Bangladesh Declaration of Independence: Full Analysis with Photos (1971) The Juridical Birth and Enduring Resonance: An Exhaustive Analysis of the Declaration of Independence of Bangladesh By Afzal Hosen Mandal Published on: April 14, 2025 Table of Contents 1. Introduction: Situating the Declaration 2. Antecedents and Catalysts 3. The Declaratory Acts 4. Intrinsic Legal Character and Constitutional Ramifications 5. Implications for Public International Law 6. Symbolism, National Identity, and Collective Memory 7. Historical Controversies and Judicial Clarification 8. Contemporary Relevance and Unfinished Legacies ...
ভূ-সম্পত্তি
বাংলাদেশে জমি সংক্রান্ত যাবতীয় দলিল,খতিয়ান সরকারি গেজেট,ভূমি অফিস,রেজিষ্টেশন অফিস ও জমির ব্যবসায় জমির পরিমাপক ছয়টি-
Ø অযুতাংশØ শতাংশØ কাঠাØ বিঘাØ একরØ হেক্টর
জমির ইতিহাসঃ
বাংলাদেশের ভূমির ইতিহাস বা জমির ইতিহাস জানতে হলে আমাদেরকে পাঁচটি আমল জানতে হবে তাহলে আমরা জমি সর্ম্পকে জানতে পারব-
i. মুঘল আমল
ii. বৃটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আমল
iii. বৃটিশ আমল
iv. পাকিস্তান আমল
v. বাংলাদেশ আমল
মোগল সাম্রাজ্যঃ(১৫২৬-১৭৫৭)ঃ ১৫২৬ সালে পানি পথের প্রথম যুদ্ধে বাবরের বিজয়ের মাধ্যমে মোঘল শাসনের সূচনা হয়।কালের পরিক্রমায় ১৫৫৬ সালে পানি পথের দ্বিতীয় যুদ্ধে জালাল উদ্দিন মোহাম্মদ আকবরের জয়ের ফলে মোগল সাম্রাজ্য বিকশিত হয় এবং বিস্তৃতি লাভ করে।এখন কার বাংলাদেশ,পাকিস্তান,ভারত আফগানিস্তান এই সাম্রাজের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই আমলে জমির মালিক কে রায়ত বলা হত এবং যারা জমির খাজনা আদায় করে রাজাদের দিতেন তাদেরকে জমিদার বলা হত। রায়তরা দুই ভাগে বিভক্ত ছিল।
- · খুদকাস্ত
- · পাইকাস্ত
খুদকাস্তঃ যারা গ্রামে বসবাস করতেন।সেখানে বাড়ি ঘর করে থাকতেন এবং জমি জমা চাষাবাদ করতেন।এদের জমিতে অধিকার ছিল।সরকারকে উৎপাদিত ফসলের ছয় ভাগের এক ভাগ দিতেন ।জমি বংশপরস্পরার ভোগের অধিকার ছিল।জমি এরা নিজে আবাদ করতেন অথবা অন্যকে দিয়ে আবাদ করাতেন।
পাইকাস্তঃ ভিন্ন গ্রামের মানুষ যারা জমি চাষ করত তাদের বলা হতো পাইকাশ্ত রায়ত। তারা চুক্তিভিত্তিতে খাজনা পরিশোধ করতে পারত। কিন্তু জমি দখলে রাখার কোন অধিকার তাদের ছিল না। তারা আসলে ছিল উচ্ছেদযোগ্য চাষি এবং ফসল কাটার পর যে কোন সময় তাদেরকে বিতাড়ন করা যেত। জমিদার জায়গিরদার, চৌধুরী, তালুকদাররা তাদের দখলীকৃত খাসজমি বর্গাদারদের দ্বারা অথবা কৃষিশ্রমিকের সাহায্যে চাষাবাদ করতে পারত। এক্ষেত্রে বর্গাদার বা শ্রমিকদের ফসলের হিস্যা বা মজুরি পাওনা ছাড়া জমির ওপর তাদের কোন অধিকার ছিল না।যারা যাযাবর মত কখনো এই গ্রামে কখনো অন্য গ্রামে জমি চাষাবাদ করতেন,কোথাও নির্দিষ্ট ভাবে থাকতেন না ।জমির উপর এদের কোন কায়েমি স্বত্ব ছিল না।
জমির বিভিন্ন শব্দের ব্যাখ্যাঃ
জমির বিভিন্ন শব্দের ব্যাখ্যাঃ
এজমালী সম্পত্তি:
· কোন প্লট বা জমি খন্ড একাধিক শরিক একত্রে ভোগ-দখলে রাখলে তাকে এজমালী সম্পত্তি বলে। এটা হতে পারে ওয়ারিশ সুত্রে বা ক্রয় সুত্রে।যৌথ মালিকানার জমিকে বলে এজমালি।
বর্গা চাষী বা আদি :
· বর্গা বলতে ভূমিতে উৎপন্ন ফসলের ভাগ বুঝায়। কোন ব্যক্তি ভূমিতে উৎপন্ন ফসলের কোন নির্দিষ্ট অংশ ভূমি মালিককে দেয়ার শর্তে যদি চাষাবাদ করেন, তবে উক্ত চাষীকে বর্গাচাষী বলা হবে। আগে চার ভাগের ২ ভাগ মালিক কে দিতে হতে ,তেভাগা আন্দোলনের পর এত ৩ ভাগের ১ ভাগ দেয়ার নিয়ম করা হয়।
চালা:
· আবাদী উঁচু জমি যেখানে সাধারনত শাক-সবব্জির চাষ করা হয়, তাকে চালা বলে। কোন কোন এলাকায় চালা শ্রেনীর জমিকে ভিটিও বলা হয়।
ভিটি
· এমন অনেক উঁচু জমি আছে যেখানে বসবাসের জন্য বাড়ীঘর নির্মাণ না করে চাষাবাদ করা হয়। বাড়ীঘর করার যোগ্য এমন উঁচু ভূমিকে ভিটি জমি বলে।
নয়নজুলি:
· রাস্তা নির্মানের সময় দুধার থেকে মাটি তোলার কারণে নালা সৃষ্টি হয়। রাস্তার দুধারে সৃষ্ট এমন নালাকে নয়নজুলি বলা হয়।
হালট:
· চাষিদের জমি চাষের জন্য হাল-বলদ নিয়ে জমিতে চলাচলের জন্য এবং শ্রমিকদের ভূমিতে কাজে যাওয়ার জন্য, ভূমির পাশ দিয়ে যে পথ বা রাস্তা রাখা হয়, তাকে হালট বলে।
নকশা:
· কাগজে অংকিত ভূমির প্রতিচ্ছবিকে নকশা বলে। এট বিভিন্ন স্কেলে তৈরি করা হয়।মাঠের জমিকে কাগজে সংকুচিত করে অংকিত করা হয়।যেমন – ৪,১৬,৩২,৬৪,৮০ ইঞ্চি =১ মাইল।
দাগ নম্বর:
· ভূমির নকশায় প্রতিটি প্লটকে এক একটি নম্বর দ্বারা চিহ্নিত করা হয়, এই নম্বরকে দাগ নম্বর বলে।
ছুট বা ছুটা দাগ
