ব্যাঙদুটোকে উৎসাহও তো দেয়া যায়, তাই না? সমস্যা হলো সেই উৎসাহটাও দিতে রাজি নয় উপরের ব্যাঙরা। একটা ব্যাঙ বললো,
এই গর্তটা পুরো ব্যাঙরাজ্যের সবচেয়ে গভীর গর্ত, তোমরা কোনদিন পার হতে পারবে না!”


আরেকটা ব্যাঙ এসে বললো,
“এই গর্তে পড়েই গত বছরে কতগুলো ব্যাঙাচি মরে গেলো! তোদের কপালেও মরণ আছে রে!”
আরেকজন তো আরেক কাঠি সরেস। সে ধরেই নিয়েছে গর্তে পড়া ব্যাঙ দুটো আর ফিরবে না। সে বলে বসলো,
“তোমাদের পরিবারকে খবর দিয়ে না হয় নিয়ে আসি, প্রিয়জনকে শেষ দেখা দেখে নিক!”


এইরকম ভয়াবহ ডিমোটিভেটিং কথাবার্তা শুনেই গর্তের একটা ব্যাঙ ভয়ানক হতাশ হয়ে গেল। লাফালেও যে কিছুদূর এগোনো যায়, চেষ্টা করা যায়- সেসব ভুলে সে হতাশায় পড়ে চেষ্টা করাই ছেড়ে দিল।


আরেকটা যে ব্যাঙ ছিল, সে কিন্তু হাল ছাড়ার পাত্র নয়! সে গর্ত থেকে লাফিয়েই গেল, লাফিয়েই গেল। ওপর থেকে ব্যাঙরা যতোই হতাশাজনক কথা বলে, ব্যাঙটা ততোই জোরে জোরে লাফাতে থাকে। প্রতি লাফে একটু একটু করে উপরে উঠতে থাকে সে।


ঘন্টাখানেক পর। গর্তের পাশে তখন ব্যাঙদের ভীড় জমে গেছে। বিশাল এই ব্যাঙজনতাকে অবাক করে দিয়ে দেখা গেলো সেই ব্যাঙটা অত্র এলাকার সবচেয়ে গভীর গর্তটা থেকে লাফিয়ে বের হয়ে এসেছে! অন্য ব্যাঙটা আর চেষ্টা করেনি, সে গর্তে বসেই প্রহর গুনছে।


এতক্ষণ গর্তের পাশে বসে যেই ব্যাঙগুলো হতাশাজনক কথাবার্তা বলছিলো, তারা হতবাক। বিষ্ময়ের রেশ কাটতেই তারা জিজ্ঞেস করলো, কীভাবে পারলো সে?


ব্যাঙটার জবাব কি ছিলো জানো? ব্যাঙ বলেছিলো:
“আমি আসলে কানে ভালো শুনতে পাই না। উপর থেকে তোমরা চিৎকার করছিলে দেখে মনে হলো তোমরা উৎসাহ দিচ্ছো আমাকে, আরো জোরে লাফানোর জন্যে। আমি তাই আরো জোরে লাফিয়েই গেলাম, একসময় দেখি পার হয়ে গেছি! আমার বন্ধুটা কেন যেন লাফাচ্ছিলো না, ওকে এখন আবার বলি গিয়ে জোরে লাফাতে!”


ব্যাঙটার জবাব শুনে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে ওঠে উপরের পুরো ব্যাঙসমাজের। নিজেদের নিয়েই হতাশ হয়ে পড়ে তারা। ওদিকে বিজয়ী ব্যাঙ আবারো এগিয়ে যায় গর্তের দিকে, বন্ধুকে গর্ত থেকে বের করতে হবে না?


ব্যাঙ নিয়ে এই গল্পটা বলার কারণ কি জানো? আমাদের জীবনেও দেখবে এমন অনেক মানুষ আছে যারা মনের অজান্তেই এমন কথা বলে ফেলে যে তুমি সাংঘাতিক ডিমোটিভেটেড হয়ে যাও, নিজের কাজগুলো করতেও আর ইচ্ছা করে না।




তুমি নিজেও হয়তো তোমার বন্ধু বা আশেপাশের মানুষগুলোকে এমন কথা বলে ফেলো। তাতে তারা শুধু যে মনে কষ্ট পায়, সেটাই না। তারা কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। হয়তো তার স্বপ্নটা ছিল বড় কিছুর, তোমার কথায় সেই স্বপ্নটা রং হারালো। কাজটা কি ঠিক হলো?


মুদ্রার দুটো পিঠ থাকে। একটা অর্ধেক ভরা গ্লাসকে তুমি দুইভাবে দেখাতে পারো, অর্ধেক ভরা আর অর্ধেক খালি হিসেবে। একইভাবে, সবার সব উদ্যোগের ব্যাপারে হতাশ না হয়ে উৎসাহ দেখাও, তাতে তোমার মনটাও ভালো থাকবে, আর সে পাবে অনুপ্রেরণা।
শিক্ষা:
আমাদের জীবনেও সফলতা পাওয়ার জন্য মাঝে মাঝে কান বন্ধ রাখা উচিত যাতে লােকের নেগেটিভ কথা আমাদের কানে না পৌঁছায় এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা সফল হচ্ছি ততক্ষণ পর্যন্ত যেন লেগে থাকতে পারি।


Comments

Popular posts from this blog

How to Protect Your Intellectual Property Rights in Bangladesh

Banking Litigation and Dispute Resolution