Skip to main content

মুজিববাদ কি? কেনই বা এত প্রয়োজনীয়

মুজিববাদ কি? কেনই বা এত প্রয়োজনীয়!


মুজিববাদ!একটি সাধারণ শব্দ ,কিন্তু তাৎপর্য বিশাল অর্থবহ।অনেকের কাছে মুজিববাদের প্রকৃত ভাবার্থ বোধগম্য নয়।।।


মুজিববাদ সহজ কথায় বলতে গেলে মুজিবের জীবন দর্শন,রাজনৈতিক দর্শন এর সম্মিলন যে দর্শনের উপর ভর করে মুজিব বাঙালি জাতিকে এক সুরে গেঁথে ফেলে স্বাধীনতা সংগ্রামে লিপ্ত ও স্বাধীন করতে সক্ষম হয়েছিলেন বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু এক কথায় বলতে গেলে মুজিববাদ কায়েম করতে চেয়েছিলেন দেশের উন্নতির জন্য।কিন্তু পারেননি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের বলি হয়ে।
মুজিববাদ আসলে কি তো আমরা অনেকেই সন্ধিহান

, ঠিকভাবে জানিও না আসলে মুজিববাদের মর্মার্থ। মুজিববাদ হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গনতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ,, ধর্ম নিরপেক্ষতার অপূর্ব সম্মিলন।


মুজিববাদ প্রকৃত অর্থে কি আসুন জেনে নিই…






গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সম্মিলন




কোন দেশের সংবিধানে একসাথে গনতন্ত্র সমাজতন্ত্র একসাথে দেখা যায়না । স্বাভাবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখলে গণতন্ত্র সমাজতন্ত্রের সম্মিলন অসম্ভব বটেই।কিন্তু গভীর অন্তঃদৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ
করলে দেখা যাবে বঙ্গবন্ধু খুবই সুচারুভাবে গণতন্ত্র সমাজতন্ত্রের সম্মিলন ঘটাতে প্রাথমিকভাবে সক্ষম হয়েছিলেন।
সেটা কীভাবে? বঙ্গবন্ধু তার শাসনকার্যে কিন্তু গণতান্ত্রিক পন্থায় পরিচালনা করেছিলেন ক্ষমতায়
থাকাকালীন প্রথম চার বছরে, যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশে স্বাধীনতা অর্জনের সাথে সাথে শাসনকার্যে
সফলভাবে গণতান্ত্রিক পন্থা প্রয়োগ ও পরিচালিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মধ্যেই ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে নির্বাচনের দরকার ছিল না ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্বচ্ছ থাকতে চেয়েছিলেন সর্বক্ষেত্রে ,স্বচ্ছতার প্রমাণস্বরূপ বঙ্গবন্ধু এক স্বাধীনতা অর্জনের এক বছরে নির্বাচন আয়োজন করেন। যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল স্বাধীনতা অর্জনের সাথে সাথে স্বাধীনতা নির্বাচন।








সমাজতন্ত্রকে বঙ্গবন্ধু ব্যাবহার করেছিলেন এক অভিনব পন্থায়,বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোকে পুনঃগঠনের জন্যে।বঙ্গবন্ধু দর্শন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি সমাজতন্ত্রের মাধ্যমেই সম্ভব। তাই তিনি প্রায়ই বলতেন
” সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি গ্রহণ করেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আনতে হবে”




শর্তযুক্ত বিদেশি সাহায্য নেয়ার পখাপাতি না বঙ্গবন্ধু।ছবি : দৈনিক বাংলা




বঙ্গবন্ধু কখনো চাননি পুঁজিবাদ রাজত্ব কায়েম করুক যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে।তিনি
চাননি বাংলাদেশ পুঁজিবাদী দেশগুলোর ঋণের চাপে গোলামী করুক। শুরু থেকে বঙ্গবন্ধু ছেয়েছিলেন বাঙালি আত্মমর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। তাই যেকোন দেশের ঋণ সহয়তা যুক্তিসঙ্গত না হলে ফিরিয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করতেন না বঙ্গবন্ধু।
১৯৭২ সালের ১৯ মে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপের জাতীয় সম্মেলনে সদর্পে ঘোষণা করেন


‘স্বাধীনতার বিনিময়ে আমরা এধরনের কোনও সাহায্য গ্রহণ করতে পারি না। শর্তযুক্ত কোনও সাহায্য আমরা নেবো না।’