· নকশায় সংখ্যায়নের মাধ্যমে ভূমির দাগ নম্বর দেয়ার সময় প্রায়শই ভুলক্রমে কোন সংখ্যা বাদ পরে অথবা কোন কারণে পরবর্তী সময় কোন সংখ্যা নকশায় বাদ দিতে হয়। নকশায় প্রকৃত অনুপস্থিত ঐ নম্বরকে ছুট দাগ বলে। ছুট দাগ নম্বর সীটের পার্শ্বে নোট করা থাকে।
বাটা দাগ
· নকশা প্রস্তুতের সময় প্রত্যেক ভূমি খণ্ডকে চিহ্নিত করার জন্য দাগ নম্বর দেয়া হয়। পবর্তীকালে কোন দাগ বাস্তব প্রয়োজনে বিভক্ত করা আবশ্যক হতে পারে। যদি কোন দাগকে বিভক্ত করে আলাদাভাবে নতুনদাগ সৃষ্টি করে নম্বর দেয়া হয়, তাহলে বিশেষ পদ্ধতিতে দাগ নম্বর দিতে হয়। পরবর্তী সময় এ নতুন সৃষ্ট নম্বরকে বাটা দাগ নম্বর বলে। এ নতুন সৃষ্ট দাগে বাটা দাগ নম্বর দেয়ার সময় বিভক্ত দাগের মুল নম্বর এর নীচে (বাই নম্বর) সীটের শেষ নম্বরে পরের নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। বাটা দাগ নম্বরে সীটের পার্শ্বে নোট করে প্রর্দশন করতে হয়। ২,২/৪০০
মৌজাঃ
· সি,এস, জরিপের সময় প্রতিটি থানা এলাকাকে অনেকগুলো এককে বিভক্ত করে প্রত্যেকটি একককে ক্রমিক নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করে জরিপ করা হয়েছে। থানা এলাকার এরূপ প্রত্যেকটি একককে মৌজা বলে। এক বা একাধিক গ্রাম বা পাড়া নিয়ে একটি মৌজা গঠিত হয়। মোট মৌজা ৬৯৯৯০ যেখানে গ্রাম ৬৮০০০ মাত্র ।
জে,এল, নম্বর (Jurisdiction List No) :
· থানা বা উপজেলাধীন প্রত্যেকটি মৌজাকে পর্যায়ক্রমে ক্রমিক নম্বর দ্বারা চিন্থিত করা হয়। মৌজার এ নম্বরকে জে,এল, নম্বর বলে।
খতিয়ান:
· সাধারণত স্বত্ব সংরক্ষণ ও রাজস্ব আদায়ের উদ্দেশ্যে জরীপ বিভাগ কর্তৃক প্রত্যেক মৌজার ভূমির মালিক বা মালিকগণের নাম, পিতা অথবা স্বামীর নাম, ঠিকানা, জমির হিস্যা বা অংশ এবং তাদের স্বত্বাধীন দাগসমূহের নম্বরসহ ভূমির পরিমাণ, শ্রেণী ইত্যাদি বিবরণসহ যে স্বত্ব তালিকা বা স্বত্বের রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়, তাকে খতিয়ান বলা হয় এবং
উক্ত রেকর্ডকে স্বত্ত্বের রেকর্ড বা রেকর্ড অব রাইটস (ROR) বলা হয়। খতিয়ানগুলো ১,২,৩,৪ ইত্যাদি ক্রমিক সংখ্যা দ্বারা সাজানো হয়। এই নম্বরকে খতিয়ান নম্বর বলে। প্রত্যেক মৌজার খতিয়ান নম্বর ১ হতে শুরু হয়। কোন কোন মৌজায় কয়েক হাজারে খতিয়ান থাকতে পারে। কোন মৌজায় কতটি খতিয়ান রয়েছে তা উক্ত মৌজার স্বত্বের রেকর্ডে (ROR) পাওয়া যায়।
পর্চা
জরীপ চলাকালে খসড়া খতিয়ানের যে অনুলিপি ভূমির মালিককে দেয়া হয় তাকে পর্চা বলে।অথবা অনেক এলাকায় খতিয়ান কেই পর্চা বলে।
তফসিল
তফসিল অর্থ জমির পরিচিতিমূলক বিসত্মারিত বিবরণ। কোন জমির পরিচয় প্রদানে জন্য সংশ্লিষ্ট মৌজার নামে, খতিয়ান নং, দাগ নং, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমান ইত্যাদি তথ্য সমৃদ্ধ বিবরণকে তফসিল বলে।
মৌজা
ক্যাডষ্টাল জরিপের সময় প্রতি থানা এলাকাকে অনেকগুলো এককে বিভক্ত করে প্রত্যেকটি একক এর ক্রমিক নং দিয়ে চিহ্নিত করে জরিপ করা হয়েছে। থানা এলাকার এরূপ প্রত্যেকটি একককে মৌজা বলে। এক বা একাদিক গ্রাম বা পাড়া নিয়ে একটি মৌজা ঘঠিত হয়।
খাজনা
ভূমি ব্যবহারের জন্য প্রজার নিকট থেকে সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে ভূমি কর আদায় করে তাকে ভূমির খাজনা বলা হয়।
ওয়াকফ
ইসলামি বিধান মোতাবেক মুসলিম ভূমি মালিক কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় ভার বহন করার উদ্দেশ্যে কোন সম্পত্তি দান করাকে ওয়াকফা বলে।
মোতওয়াল্লী
ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান যিনি করেন তাকে মোতওয়াল্লী ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত ওয়াকফ সম্পত্তির হসত্মামত্মর করতে পারেন না।
ওয়ারিশ
ওয়ারিশ অর্থ ধর্মীয় বিধানের আওতায় উত্তরাধিকারী। কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যু বরন করলে আইনের বিধান অনুযায়ী তার স্ত্রী, সমত্মান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হক এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে ওয়ারিশ বলা হয়।
ফরায়েজ
ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তিবণ্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফরায়েজ বলে।
খাস জমি
ভূমিন্ত্রণালয়ের আওতাধিন যে জমি সরকারের পক্ষে কালেক্টর তত্ত্বাবধান করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে।
কবুলিয়ত
সরকার কর্তৃক কৃষককে জমি বন্দোবসত্ম দেওয়ার প্রসত্মাব প্রজা কর্তৃক গ্রহণ করে খাজনা প্রদানের যে অঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কুবলিয়ত বলে।
দাগ নং
