Skip to main content

মজার গল্প: আমি দুইখান তুমি একখান


মজার গল্প: আমি দুইখান                    তুমি একখান

 মজার গল্প: আমি দুইখান তুমি একখান




এক ছিল বউ আর তার স্বামী। দুইজনের সংসার। কষ্টেসৃষ্টে তাদের দিন চলে যায়। একটু ভালমন্দ খাবার ইচ্ছা তাদের প্রবল। কিন্তু পয়সাপাতির তেমন জোর নেই যে একখান বাক্কা’ (মনের মতো) বাজার করে হাউস মিটিয়ে খাবে। তাই রোজ শাক, বে-মজা ভাজি আর ভর্তা দিয়ে তাদের ভাত খেতে হয়। একই জিনিস রোজ রোজ মুখে রোচে না।

  • বউটি তাই স্বামীকে বলে : ‘একই ভাজি আর বিস্বাদ ভর্তা খেতে খেতে মুখে চড়া পড়ে গেল। মাছ মাংস খাই না কতদিন তা মনেও করতে পারছি না—মাংস খাব এমুন পিতলা হাউস করে লাভ নেই। তবে মাছ তো না কিনেও পাওয়া যায়। বিলে গিয়ে ছোটমোট মাছ ধরে আনলে তো মুখের স্বাদটা বদলাতে পারি।’

  • স্বামী বলে : তাইলে মাছ মারনের জন্যই যাই। চাঙ্গের ওপর থাইকা ‘ওচা’ দেও। দেহি কিছু পাই কিনা।’

  • বউ বাঁশের ওচা বের করে দেয়। স্বামী ওচা আর খালুই নিয়ে বিলে যায়। প্রথমে কিছু তিতপুঁটি, ছোট ছোট চান্দা, কুঁচো চিংড়ি আর চেলা মাছ ওঠে। পরে জংলা ঘাসের ছোপের ঘোলা পানিকে পা দিয়ে খলবল করে নাড়িয়ে ওচা ফেলতেই গটর গটর শব্দ হয়। ওচা তুলতেই দেখা গেল তিনখানা ডাঙ্গর কই। এমন দশাসই কই পেয়ে লোকটি মহাখুশি।

  • দৌড়ে বাড়ি ফিরে এসে সে বউকে বলেঃ নে, ভাল কইরা কশাইয়া রান্ধ। আইজ বড়ই মজার খাওন অইব।

  • বউ বলে : হ্যাঁ। তবে আগেই বলে রাখি, আমিই তোমাকে মাছ ধরতে পাঠিয়েছি, তাই আমি খাব দু’খান, তুমি একখান।
  • স্বামী বলে : দেখছো, লালচ কত! এত কষ্ট কইরা মাছ মারলাম আমি, অহন হেই কইতাছে, হেই খাইব দুইখান, আমি একখান। তুই চেলা তিতপুটি ভাজি আর একখান কই খাইবি। আমি বেটা ছেইলা। আমার হক বেশি। আমি খামু দুইখান কই। আর গুদ ইচা মাছগুলান রাখবি—সাতদিন তরকারি মজানো যাইব।

  • একথা শুনে বউ রান্না না করে রাগ করে শুয়ে পড়ে।
  • স্বামী বলে : ওঠ, রান্না কর।

  • বউঃ উঠতে পারি, কথা দেও, দুই কই আমি খাব।
  • স্বামী : ইস্ আহ্লাদে আর বাঁচি না। হে দুইখান খাইব। ক্যা, তুই বাড়ির মর্দ না? আমি পুরুষ পোলা, আমি খামু দুইখান।
  • বউ বলে : তাইলে আমি উঠব না।

  • দুপুর যায়, বিকেল যায়, রান্না-খাওয়া হয় না। দুজনই বিছানায় পড়ে দর কষাকষি করে। এ বলে আমি দুইখান, তুমি একখান।
  • রাত যায়, পরদিন দুপুরে অর্ধমৃত অবস্থায়ও দুজনের একই রকম দাবি চলে চিহির্টিহি গলায় : আমি খাব দুইখান, তুমি একখান। পরে তারা আরও নির্জীব হয়ে মরার মতো পড়ে থাকে। পাড়া-প্রতিবেশীরা মনে করে দু’জনেই মরে গেছে। যথারীতি আহা-উহু কান্নাকাটি করে মৃতদেহের দাফন-কাফনের আয়োজন করে তারা।