তাই তিনি প্রথমে বাংলাদেশের অধিকাংশ কলকারখানাকে রাষ্ট্রয়াত্ত করেছিলেন , পাকিস্তানীদের রেখে যাওয়া সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ব্যাক্তি মালিকানার হাতে তুলে দেননি বঙ্গবন্ধু ,দেশের জনগণের সুবিধার জন্য সরকারি করে নিয়েছিলেন। ১৯৭২ এর সংবিধানে বঙ্গবন্ধু “সমবায় ও রাষ্ট্রীয় মালিকানাকে” অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন যাতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি সহজে ঘটে।




সেজন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ এ এক ভাষণে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেন


‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা আমরা পেয়ে থাকলেও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যায়, যদি এদেশের দুখী মানুষের জন্য কিছু না করা যায়, এদেশে শোষণহীন সমাজ যদি প্রতিষ্ঠিত না হয়। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি একমাত্র পথ বলে আমরা বিশ্বাস করি’






১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে প্রায় ৫০১ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তার মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা ছিল কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে, কৃষকদের স্বার্থে। অর্থাৎ মোট বাজেটের পাঁচ ভাগের এক ভাগ কৃষি উন্নয়ন অর্থাৎ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বার্থে ব্যাবহার করা হয়েছিল।বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন, কৃষকরা বাঁচলে স্বনির্ভর হবে দেশের অর্থনীতি,একমাত্র সমাজতান্ত্রিক অর্থ ব্যবস্থায় সমাজের বঞ্চিত মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব হবে।


বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক অবস্থায় সফল হয়েছিলেন সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি আনায়ন করতে। স্বাধীন হওয়ার দুবছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু তলাবিহীন ঝুড়ির অভিহিত বাংলাদেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে প্রায় সক্ষম হয়েছিলেন।কিন্তু বঙ্গবন্ধু পুরোপুরি সফল হতে পারেননি কয়েকটি কারণে :-
• ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ
•রক্ষীবাহিনী, গণবাহিনীর, সর্বহারাদের সারাদেশব্যাপি আরাজকতা
• বিদেশী সাহায্য রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে আসতে সময়ক্ষেপণ করা
• তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি
•আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্য সামগ্রী ,তেলসহ অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়া।


কিসিঞ্জারের মার্কিন প্রশাসন পি এল ৪৮০ অধীনে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ নানা অজুহাতে প্রায় নয় মাস ঝুলিয়ে রেখে শেষে কিউবার সাথে পাটের ব্যাগের ব্যবসা করার অজুহাতে বাংলাদেশে খাদ্য সরবরাহ চুক্তি বাতিল করে দেয়,ফলে খাবারের অভাবে ১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষের তীব্রতা আরো ব্যাপক হয়। মার্কিনি এই হঠকারী সিদ্ধান্তের বলি হয় হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে মারা যায়। খাদ্যের অভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়ে উঠে সারাদেশে।


পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে নিয়ন্ত্রণের যায় তখন সামাল দিতে বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করেন।




ছবি : বাংলা ট্রিবিউন


যা বঙ্গবন্ধুর ভাষায় “দ্বিতীয় বিপ্লব”




বাকশাল গঠনের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করতে
১৯৭৫ সালে সংসদে দেয়া এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন,
” আওয়ামী লীগ একটি মাল্টি-ক্লাস পার্টি। আমি তার নামের আগে কৃষক শ্রমিক লাগিয়েছি বৈকি, কিন্তু দলটির চরিত্র এখনও বদলাতে পারিনি, রাতারাতি সব সম্ভবও নয়। আমার দলে নব্য-ধনীরাও আছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ায় তাদের লুটপাটের সুযোগ বহুগুণ বেড়ে গেছে। আমি তাদের সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যই বাকশাল করেছি। যদি এই ব্যবস্থা সফল করতে ব্যর্থ হই এবং আমার মৃত্যু ঘটে, তাহলে দলকে কবজা করে ওরা আরও লুটপাটে উন্মত্ত হয়ে উঠতে পারে। এমনকি শত্রুপক্ষের নীতি ও চরিত্র অনুসরণ করে স্বাধীন বাংলাদেশের মূলমন্ত্র, এমনকি আওয়ামী লীগের চরিত্র ও নীতি পাল্টে ফেলতে পারে। যদি তা হয়, সেটাই হবে আমার দ্বিতীয় মৃত্যু। সে জন্য আগেই বলেছি, আমার দল, আমার অনুসারীদের হাতেই যদি আমার এই দ্বিতীয় মৃত্যু ঘটে, তাহলে দীর্ঘকালের জন্য বিস্মৃতির অন্ধকারে চলে যেতে হবে। কবে ফিরব তা জানি না।’