মৌজায় প্রত্যেক ভূমি মালিকের জমি আলাদাভাবে বা জমির শ্রেণী ভিত্তিক প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সিমানা খুটি বা আইল দিয়ে স্বরজমিনে আলাদাভাবে প্রদশর্ন করা হয়। মৌজা নক্সায় প্রত্যেকটি ভূমি খমত্মকে ক্রমিক নম্বর দিয়ে জমি চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রদত্ত্ব নাম্বার বলে।
ছুট দাগ
ভূমি জরিপের প্রাথমিক পর্যায়ে নক্সা প্রস্ত্তত বা সংশোধনের সময় নক্সার প্রত্যেকটি ভূ-খন্ডের ক্রমিক নাম্বার দেওয়ার সময় যে ক্রমিক নাম্বার ভুলক্রমে বাদ পরে যায় অথবা প্রাথমিক পর্যাযের পরে দুট ভূমি দন্ড একত্রিত হওয়ার কারনে যে ক্রমিক নাম্বার বাদ দিতে হয় তাকে ছুট দাগ বলা হয়।
চান্দিনা ভিটা
হাট বাজারের স্থায়ী বা অস্থায়ী দোকান অংশের অকৃষি প্রজা স্বত্ত্য এলাকাকে চান্দিা ভিটা বলা হয়।
অগ্রক্রয়াধিকা
অগ্রক্রয়াধিকার অর্থ সম্পত্ত্বি ক্রয় করার ক্ষেত্রে আইনানুগভাবে অন্যান্য ক্রেতার তুলনায় অগ্রাধিকার প্রাপ্যতার বিধান কোন কৃষি জমির মালিক বা অংশিদার কোন আগন্তুকের নিকট তারা অংশ বা জমি বিক্রিয় মাধ্যমে হসত্মামত্মর করলে অন্য অংশিদার কর্তৃক দলিলে বর্ণিত মূল্যসহ অতিরিক্ত ১০% অর্থ বিক্রি বা অবহিত হওয়ার ৪ মাসের মধ্যে আদালতে জমা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জমি ক্রয় করার আইনানুগ অধিকারকে অগ্রক্রয়াধিকার বলা হয়।
আমিন
ভূমি জরিপের মধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্ত্তত ও ভূমি জরিপ কাজে নিযুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলা হত।
সিকসিত্ম
নদী ভাংঙ্গনে জমি পানিতে বিলিন হয়ে যাওয়াকে সিকসিত্ম বলা হয়।সিকসিত্ম জমি ৩০ বছরের মধ্যে স্বাস্থানে পয়মিত্ম হলে সিকসিত্ম হওয়ার প্রাককালে যিনি ভূমি মালিক ছিলেন, তিনি বা তাহার উত্তরাধিকারগন উক্ত জমির মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য হবেন।
পয়সিত্ম
নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়সিত্ম বলা হয়।
নাল জমি
সমতল ২ বা ত ফসলি আবাদি জমিকে নাল জমি বলা হয়।
দেবোত্তর সম্পত্তি
হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির আয়োজন, ব্যবস্থাপনা ও সুসম্পন্ন করার ব্যয় ভার নির্বাহের লক্ষ্যে উৎসর্গকৃত ভূমিকে দেবোসত্মর সম্পত্তি বলা হয়।
দাখিলা
ভূমি মালিকের নিকট হতে ভূমি করা আদায় করে যে নির্দিষ্ট ফরমে (ফরম-১০৭৭) ভূমিকর আদায়ের প্রমানপত্র বা রশিদ দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলে।
ডিসিআর
ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পা যে নির্ধারিত ফরমে(ফরম নং-২২২) রশিদ দেওয়া হয় তাকে ডিসিআর বলে।
দলিল
যে কোন লিখিত বিবরণি যা ভবিষ্যতে আদালতে স্বাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ যোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিষ্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হসত্মাসত্মর করার জন্য যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করেন তাকে সাধারনভাবে দলিল বলে।
কিসেত্মায়ার
ভুমি জরিপকালে চতুর্ভূজ ও মোরববা প্রস্ত্তত করার পর সিকমি লাইনে চেইন চালিয়ে সঠিকভাবে খন্ড খন্ড ভূমির বাসত্মব ভৌগলিক চিত্র অঙ্গনের মাধ্যমে নক্সা প্রস্ত্তরে পদ্ধতিকে কিসেত্মায়ার বলে।
খানা পুরি
জরিপের সময় মৌজা নক্সা প্রস্ত্তত করার পর খতিয়ান প্রস্ত্ততকালে খতিয়ান ফর্মের প্রত্যেকটি কলাম জরিপ কর্মচারী কর্তৃক পূরণ করার প্রক্রিয়াকে খানাপুরি বলে।
►ভূমি জরিপ : জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০, সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট (এসএস) ম্যানুয়াল ১৯৩৫, সার্ভে অ্যাক্ট ১৮৭৫, প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫ এবং অপরাপর জরিপ আইনের বিধান মতে, মৌজাভিত্তিক ভূমির রেকর্ড তথা খতিয়ান ও নকশা প্রস্তুতের কার্যক্রমকে ভূমি জরিপ বলা হয়।
►ম্যাপ বা নকশা : নকশা হলো কোনো মৌজাভুক্ত ভূমির বাস্তব চিত্র বা ভূ-চিত্র।
►মৌজা : মৌজা হলো জরিপের একটি ভৌগোলিক ইউনিট। একটি ইউনিয়নকে কয়েকটি মৌজায় বিভক্ত করে এ ভৌগোলিক ইউনিট করা হয়।
জেএল নং : উপজেলার অন্তর্গত মৌজাগুলোর পরিচিতিমূলক ক্রমিক নম্বরকে জেএল নং বা জুরিসডিকশন লিস্ট নম্বর বলে। মৌজার উত্তর-পশ্চিম কোণ থেকে শুরু করে পূর্ব-দক্ষিণ কোণে গিয়ে এ নম্বর দেওয়া শেষ করা হয়।
►বাটা দাগ : নকশায় ভুলবশত কোনো প্লটের দাগ নম্বর বাদ পড়লে, শেষ প্লট নম্বরটির পরের নম্বরটি নিচে লিখে এবং বাদ পড়া প্লটের নম্বরটি ওপরে লিখে (ভগ্নাংশের মতো) প্রাপ্ত যে নম্বর পাওয়া যায়, তা দিয়ে বাদ পড়া প্লটটি চিহ্নিত করা হয়, তাকে বাটা দাগ বলে।