  • নিয়মমতো তিনজন লোক প্রথম কবরে নেমে স্বামীকে কবরে নামাতে উদ্যত হতেই স্বামী বলে : আমি দুইখান খাই, তুই একখান খাবি।

  • এ কথা শুনে কবরে নামা তিনজনই মনে করে, আরে, মুর্দা তো তাদেরই খেতে চাইছে। তাই পড়ি তো মরি করে কবর থেকে লাফিয়ে উঠে ভূত ভূত করে চিৎকার করে ভেদৌড় লাগায় তারা। মওলানা সাহেব কবরের ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মাটি হাতে। তিনিই প্রথম মাটি ফেলবেন কবরে। তিনিও ‘ভূত ভূত’ শব্দ শুনে ভয়ে হাতের মাটি ফেলে দৌড়ে গিয়ে নিজের ঘোড়ায় চড়ে ঘোড়ার পিঠে জোরে চাবুক মারেন। ঘোড়া ছিল খোটা আর রশি দিয়ে মাটিতে বাঁধা। ঘোড়া প্রচণ্ড শক্তিতে ছুটে চলায় খোটা উঠে যায় এবং রশিতে বাধা খোটা মওলানা সাহেবের পিঠে এসে তালে তালে বারংবার আঘাত করতে থাকে। মওলানা বাবারে, মারে, গেলামরে, বাঁচাওরে, ভুতে ধরছেরে বলে চিৎকার করতে থাকেন। এক সময় তিনি ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পান।

  • তবে অনবরত পিঠের আঘাত থেকে বেঁচে তার ভূতের ভয় কাটে। কোমরে হাত দিয়ে কোকাতে কোঁকাতে বলেন : আল্লায় জবর বাঁচান বাচাইছে। এখন ঘোড়াটা পাইলে হয়, আর ভূত ঘোড়ার পিঠ থাইকা নামলে হয়। শালার ভূত ঘোড়ার ওপরে বসা অবস্থায় আমার পিঠে মোটা শক্ত ডাণ্ডা দিয়ে আঘাত করে ফেলে দিয়ে নিশ্চয় নিজে ঘোড়ায় চড়ে বসেছে। ঘোড়াকে কোথায় নিয়া গেছে কে জানে?


Comments

Popular posts from this blog

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918)

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918) Introduction The Ahmedabad Satyagraha of 1918 marks a significant chapter in India's struggle for independence. It was a labor strike initiated by the mill workers in Ahmedabad, Gujarat, demanding an increase in wages. The strike was not just a protest against economic injustice, but it also symbolized the fight against oppressive colonial rule. The term 'Satyagraha' was coined by Mahatma Gandhi, which translates to 'insistence on truth' or 'soul force'. It was a method of non-violent resistance, and the Ahmedabad Satyagraha was one of the early instances where this method was employed in the Indian independence movement. The Satyagraha in Ahmedabad was a turning point as it marked the beginning of Gandhi's active involvement in Indian politics. It was here that Gandhi first introduced his methodology of peaceful resistance and negotiation as a means to achieve political and social change. The event holds histori...

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন

বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সুচিপত্র ভূমিকা পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বছরগুলি (1757-1857) 1857 সালের বিদ্রোহ এবং এর প্রভাব প্রয়াত ঔপনিবেশিক সময়কাল (1858-1947) বঙ্গভঙ্গ (1905) ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত বিভাজন (1947) উপসংহার বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন (1757-1947) পরিচয় বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন 1757 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী বিস্তৃত ছিল। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন দেখা যায় যা এই অঞ্চলে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলার ইতিহাসের জটিলতা এবং ঔপনিবেশিকতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর স্থানকে উপলব্ধি করার জন্য এই ঐতিহাসিক যুগকে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ...

Comprehensive Guide on Media and Entertainment Law in Bangladesh

Comprehensive Guide on Media and Entertainment Law in Bangladesh Comprehensive Guide on Media and Entertainment Law in Bangladesh Introduction Overview of Media and Entertainment Law Definition and Scope Media and entertainment law encompasses a broad spectrum of legal issues related to the creation, production, distribution, and consumption of media and entertainment content. This includes various sectors such as film, television, music, publishing, digital media, and advertising. The scope of this law covers intellectual property rights, contracts, censorship, licensing, and regulatory compliance. It is essential for protecting the rights of creators, producers, and consumers, ensuring fair use, preventing unauthorized exploitation, and maintaining ethical standards in content creation and distribution. ...