ছবি : সংগ্রামের নোটবুক




বঙ্গবন্ধু বাকশাল কায়েম করে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করতে পেরেছিলেন,কিন্তু বাকশাল কায়েমের কারণে দেশী- বিদেশি পুঁজিবাদী গোষ্ঠীর চক্ষুশূল হোন।
মওদুদ আহমেদ তার বই “The Era of Sheikh Mujib” বইতে বঙ্গবন্ধুর বাকশালের ফলে দেশের অর্থনৈতিক পটভূমির উন্নতির কথা উল্লেখ করে বলেন- ‘এটা অবিসংবাদিত সত্য যে, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে শেখ মুজিব অত্যন্ত সংবেদনশীল ইস্যুগুলোতে হাত দিয়ে বেশ কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ ভাষণ দান করেছিলেন। তিনি প্রশাসনিক কাঠামো থেকে শুরু করে ভূমিস্বত্ব পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের কতগুলো অচল ব্যবস্থা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। আগামী দিনগুলোতে যে ধরনের সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন; মৌলিক এই সমস্যাগুলো থেকে যাবে সমস্যা হিসেবেই এবং গোটা জাতির সামনে এগুলো বিরাট এক চ্যালেঞ্জ হিসেবেই অবস্থান করবে। আদর্শবান যাই থাকুক না কেন, ভূমিস্বত্বের ব্যবস্থা প্রকৃত উৎপাদক কৃষকদের অনুকূলে নিয়ে না এসে এবং প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে দিয়ে সমস্যাগুলোর মোকাবিলা করা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব ছিল না। যে দেশে ভূমি ও জনসংখ্যার অনুপাত ১ : ০.৩২ শতাংশ এবং ৫০ শতাংশের বেশি লোক ভূমিহীন ও দরিদ্র এবং জীবনযাত্রার নিম্নতম স্তরে অবস্থান করে, সেখানে নূ্যনতম সময়ে জনগণের এই ঘোরতর সমস্যা সমাধানের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই বিবেচনা করতে হবে।’










বাকশাল কায়েমের ফলে এক বছরের ব্যাবধানে দেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়ে যায়। বাকশালের এক বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছিল ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে,যা ছিল অনন্য মাইলফলক বঙ্গবন্ধু সরকারের। শুধু বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি না, দারিদ্র্যের হার কমে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাও শুরু হয়েছিল ,এমনকি দেশে দারিদ্র্যের হার ও কমে যাচ্ছিল।বাকশাল পুরোপুরি ভাবে অনুসরণ করেছিল সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ছিল প্রধান বিবেচ্য বিষয়।
যদি বাকশাল সফল না হতো বঙ্গবন্ধু নিজেই ঘোষণা দিয়েছিলেন বাকশাল থেকে সরে যাওয়ার




“এটা অস্থায়ী (ব্যবস্থা), সময় এলে এটা সরিয়ে নেওয়া হবে’’


(সূত্র: তোয়াব খান,১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রেস সেক্রেটারি)


বাকশালের শুরুতে খাল খনন




বঙ্গবন্ধু নিজে বাকশাল দুই বছরের বেশি রাখতে চাননি,শুধুমাত্র দেশের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য তিনি সাময়িক সময়ের জন্যে বাকশাল কায়েম করেছিলেন।কিন্তু বঙ্গবন্ধুর বাকশাল কায়েমের সিদ্ধান্ত দেশীয়
পুঁজিবাদী ব্যাবসায়ী কিংবা বিদেশী প্রভুদের পছন্দ হয়নি। বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব অসমাপ্ত থেকে যায়
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তে সপরিবারে নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে ।