►ছুট দাগ : নকশায় দাগ নম্বর বসানোর সময় ভুলবশত কোনো একটি অঙ্ক বা সংখ্যা বাদ পড়লে অর্থাৎ ছুটে গেলে তাকে ছুট দাগ বলে। যেমন ১, ২, ৩ বসানোর পর ৫ ও ৬ বসিয়ে ফেলা, এখানে ৪ ছুট দাগ। অর্থাৎ ওই নকশায় ৪ নম্বর নামে কোনো প্লটের অস্তিত্ব নেই।
►হোল্ডিং : একটি খতিয়ানে একটি দাগ থাকতে পারে, আবার একাধিক দাগও থাকতে পারে। এ রকম একটি খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত ভূমিকে হোল্ডিং বা জোত-জমা বলে। হোল্ডিংয়ের পরিচিত নম্বরকে হোল্ডিং নম্বর বলে।
►ছানি মামলা : দেওয়ানি আদালতে কোনো মামলার রায় বা ডিক্রি হলে বা তদবিরের অভাবে মামলা খারিজ হলে, রায় বা ডিক্রি বা খারিজ হওয়ার বিষয়টি জানার এক মাসের মধ্যে দেওয়ানি কার্যবিধির অর্ডার ৯, রুল ৪, ৮, ৯ ও ১৩ অনুযায়ী আবেদনের মাধ্যমে মামলাটির পুনর্বহাল ঘটানো যায়। এরূপ আবেদন মঞ্জুর হলে মামলাটি যেখানে শেষ হয়েছিল, সেখান থেকেই আবার শুরু হবে। এটিই ছানি মামলা।
►ডিক্রি : মামলার নম্বর, পক্ষ পরিচয়, দাবির বিবরণ, মামলার খরচের পরিমাণ, খরচ কী অনুপাতে, কে বহন করবে, তা এবং অন্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদি এতে থাকে। স্থাবর সম্পত্তির ডিক্রিতে সেটেলমেন্ট পর্চার দাগ, খতিয়ানও উল্লেখ থাকে। মূলত ডিক্রি হলো রায়ের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত আদালতের দলিল।
নকশাঃ নকশা হলো কোনো মৌজা ভুক্ত ভূমির বাস্তব চিত্র বা ভূ-চিত্র।
ফিল্ড বুক: জরিপের প্রয়োজনে কিস্তোয়ার কালে অফসেট গ্রহণসহ চলমান চেইনের রিডিং লিখনের জন্য যে বই ব্যবহৃত হয় তাকে ফিল্ড বুক বলে। এটি দেখে পরবর্তীতে টেবিলে পি-৭০ সীটে স্বহস্তে নকশা অংকন করা হয়। (জরিপ চলাকালে আমিনের জন্য এর ব্যবহার নিষিদ্ধ)
জরিপকালে ব্যবহৃত কালি/(রং) এর বিবরণ:
ক) খানাপুরী স্তরে ব্যবহার করতে হবেঃ কালো কালি
খ) বুঝারত স্তরে ব্যবহার করতে হবেঃ সবুজ কালি
গ) তসদিক স্তরে ব্যবহার করতে হবেঃ লাল কালি
ঘ) আপত্তি স্তরে ব্যবহার করতে হবেঃ বু–কোবাল্ট কালি
ঙ) আপিল স্তরে ব্যবহার করতে হবেঃ কালো কালি
ফারায়েজ: মুসলিম (সুন্নী) উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী কোনো মুসলিম ইন্তোকাল করলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিকে (ওয়ারিশগণ) কতটুকু পাবে তা সঠিকভাবে নির্ধারণ বা বণ্টন করার নামই হচ্ছে ফারায়েজ।
আসাবা (রেসিডুয়ারী): আসাবা বা রেসিডুয়ারী শব্দের অর্থ অবশিষ্টাংশ ভোগী মুসলিম আইনে তিন ধরনে উত্তরাধিকারের মধ্যে আসাবা এক ধরনের উত্তরাধিকারী। মুসলিম উত্তরাধিকার মতে অবশিষ্টাংশ ভোগী বলতে তাদের বলা হয়েছে যারা সম্পত্তির কোনো নির্ধারিত অংশ পান না কিন্তু অংশীদারদের মধ্যে নির্ধারিত অংশ বন্টনের পর অবশিষ্ট অংশের উত্তরাধিকার হন।
পরিত্যক্ত সম্পত্তি: ২৬ শে মার্চ ১৯৭১ ইং তারিখ হতে যে সকল নাগরিক আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করে সম্পত্তি পরিত্যাগ করে এদেশ ছেড়ে চলে যায় তাদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তিকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি বলে এটি মূলত, বিহারীদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তি।
মৌরাশি: পুরুষানুক্রমে কোনো ভূমি ভোগ দখল করাকে মৌরাশি বলে।
বায়া (Vender): বিক্রেতা, বিক্রেতার সম্পাদিত দলিলকে বলে বায়া দলিল।
মিনাহ (Deduction): কম, কমতি, জমি সিকস্তি হলে তার কর আদায় স্থগিত করাকে মিনাহ বলে।
নালজমি: আবাদ যোগ্য সমতল জমিকে নাল জমি বলে।
চান্দিনা: বাজারের ভিটি ভূমিকে চান্দিনা বলা হয়। এটি মূলত দোকানদারের হোল্ডিং।
জমা বন্ধী (Rent Roll): খাজনার তালিকা।
চালা ভূমি: নালের চেয়ে উঁচু আবাদী ভূমি, পুকুরের পাড় ইত্যাদি রকম ভূমিকে বলে চালা।
হালট: জমিজমার মধ্যবর্তী চওড়া আইল বা পথ যার উপর দিয়ে চাষী হাল বলদ নিয়ে চলাফেরা করে। হালটকে গোপাটও বলা হয়।
চর্চা জরিপ: চর্চা অর্থ চর পয়স্থি জমি বা চরের জরিপ কে বলে চর্চা জরিপ। এই জরিপ করে যে নকশা তৈরি করা হয় তাকে চর্চা নকশা বলে।
তফসিল: কোনা জমি যে মৌজায় অবস্থিত সে মৌজার নাম, জে. এল. নং, খতিয়ান নং, দাগ নং, জমির শ্রেণী, পরিমাণ, জমির চৌহদ্দি বর্ণনা ইত্যাদি পরিচিতি সম্বলিত বিবরণকে ঐ জমির তফসিল বলে।
বাইদ: নীচু কৃষি জমিকে বাইদ বলে।
হাওর: প্রাকৃতিক কারণে কোনো বিস্তীর্ণ নিম্নভূমি জলমগ্ন হলে তাকে হাওর বলে।
বাওড়: নদী তার চলমান পথ হতে গতিপথ পরিবর্তন করে অন্য পথে প্রবাহিত হলে পূর্বের গতিপথের স্রোতধারা বন্ধ হয়ে যে বিশাল জলাভূমির সৃষ্টি করে তাকে বলে বাওড়। নদীর বাক থেকে বাওড় কথার সৃষ্টি হয়েছে।
কত দিনের মধ্যে নামজারী/ মিউটেশন সম্পাদন হয়?
সিটিজেন চার্টার অনুসারে ৪৫(পঁয়তাল্লিশ) কর্ম দিবসেরমধ্যে নামজারী সম্পাদন করা হবে যদি মালিকানার বিষয় নিয়ে কোন বিতর্ক না থাকে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবেদনের সাথে জমা দেয়া হয়।
দলিল জাল কি না পরীক্ষা করুন
(১) সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে লেখা হয়ে থাকে। কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সাল মিলিয়ে দেখতে হবে। এ জন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে। এতে দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
(২) এক জমির একাধিক মালিকের নামে করা থাকলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মূল মালিক কে, তা নির্ণয় করতে হবে।
(৩) অনেক সময় স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দলিলদাতা বা গ্রহীতার সাজা হয়। এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষর বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে স্বাক্ষরের সত্যতা যাচাই করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ভূমি অফিস থেকে বিভিন্ন সিল পরীক্ষা করেও জালিয়াতি নির্ণয় করা যায়।
খেয়াল রাখতে হবে, অনেক আগের দলিলে আগের চিহ্নিত কিছু সিল ব্যবহারই থাকে। আগের দলিল কিন্তু সিল যদি নতুন হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, দলিলটি জাল হতে পারে। একই সঙ্গে তারিখটিও ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ কোনো সরকারি বন্ধের দিন থাকলে সন্দেহের অবকাশ থাকবে। অনেক সময় অর্পিত সম্পত্তি বা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি জীবিত দেখিয়ে জাল করা হয়।
(৪) সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। নামজারিতে ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, সেটা সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি দেখা যায়, সিএস জরিপের সঙ্গে বিক্রেতার খতিয়ানের কোনো গরমিল আছে, তাহলে বুঝতে হবে, কোনো জটিলতা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জরিপ খতিয়ানে জমির পরিমাণ পরবর্তী সময়ে যতবার বিক্রি হয়েছে, তার সঙ্গে জমির পরিমাণ মিল আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা। দাগ নম্বর, ঠিকানা এসব ঠিক আছে কি না, এসব যাচাই করতে হবে।
(৫) জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে ভায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ঠিক আছে কি না।
(৬) সম্প্রতি কোনো আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে তাতে উভয় পক্ষের ছবি ব্যবহার হয়েছে কি না যাচাই করতে হবে।
(৭) কোনো দান করা জমি হলে দলিলে সম্পাদনের তারিখ দেখে কবে জমিতে গ্রহীতা দখলে গেছে তা যাচাই করতে হবে। দলিলটি রেজিস্ট্রি করা কি না এবং দলিলদাতার সঙ্গে গ্রহীতার সম্পর্ক কী, তা যাচাই করতে হবে।
(8) সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে নেওয়া দরকার।
(৯) দলিল সম্পাদনের সময় ব্যবহূত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কি না, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে নিন।
ভুল দলিল সংশোধন
দলিলের ভুল চোখে পরার পর তা সংশোধনের জন্য তিন বছরের মধ্যে সিভিল র্কোট বা দেওয়ানী আদালতে মামলা করতে হবে। তিন বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেলে এরুপ মামলা তামাদির দ্ধারা বাতিল হয়ে যায়। তখন আর মামলা করা যায় না।তখন এ সমস্যা সমাধান করার জন্য আদালতে ঘোষণামূলক মামলা করতে হয়। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ৩১ ধারা অনুযায়ী এরুপ আদালতে ঘোষণামূলক মামলার রায়ই সংশোধন দলিল হিসাবে গন্য হবে।উক্ত রায়েল কফি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে প্রেরন করার পর সাব-রেজিস্ট্রি অফিস আদালতের রায় অনুযায়ী রেজিস্ট্রার বহিতে ভুল সংশোধন করে নিবেন।এই ভুলের জন্য নতুন করে দলিল করার প্রয়োজন হয় না
১। কোন কর কে দেবে
ভ্যাট ও উৎস কর সর্বদাই জমির বিক্রেতা দেয়। আয়কর আইনের বিধান মতে, এ দু’ধরনের কর হচ্ছে বিক্রেতার আয়ের ওপর ধার্য কর। এ কর বিক্রেতার নামে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। জমি বিক্রয়ের সময় এ দু’প্রকার কর আদায় করা হলে তা অবশ্যই বিক্রেতা কর্তৃক পরিশোধ করতে হবে। অন্যান্য কর জমির ক্রেতাকে পরিশোধ করতে হবে।
২।ভ্রম সংশোধন দলিল
দলিল রেজিস্ট্রির পর তাতে দাগ, খতিয়ান, মৌজা, চৌহদ্দি বা নামের ভুল ধরা পড়লে তা খুব সহজেই সংশোধন করা যায়। এ ধরনের ভুল ধরা পড়ার তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানি আদালতে দলিল সংশোধনের মামলা করতে হয়। তিন বছর পর এ ধরনের মামলা তামাদির দ্বারা বারিত হয়ে যায়। তিন বছরের মধ্যে দলিল সংশোধনের মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হলে, নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্তে (অর্থাৎ ৩ বছর পরে) দেওয়ানি আদালতে তখন ঘোষণামূলক মামলা করা যায়। আদালতের রায়ের এক কপি সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠানোর পর সাবরেজিস্ট্রার ওই রায়ের আলোকে ভলিউম সংশোধন করে নেবেন। এছাড়াও ভ্রম সংশোধন দলিল করেও আগে সম্পাদিত দলিলের ভুল সংশোধন করা যায়।
৩। জাল দলিল বাতিলের পদ্ধতি
অপরের সম্পত্তি প্রতারণা করে নিজ নামে বাগিয়ে নেয়ার জন্য নানা কৌশলে সৃজন করা হয় জাল দলিল। কখনও নিরক্ষর মালিককে প্রলোভন দেখিয়ে কখনও বা জমি মালিকের অজান্তে অন্য লোককে মালিক সাজিয়ে গোপনে জাল দলিল তৈরি করা হয়। জাল দলিল যেভাবেই সৃজন করা হোক না কেন, জাল দলিল জমির মূল মালিক বা তার ওয়ারিশদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
জাল দলিল সম্পর্কে জানার তিন বছরের মধ্যে দেওয়ানি আদালতে ওই জাল দলিল বাতিলের জন্য মামলা দায়ের করতে হবে। দলিল বাতিলের সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তির দখল পাওয়ার মামলা করাও সমীচীন হবে।
৪। কমিশনের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রি
দলিলদাতাদের মধ্যে কেউ রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে অক্ষম বা অপারগ হলে তিনি রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩৮ ধারা মতে, দলিল সম্পাদন স্বীকারোক্তি গ্রহণের জন্য কমিশনে প্রার্থণা করে সাবরেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন করতে পারবেন। এরূপ আবেদনের ভিত্তিতে সাবরেজিস্ট্রার বা তার প্রতিনিধি দলিল দাতার বাসস্থানে গিয়ে সম্পাদন স্বীকারোক্তি গ্রহণের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রি করাকে বলে কমিশন মূলে রেজিস্ট্রি। এজন্য আলাদা কমিশন ফিস জমা দিতে হয়। এ প্রসঙ্গে প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়, সাবরেজিস্ট্রার অফিসের সংশ্লিষ্টরা কমিশন ফিস বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে থাকে।
৫। ভিজিটে দলিল রেজিস্ট্রির পদ্ধতি