বাকশালের বৈঠকে জেনারেল জিয়া


বঙ্গবন্ধু কিন্তু তার জীবদদশায় গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সফল প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন যা দুঃসাধ্য কাজ ছিল সেকালের আন্তজার্তিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে।শেখ মুজিব গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের ভাল দিকগুলো নিয়ে একটা নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন,কিন্তু হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে দ্বিতীয় বিপ্লব থমকে যায় । যদি বঙ্গবন্ধু সফল হতে পারতেন দ্বিতীয় বিপ্লব তার দ্বিতীয় বিপ্লবে তাহলে হয়তবা পৃথিবীতে নতুন মুজিববাদ নামক মতবাদের নামে জয়গান উঠত।




বাঙালি জাতীয়তাবাদ






বাংলা ভাষা, কৃষ্টি,সংস্কৃতি ঐতিহ্য নিয়ে গড়ে উঠা বাঙালি জাতীয়তাবাদের শক্ত খুঁটি গেড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব।আমাদের এ অঞ্চলকে এককালে বাংলা বলা হত আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি বলেই।তাইতো বঙ্গবন্ধু পূর্ব বাংলার নাম বাংলাদেশ করেছিলেন বাংলা ভাষার সূত্র ধরে।
আন্দোলন,গণঅভ্যুত্থান,মুক্তিযুদ্ধ কিংবা বাংলাদেশের জন্ম সহ এদেশের প্রত্যেকটি সংগ্রামে বাঙালি জাতীয়তাবাদ সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।
৪৭ এর দেশভাগের আগ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম করেছিলেন ‘ভারতীয় জাতীয়তাবাদ’ তথা ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য। ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু দেখলেন শুধুমাত্র বাঙালি হওয়ার অপরাধে পাকিস্তানীরা বাঙালিদের যুগ যুগ ধরে শোষণ করে যাচ্ছে।তখন বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয় জাতীয়তাবাদের মশাল হাতে নিয়ে পূর্ব বাংলার বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন এবং বাংলাদেশ নামক নতুন রাষ্ট্রের সূচনা করেন।




গণমানুষের মুজিব …


বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে বোঝাতে পেরেছিলেন আমাদের ধর্ম,বর্ণ,জাত ভিন্ন হতে পারে কিন্তু আমাদের ভাষা, কৃষ্টি , সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য সবই এক, কিন্তু পাকিস্তানীরা আমাদের বাঙালি পরিচয়ের কারণে দাবিয়ে রাখে শোষণ করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত এই বাঙালি পরিচয়ের কারণে। বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে শেখ মুজিব ১৯৬২-৬৩ সাল থেকেই স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রস্তুতি শুরু করেন।বঙ্গবন্ধু সম্ভবত ১৯৬২ এবং ১৯৬৩ সালে দুইবার গোপনে ভারত গিয়েছিলেন।১৯৬৩ সালে সাবেক ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু বাঙালিকে স্বাধীনতা যুদ্ধে সহয়তা করার আশ্বাস দেন বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু ১৯৬২ সালে ভারত চীন যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে এবং যুদ্ধে ভারত হেরে যাওয়ার কারণে ভারত আর বাংলাদেশকে সাহায্য করেনি। বঙ্গবন্ধু সেবার বুঝেছিলেন বাংলাকে স্বাধীন করতে হলে নিজেদের প্রস্তুতির বিকল্প নেই। তাই বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াসকে ( সিরাজুল আলম খান,শেখ মণি,আব্দুর রাজ্জাক,কাজী আরেফ) গোপনে সশস্ত্র প্রস্তুতি নিতে আদেশ দেন।
বঙ্গবন্ধুর হতে গড়া বাঙালি জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াস সেল ছিল বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম প্রভাবক গ্রুপ।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ বাঙালির মানসপটে গেঁথে দিতে ৬৮-৭১ সাল পর্যন্ত পর্দার অন্তরালে নিউক্লিয়াস সেল গুরুত্তপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ সময়ের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াস সেলের কর্মীদের ভারতে গোপনে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে পাঠান। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিল বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ ২৪ বছরের স্বাধিকার আন্দোলনের ফল যার ফলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা হয়। বঙ্গবন্ধু ছাত্রলীগের এই নিউক্লিয়াস সেলের সাথে আলোচনা করেই বাংলাদেশের নাম,জাতীয় সংগীত,জাতীয় পতাকা নির্বাচন করেন।আর এই স্বাধীনতার সূতিকাগার হচ্ছে বাঙালি জাতীয়তাবাদের বীজ যা বঙ্গবন্ধু যুগের পর যুগ তিলে তিলে বাঙালিদের মধ্যে রোপণ করেছিলেন, যার ফলে শুরু হয় জনযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্লোগান ছিল
“বীর বাঙালি অস্ত্র ধর,বাংলাদেশ স্বাধীন করো” যা বাঙালি জাতীয়তাবাদের ঔরষজাত।রক্তের সাগরের বিনিময়ে বাঙালি পায় তার পরম আরাধ্য বাংলাদেশ।