দলিলদাতা এবং গ্রহীতা উভয়ের কেউই যদি রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দলিল দাখিল করতে না পারেন সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩১ ধারা মতে, দলিলদাতার বাড়িতে গিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য রেজিস্ট্রি অফিসে আবেদন করা যাবে। কমিশন বা ভিজিটের জন্য আবেদন করা হলে রেজিস্ট্রারিং অফিসার দাতার সম্পাদন স্বীকারোক্তি দলিলে লিখে দলিলটি রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করবেন। রেজিষ্টারিং অফিসার নিজে যেতে না পারলে তার অফিসের যে কোনও অফিসার বা বেতনভোগী কর্মচারীকে দিয়ে তার কমিশন জারি করতে পারবেন। ভিজিটের জন্য আবেদন করলে ভিজিট ফি সঙ্গে জমা দিতে হবে।
৬। প্রতিষ্ঠানের নামে দলিল লেখার নিয়ম
প্রতিষ্ঠানের নামে জমি দান বা ক্রয় করতে হলে তা সরাসরি প্রতিষ্ঠানের বরাবরে দলিল করতে হবে। ব্যক্তির নাম প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে দলিল করা যাবে না। তবে কোনও কোম্পানির ক্ষেত্রে তার চেয়ারম্যান, ব্যবস্থপনা পরিচালক কিংবা কোম্পানির পক্ষে অন্য কোনো পদস্থ ব্যাক্তিকে প্রস্তাবিত জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দাতা গ্রহীতা হতে পারেন।
৭ কৈফিয়ত
সাফ কবলা দলিলের নমুনা ফরমে কৈফিয়ত নামীয় একটি কলাম আছে। সাফ কবলা দলিল লেখার সময় ভুল হতে পারে। কোথাও কোনো ভুল হলে আ;ালদে সংশোধন করা হলে এরূপ সংশোধনের পৃষ্ঠা ও লাইন নম্বর উল্লেখ করে দলিলের শেষাংশে কৈফিয়ত হিসেবে তা লিখে দিতে হয়। উপরোক্তরূপ লেখার নিচে দলিল লেখক সই করবেন।
জমি হস্তান্তরে বাধাসমূহ
১। নাবালক, শত্রু দেশের নাগরিক, আদালত কর্তৃক দেউলিয়া ঘোষিত ব্যক্তি, মদ্যপানে মত্ত ব্যক্তি বা পাগল ব্যক্তি কর্তৃক সম্পাদিত কোনো দলিল বাতিল বলে গণ্য হবে।
২। যদি কোনো সম্পত্তি কোনো আইনবলে হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে সে সম্পত্তি হস্তান্তর করে দলিল সম্পাদন করা হলে সে দলিল বাতিল বলে গণ্য হবে।
৩। দলিলদাতাকে কোনরূপ ভয় দেখিয়ে বা লোভ দেখিয়ে বা জোর করে যদি কোনরূপ দলিল সম্পাদন করা হয় তবে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
মৌজা ম্যাপ প্রাপ্তি স্থান
১। চূড়ান্ত প্রকাশনাকালীন সরকার নির্ধারিত মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে চূড়ান্ত উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসের আওতাধীন প্রকাশনা ক্যাম্প হতে মৌজা ম্যাপ সংগ্রহ করা যায়;
২। চূড়ান্ত প্রকাশনা সমাপনান্তে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে রেকর্ড ভলিউমের সাথে মৌজা ম্যাপ হস্তান্তর করা হয়।
৩। স্টক থাকা সাপেক্ষে মৌজা ম্যাপের প্রিন্টেড কপি জেলা প্রশাসকের রেকর্ডরুম থেকে সংগ্রহ করা যায়।
৪। মৌজা ম্যাপের কাস্টডিয়ান পরিচালক(জরিপ), ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর,তেজগাঁও, ঢাকা-১২০৮।
৫। ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে মৌজা ম্যাপের ফটোকপি দেয়ার ব্যবস্থা আছে।
৫। দরখাস্তের মাধ্যমে নির্ধারিত ফি পরিশোধ সাপেক্ষে মৌজা ম্যাপের ফটোকপি সংগ্রহ করা যায।
৬। মৌজা ম্যাপ ছাড়া ও অন্যান্য ম্যাপ যেমন, থানা ম্যাপ, জেলা ম্যাপ ও বাংলাদেশ ম্যাপ ভুমি রেকর্ড ও জরিপ অদিদপ্তর হতে সংগ্রহের সুযোগ আছে।
দলিলের মধ্যে বিভিন্ন নামঃ
ফর্দ-দলিলের পাতা, ইয়াদিকৃত-পরম করুনাময় সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিলাম, পত্র মিদং-পত্রের মধ্যে, বিং-বিস্তারিত, নিং-নিরক্ষর, বং-বাহক(যিনি নিরক্ষর ব্যক্তির নাম লিখে), দং- দখলকার, মং-মূল্য, সাং-সাকিন/গ্রাম দোং- পিতা, পিং-পিতা, আং- স্বামী, জং- স্বামী, খং- খতিয়ান, গং, আরো অংশীদার আছে, এজমালী-যৌথ, অধুনা-বর্তমান, তঞ্চকতা-প্রতারনা, একুনে-যোগফল, মুসাবিধা-দলিল লেখক,জে.এল নং- মৌজা নম্বর।
৩০ ধারা ঃ জপিপের সময় কোনো জমির পরিমান কম বা বেশি উঠলে বা মালিকের নাম ভুল হলে তাহা সংশোধন করার জন্য সেটেলমেন্ট অফিসে সরকার বা কোনো মালিকের নামে ৩০ ধারা (আপত্তি) কেস দাখিল করতে পারেন।
৩১ ধারা ঃ ৩০ ধারা রায়ের পর কোনো মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হলে তিনি ৩০ ধারা (আপত্তি) কেসের রায়ের নকল সংগ্রহ করে ২৯ দিনের ভিতর আবার ৩১ ধারা (আপিল) কেস দাখিল করতে পারেন।
যে সকল ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রির প্রয়োজন নেই:
১। আদালতের ডিক্রির বলে বিক্রয় হলে
অথবা
২। সরকারী দাবী বা পাবলিক দাবী আদায়ের জন্য বেঙ্গল পাবলিক ডিমান্ড রিকভারী এ্যাক্ট, ১৯১৩ এর আওতাধীন দায়েরকৃত সার্টিফিকেট মোকদ্দমা মূলে ভূমি নিলামে বিক্রি বা ক্রয় করা হলে । এবং
(গ)উইল (Bequest)মূলে।
তামাদি হওয়ার সময় সীমা
তামাদি হোয়ার সময়-সীমা তিন বছর থেকে এক বছর করা হয়েছে। দলিল তৈরী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
দলিল রেজিস্ট্রেশনের সময়
দলিল তৈরী হওয়ার তিন মাসের মধ্যে তা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। মৌখিক দান বা হেবা দলিল রেজিস্ট্রেশন।
মুসলিম পারিবারিক ধর্মীয় আইন অনুযায়ী স্তাবর সম্পত্তি মৌখিক দান বা হেবা দলিলো এখন থেকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এই দলিল হবে ঘোষণামূলক। এর জন্য ফি হবে মাত্র ১০০=(একশত) টাকা।
খাস জমির সংজ্ঞা্ও উৎসঃ
ভূমি ব্যবস্হাপনা ম্যানুয়ালের ৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারী খাস জমি বলিতে ব্যক্তি, সংস্হা বা অন্যান্য সরকারী বিভাগের মালিকানা বহির্ভূত ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন খাস জমি বুঝাইবে এবং নিম্মোক্ত শ্রেণীর জমি ইহার অন্তর্ভূক্ত হইবে।
১। কালেক্টরের ১নং খতিয়ানে বা ৮নং রেজিষ্টারের অন্তর্ভূক্ত সকল জমি।
২।৮৭ ধারা মোতাবেক সকল পয়স্তি তথা নতুন চরের জমি খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
৩। ৯০ ধারার বিধান লংঘন করে অর্জিত জমির মালিকানা এবং জমি রাখার উর্ধসীমা (সিলিং) বহির্ভূত মালিকানার জমি খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
৪।৯১ ধারা মোতারেক জমি রাখার উর্ধসীমা অতিক্রম করে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
৫।৯২ ধারা মোতারেক ভূমি মালিকের স্বত্ব নিম্নবর্ণিত কারণে বিলোপ হলে খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
(ক) ভূমি মালিক উত্তরাধিকার না রেখে মৃত্যুবরণ করলে তার স্বত্ব বিলোপ হয়ে উহা খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
(খ)ভূমি মালিক সরকারের নিকট তার জমি সমর্পন করলে উহা খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
(গ)ভূমি মালিক বাড়িঘর ত্যাগ করে চলে যা্ওয়া এবং ৩ বছর যাবত জমি অনাবাদী রাখা, খাজনাদি না দিলে উহা খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।
৬। ভূমি কর পরিশোধ না করায় সাটির্ফিকেট কেসে সরকার কর্তৃক নিলাম ক্রয়কৃত জমি খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে।(ধারা১৩৯)
৭।সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণের ফলে ব্যক্তির ভূমি মালিকানা বিলুপ্ত হয় এবং যার অনুকুলে অধিগ্রহণ করে হস্তান্তর করা হয় তার মালিকানা অর্জিত হয়।
প্রশ্ন: ১ অভিভাবকত্ব কি ?
উত্তর : অভিভাবকত্ব হলো নিজের দেখাশোনা বা পরিচালনা করতে অক্ষম এমন কোন ব্যক্তিকে তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা বা অধিকার। সাধারণত শিশু, নির্বোধ ও মানসিক প্রতিবন্ধীর জন্য অভিভাবক প্রয়োজন।
প্রশ্ন. ২.মুসলিম আইন অনুযায়ী পিতার অবর্তমানে সন্তানের অভিভাবক কে?
উত্তর. মুসলিম আইন অনুযায়ী পিতার অবর্তমানে সন্তানের অভিভাবক কে হবেন তা নির্দিষ্ট করা হয় নি। তবে পিতার অবর্তমানে মাতা তাহার আইনসম্মত জিম্মাদার হবেন। কোন নাবালকের সম্পত্তি ও শরীর রক্ষায় অভিভাবকের প্রশ্ন উত্থাপিত হলে উপযুক্ত আদালত অভিভাবক নিয়োগ করবেন। এই অভিভাবক আদালত ও আইনানুযায়ী অভিভাবকত্ব পরিচালনা করবেন।
প্রশ্ন. ৩.পিতার মৃত্যু বা অবর্তমানে মা যদি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তাহলে তিনি কি শিশুর অধিকার হারাবেন?
উত্তর.না,শুধুমাত্র বিবাহের কারণে মাতা শিশুর অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। এক্ষেত্রে বিষয়টি আদালতে গেলে আদালত বিবেচনা করবেন যে, শিশুর কল্যাণ কোথায় হবে। যেখানে শিশুর হেফাজত ও কল্যাণ হবে আদালত সেই মতে আদেশ প্রদান করবেন।
প্রশ্ন. ৪.পারিবারিক আদালতে অভিভাবকত্ব বিষয়ে কোন ধর্মের মানুষ মামলা দায়ের করতে পারবেন?
উত্তর. ১৯৮৫ সালে গঠিত পারিবারিক আদালতে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান সহ সকল ধর্মের নাগরিকগণ সন্তানের অভিভাবকত্ব বিষয়ে মামলা করতে পারবেন।
প্রশ্ন. ৫. নাবালক সন্তানের সম্পত্তি কি বিক্রি করা যায়?
উত্তর. নাবালক সন্তানের সম্পত্তি আইনে উল্লেখিত কারণে বিক্রি করা যায় ।
যেমন:
১। উক্ত সন্তানের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানসহ মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য তার অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি অথবা বন্ধক দিতে পারেন।
২।।নাবালকের ভরণপোষণ, উইলের দাবী, ঋণ, ভূমিকর পরিশোধ ইত্যাদির জন্য একজন আইনগত অভিভাবক নিচের এক বা একাধিক কারণে স্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করতে পারেন।
১। ক্রেতা দ্বিগুন দাম দিতে প্রস্তুত
২। স্থাবর সম্পত্তিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে,
৩। সম্পত্তিটি রক্ষণাবেক্ষণে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে।
যদি আদালত কর্তৃক অভিভাবক নিয়োগ হয়ে থাকে তাহলে আদালতের অনুমতি ছাড়া কোন সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না।
রেজিষ্ট্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪
(১) কোন সম্পত্তির মালিক মৃত্যুবরণ করলে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার রেখে যাওয়া সম্পত্তি তার ওয়ারিশদের মধ্যে রেজিষ্ট্রেশন (সংশোধন) আইনের ১৭(১) ধারার বিধান অনুসারে বাটোয়ারা বা আপোস-বন্টননামা রেজিস্ট্রি করতে হবে।
(২) স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় দলিল রেজিস্ট্রেশন (সংশোধণ) আইনের ১৭এ (১) ধারার বিধান অনুসারে অবশ্রই লিখিত এবং রেজিস্ট্রিকৃত হতে হবে।
(৩) বিক্রয় চুক্তি/বায়না চুক্তি সম্পাদনের তারিখ হতে ৩০ দিনের মধ্যে চুক্তিপত্রটি রেজিস্ট্রির জন্য দাখিল করতে হবে {ধারা ১৭এ (২)।
(৪) প্রতিটি হস্তান্তর দলিল অবশ্যই রেজিস্ট্রি করতে হবে, রেজিস্ট্রি দলিলে বিক্রীত সম্পত্তির পূর্ণ বিবরণ এবং বিক্রয়ের প্রকৃতি বর্ণনা করতে হবে। {ধারা ২২এ(১)।
(৫) প্রতিটি দলিলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় পক্ষের ছবি পেষ্ট করে সংযুক্ত করতে হবে, উক্ত ছবি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর/বাম বৃদ্ধাঙ্গুলীর টিপসইযুক্ত হবে {ধারা ২২এ(২)।
(৬) সরকার এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে (দলিলের/চুক্তিপত্রের) নির্ধারিত ফরমেট জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবেন {ধারা ২২এ (৩)।
(৭) দলিল সম্পাদনের ৩ মাসের মধ্যে তা রেজিষ্ট্রির জন্য দলিল করতে হবে (যা পূর্বে ছিল ৪ মাস (ধারা ২৩)।
তামাদি (সংশোধন) আইন ২০০৪
তামাদি (সংশোধন) আইন ২০০৪ এর বিধান অনুসারে এ আইনের প্রথম সিডিউল ১ মোতাবেক বায়না চুক্তি বলবৎ হওয়ার পর তা ১ বৎসর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে অর্থাৎ পূর্বে যেখানে বায়না চুক্তি আদালতের মাধ্যমে বলবৎ করার জন্য ৩ বৎসর পর্যন্ত সময় পাওয়া
যেত এখন সেখানে ১ বৎসর সময় পাওয়া যাবে। ১ বৎসর পর এরূপ চুক্তি আদালতের মাধ্যমে আর বলবৎ করা যাবে না।
নামজারি আবেদনের পদ্ধতি:
যেভাবে পূর্ণাঙ্গ আবেদন করবেন তা ধারাবাহিকভাবে নিম্নে বর্ণণা দেয়া হল:
১. আবেদন ফরমের সকল তথ্য যথাযথভাবে পূরণ করবেন। বিএস খতিয়ান নম্বর বা বিএস দাগ নম্বর জানা না থাকলে আপনার সাথে যে খতিয়ানের উপরে লেখা আছে তা দেখে পূরণ করুন। আবেদন পূরণ হয়ে গেলে নীচে আপনার স্বাক্ষর এবং অবশ্যই আবেদনকারীর প্রকৃত মোবাইল নম্বর (যেখানে পরবর্তীতে আপনার মেসেজ যাবে) তা উল্লেখ করুন। এবার আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবিটি আবেদনপত্রের উপর সংযুক্ত করুন এবং অন্য সকল কাগজপত্র একত্রে সংযুক্ত করে হেল্পডেস্ক বা সেবাকেন্দ্রে জমা দিল। সেখানে আপনাকে একটি রশিদ দেয়া হবে এবং পরবর্তী তারিখগুলি জানিয়ে হবে।