সুভাষ বসু ১৯৩৮ সালে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের মশাল নিয়ে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি শুরু করেছিলেন জার্মানি ও জাপানের মাটিতে তেমনি বঙ্গবন্ধু ও বুঝেছিলেন
সশস্ত্র সংগ্রাম ব্যতীত বাঙালি স্বাধীন হবেনা পাকিস্তানীদের শোষণ থেকে থেকে।তাইতো বঙ্গবন্ধু ১৯৬২ সাল থেকেই সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের মশাল হাতে নিয়ে।নেতাজি সুভাষ বসু সফল হতে না পারলেও বঙ্গবন্ধু সফল হয়েছিলেন এবং আমাদের একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়ে গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর অন্যতম আদর্শ ও নায়ক ছিলেন নেতাজি সুভাষ বসু। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বঙ্গবন্ধু নেতাজির পন্থা অনুসরণ করেছিলেন।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কলকাতায় বঙ্গবন্ধু এক ভাষণে বলেন




“নেতাজি অমর! তাঁর প্রমাণ স্বাধীন বাংলাদেশ”






জাতীয়তাবাদ যেকোন দেশের জনগণের দেশপ্রেম জন্মানোর ক্ষেত্রে অন্যতম প্রভাবক। জাতীয়তাবাদী
চেতনা জাগলে সবাই দেশপ্রেমে ব্রতী হয়ে স্বদেশের উন্নয়নে আত্ম উৎসর্গ করতে দ্বিধাবোধ করবেনা। একটি দেশের জনগণ ধর্ম,দল,মত,নির্বিশেষে আবদ্ধ হবে তখনই যখন স্বজাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদের সার্থক প্রয়োগ দেখে যেতে চেয়েছিলেন যতদিন জীবিত ছিলেন,তিনি খুব ভালোভাবেই বুঝেছিলেন জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হলে
সকলের মধ্যে সম্প্রীতি বিরাজ করবে ,ঠিক তখনই বাঙালি জাতির সকলে ভাগ্যপরিবর্তনের যুদ্ধে নিজে নিঃস্বার্থে সামিল হবে। একটি আধুনিক প্রগতিমনা, ভ্রান্ত মতবাদ মুক্ত একটি জাতি তৈরি করতে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার উপর জোর দিয়েছিলেন। মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালি জাতীয়তাবাদের শিক্ষার বিকল্প নেই।








ধর্ম নিরপেক্ষতা






বঙ্গবন্ধু রাজনীতিবিদ ছিলেন এবং সেসাথে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও ছিলেন। ধর্ম পালনের ব্যাপারে লোক দেখানো বাহুল্যতা তিঁনি কখনোই পছন্দ করতেন না।ধর্মকে রাজনীতিতে হাতিয়ার করতে তিনি পছন্দ করতেন না। কারণ তিনি ধর্মের নামে রাজনীতির প্রহসন দেখেছিলেন ১৯৪৬ সাল থেকে ৭১ সাল পর্যন্ত। ১৯৪৬ সালে কলকাতায় ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তার মনে গভীর রেখাপাত রেখেছিল,কিংবা ১৯৪৮ সাল থেকে ৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানী শাসকদের ইসলাম রক্ষার নাম দিয়ে বাঙালিকে শোষণ বঞ্চনার নির্মম ইতিহাস বঙ্গবন্ধু তো স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ছিল ধর্মনিরপেক্ষ দর্শন।




ছবি : সংগ্রামের নোটবুক
তিনি সংসদে ১৯৭৫ সালে ধর্ম নিরপেক্ষতার স্বরূপ বর্ণনা দিতে বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের ধর্ম কর্ম করার অধিকার থাকবে। আমরা আইন করে ধর্মকে বন্ধ করতে চাই না এবং করবো না। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমানরা তাদের ধর্ম পালন করবে, তাদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রে কারো নাই। হিন্দুরা তাদের ধর্ম পালন করবে, কারো বাধা দেওয়ার ক্ষমতা নাই। বৌদ্ধরা তাদের ধর্ম পালন করবে, খৃষ্টানরা তাদের ধর্ম করবে তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। আমাদের শুধু আপত্তি হল এই যে, ধর্মকে কেউ রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। ২৫ বৎসর আমরা দেখেছি, ধর্মের নামে জুয়াচুরি, ধর্মের নামে শোষণ, ধর্মের নামে বেঈমানী, ধর্মের নামে অত্যাচার, খুন, ব্যাভিচার – এই বাংলাদেশের মাটিতে এ-সব চলেছে। ধর্ম অতি পবিত্র জিনিস। পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা চলবে না”




তাই তিনি রাজনীতিতে শোষণের হাতিয়ার হিসেবে যেন ধর্মকে না করা হয় এ ব্যাপারে সবসময় সজাগ ছিলেন।বঙ্গবন্ধু তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন


‘জনগণকে ইসলাম ও মুসলমানের নামে স্লোগান দিয়ে ধোঁকা দেওয়া যায় না। ধর্মপ্রাণ বাঙালি মুসলমানরা তাদের ধর্মকে ভালবাসে; কিন্তু ধর্মের নামে ধোঁকা দিয়ে রাজনৈতিক কার্যসিদ্ধি করতে তারা দিবে না এ ধারণা অনেকেরই হয়েছিল। জনসাধারণ চায় শোষণহীন সমাজ এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি’(পৃষ্ঠাঃ২৫৮)






১৯৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত বাঙালিরা সৌদী আরবে হজ্জ করতে যেতে পারতেন না পাকিস্তানীদের থেকে স্বাধীন হওয়ার কারণে, সৌদি আরব বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও দেয়নি তৎকালে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে ওআইসি সম্মেলনে সৌদি বাদশা ফয়সালের কাছে অনুরোধ করেন বাঙালিদের হজ্জ পালনের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
উত্তরে সৌদি বাদশা বঙ্গবন্ধুকে বলেঃ
যেহেতু আপনি একজন মুসলিম, তাই আপনাকে বলছি-আপনার দেশ সৌদি আরবের স্বীকৃতি পেতে হলে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে ““Islamic Republic of Bangladesh” করতে হবে।


প্রতিউত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেনঃ এই শর্ত বাংলাদেশে প্রযোজ্য হবে না। বাংলাদেশের জনগনের প্রায় অধিকাংশই মুসলিম। আমাদের প্রায় এক কোটি অমুসলিমও রয়েছে। সবাই একসাথে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে বা যুদ্ধের ভোগান্তিতে পড়েছে। তাছাড়া সর্বশক্তিমান আল্লাহ শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্যই নন। তিনি বিশ্বভ্রমান্ডের স্রষ্টা। ইউর এক্সেলেন্সী, ক্ষমা করবেন, তাছাড়া আপনার দেশের নামও তো “Islamic Republic of Saudi Arabia” নয়। আরব বিশ্বের একজন গুনী ও খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ প্রয়াত বাদশা ইবনে সৌদের নামে নাম রাখা হয়েছে “Kingdom of Saudi Arabia” আমরা কেউই এই নামে আপত্তি করিনি।


সৌদি বাদশা সেই বৈঠকে রাজাকারদের মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু ঘৃনাভরে সেই প্রস্তাব ও প্রত্যাখ্যান করেন। হিমালয়সম অসাম্প্রদয়িক রণহুঙ্কারের কাছে সৌদীর বাদশা এভাবেই পরাভূত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক নীতির প্রশ্নে অটল ছিলেন,যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন তিনি সত্যিকার অর্থে অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। ১৯৭১-৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ছিল খুবই ভাল।


বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির চরম অবমূল্যায়নের শিকার হয়েছিল। তাই বঙ্গবন্ধু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন যেন দৃঢ় এবং চির অমলিন থাকে সেজন্য ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।এজন্য বঙ্গবন্ধু প্রায় সময় সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতেন
” পবিত্র ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা চলবেনা”
‘সকল ধর্মের মানুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্রত’ ছিল বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ নীতি।






বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ অবলোকন করতে হলে মুজিববাদ সমন্ধে জানতে হবে।মুজিববাদ বুঝতে হলে মুজিবের চার স্তম্ভ বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র,সমাজতন্ত্র,ধর্ম নিরপেক্ষতা সমন্ধে বঙ্গবন্ধুর উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মুজিববাদ সমন্ধে যত জানবো ততই বঙ্গবন্ধুর সমাজচিন্তা, রাষ্ট্রচিন্তা নিয়ে দূরদর্শী কর্মকাণ্ড আপনাকে মুগ্ধ করবেই।স্রোতের প্রতিকূলে দাঁড়িয়ে একটি দেশকে স্বাধীন করে সে দেশের জনগণকে হাজার বাধা বিপত্তি ঠেলে স্বনির্ভর,আত্মমর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই বঙ্গবন্ধুর জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ছিল।স্বনির্ভর,আত্মমর্যাদাবান,প্রগতিশীল,মুক্তচিন্তার বাঙালি জাতির বাংলাদেশ একমাত্র সম্ভব মুজিববাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। মুজিববাদ হোক বাঙালি জাতির মুক্তির পথ।


তথ্যসূত্রঃ


১. অসমাপ্ত আত্মজীবনী – শেখ মুজিবুর রহমান


২. জাসদের উত্থান পতন ও অস্থির সময়ের গল্প – মহিউদ্দিন আহমদ


৩.মুজিব ভাই – এবি এম মুসা


৪.শেখ মুজিবের শাসনকাল – মওদুদ আহমেদ


৫.আমি সিরাজুল আলম খান বলছি – শামসুদ্দিন পেয়ারা


৬.মুক্তিযুদ্ধ সত্যের মুখোমুখি – অধ্যাপক আবু সাইয়িদ


৭.ফিরে দেখা গান্ধীজি ও নেতাজি – নারায়ণ সান্যাল


Comments

Popular posts from this blog

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918)

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918) Introduction The Ahmedabad Satyagraha of 1918 marks a significant chapter in India's struggle for independence. It was a labor strike initiated by the mill workers in Ahmedabad, Gujarat, demanding an increase in wages. The strike was not just a protest against economic injustice, but it also symbolized the fight against oppressive colonial rule. The term 'Satyagraha' was coined by Mahatma Gandhi, which translates to 'insistence on truth' or 'soul force'. It was a method of non-violent resistance, and the Ahmedabad Satyagraha was one of the early instances where this method was employed in the Indian independence movement. The Satyagraha in Ahmedabad was a turning point as it marked the beginning of Gandhi's active involvement in Indian politics. It was here that Gandhi first introduced his methodology of peaceful resistance and negotiation as a means to achieve political and social change. The event holds histori...

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন

বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সুচিপত্র ভূমিকা পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বছরগুলি (1757-1857) 1857 সালের বিদ্রোহ এবং এর প্রভাব প্রয়াত ঔপনিবেশিক সময়কাল (1858-1947) বঙ্গভঙ্গ (1905) ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত বিভাজন (1947) উপসংহার বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন (1757-1947) পরিচয় বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন 1757 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী বিস্তৃত ছিল। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন দেখা যায় যা এই অঞ্চলে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলার ইতিহাসের জটিলতা এবং ঔপনিবেশিকতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর স্থানকে উপলব্ধি করার জন্য এই ঐতিহাসিক যুগকে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ...

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড সূচিপত্র ভূমিকা অধ্যায় 1: ভাড়াটিয়া হিসেবে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব বুঝুন অধ্যায় 2: বহিষ্করণ ও ভাড়াদারি শেষ অধ্যায় 3: ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা অধ্যায় 4: রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত অধ্যায় 5: আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে ভাড়াটিয়া পরামর্শ দিতে পারে উপসংহার অতিরিক্ত সংস্থান যোগাযোগের তথ্য ভূমিকা ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইন বুঝতে ভাড়াটিয়াদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পূর্ণ গাইডের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের তাদের সম্পত্তি পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা। আপনি একজন অভিজ্ঞ ভাড়াটিয়া হোক বা শুরু করছেন, এই নিবন্ধটি আপনাকে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব, বহিষ্করণ প্রক্রিয়া, ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত, এবং আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে বিশেষজ্ঞ আইনি পরামর্শ দিতে পারে তা ব...