আবেদন ফরম ও নামজারি সংক্রান্ত নির্দেশিকা (নামজারি বিষয়ে সহজ ধারণার জন্য) ডাউনলোড করতে নীচের লিংকে ক্লিক করুন:
আবেদন ফরম ও নির্দেশিকা ফরম-
২. যদি এতেও আপনার কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে আমাদের হেল্পডেস্কে আসুন, সেখানে সকল প্রকার ফরম্, কোর্ট ফি (20 টাকা) সহ মাত্র 40 টাকায় প্রদান করা হয়। আপনার কাগজপত্র সঠিক আছে কীনা তাও প্রাথমিকভাবে যাচাই করা হবে। [আমাদের ফ্রন্টডেস্কের কর্মচারীদের সম্পর্কে ওয়েবসাইটে তথ্য ইতোমধ্যেই দেয়া হয়েছে। আপনার দাখিলকৃত আবেদন পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র নিকট উপস্থাপন করা হবে এবং পরে তা সংশ্লিষ্ট ভূমি-সহকারী কর্মকর্তা (তহসিলদার নামে অধিক পরিচিত) নিকট প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য পাঠানো হবে। ভূমি-সহকারী কর্মকর্তার নিকট আপনার আবেদন পাঠানো হলে আপনাকে SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে। উক্ত SMS পাবার পর আপনি ভূমি-সহকারী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করবেন।
৩. ভূমি-সহকারী কর্মকর্তা (ভূসক)’র নিকট আপনার আবেদন প্রেরণের ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন এসি ল্যান্ড অফিসে দাখিলের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আপনি/আপনার উপযুক্ত প্রতিনিধিকে আপনার আবেদনে যেসব কাগজপত্র দাখিল করেছিলেন তার মূলকপি ভূসকের নিকট প্রদর্শনের জন্য এবং বকেয়া ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য যেতে হবে। উল্লেখ্য, ভূমি উন্নয়ন কর বকেয়া থাকলে বর্তমানে কোন নামজারি করা হয় না।
৪. ভূসক কর্তৃক আপনার সকল কাগজপত্র যাচাইয়ের পর তিনি একটি প্রতিবেদনসহ এসি ল্যান্ড অফিসে প্রেরণ করবেন। এ পর্যায়ে SMS এর মাধ্যমে আপনাকে জানানো হবে কখন আপনার আবেদন এসি ল্যান্ড অফিসে পৌঁছেছে। এ পর্যায়ে আপনাকে আবেদন প্রাথমিকভাবে যথার্থ পাওয়া গেলে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট পক্ষদেরকে নিয়ে শুনানীর জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়। শুনানীর দিন কোন আপত্তি না পাওয়া গেলে সর্বশেষে তা এসি ল্যান্ডের নিকট চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয়। ভূসকের নিকট হতে এসি ল্যান্ড অফিসে নামজারির নথি আসার পর সর্বোচ্চ ২০ কার্যদিবসের মধ্যে আপনার আবেদন অনুমোদন (যথার্থ থাকলে)/ খারিজ (যৌক্তিক কারণে) হবে যা আপনাকে SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে।
৫. আপনার নামজারির আবেদন চূড়ান্ত অনুমোদনের পর খতিয়ান প্রস্তুতের জন্য ২ দিন সময় লাগে। কারণ এ পর্যায়ে রেকর্ড হতে অনুমোদিত হিসাব অনুযায়ী জমি কর্তন করা হয় এবং প্রস্তুতকৃত খতিয়ান স্বাক্ষর করার জন্য উপস্থাপন করা হয়। এই পর্যায়ে আপনাকে এসি ল্যান্ড অফিসে যোগাযোগ করে ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রশিদ) বা সহজ কথায় নামজারি ফি বাবদ ২৪৫/- পরিশোধ করে খতিয়ান সংগ্রহ করতে হবে।
এভাবেই আপনার নামজারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আশা করি বিষয়টি খুব কঠিন মনে হয় নি।
বিশেষদ্রষ্টব্য
• উপরোক্ত নামজারি প্রক্রিয়াটির প্রতিটি পদক্ষেপ অনুযায়ীই বেশিরভাগ (প্রায় ৯০%) নামজারি মামলা সম্পন্ন করা হয়। তবে কোন কোন নামজারি মামলা প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ/আপত্তি/দখল/দলিল/ওয়ারিশগণদের মধ্যে বন্টন সংক্রান্ত সমস্যা ইত্যাদির কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন সম্ভব না-ও হতে পারে। এসব জটিলতার কারণে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার বাইরে এসি (ল্যান্ড) এর নির্দেশনা অনুযায়ী সম্পন্ন হয়ে থাকে।
• একটি নামজারি প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য মহানগরের ক্ষেত্রে ৬০ (ষাট) কার্যদিবস সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রয়েছে।
• নামজারির ক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের হেল্পডেস্ক (সেবাকেন্দ্র) হতে সর্বমোট 40 টাকায় সকল ফর্ম (কোর্ট ফি সহ) পাওয়া যায়। কাজেই এজন্য বাইরে অন্যদের নিকট হতে বেশি দামে ফর্ম বা কোর্ট ফি না কিনে এসি ল্যান্ড অফিস হতে নেয়াটাই বেশি সুবিধাজনক।
• নামজারি অনুমোদন হয়ে গেলে খতিয়ান গ্রহনের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি হল সর্বমোট ২৪৫/- টাকা।
• কোন প্রকার দালাল/ব্রোকার/মুন্সী ব্যতিত আপনি নিজেই নামজারির আবেদন করুন। প্রয়োজনে সরাসরি এসি ল্যান্ডের সাথেই কথা বলুন।
Pay Order
আজকে একজনকে পে-অর্ডার বিষয়ে কিছু আলাপ করতে শুনলাম। শুনে আমার মনে কিছু প্রশ্ন আসলো, কিন্তু উত্তর জানা নাই।
সাধারনত টাকা জমা দেবার পর পে-অর্ডার (চেক) পাওয়া যায়। যাকে টাকা দেয়া হবে (গ্রাহকের) তার নাম ও ব্যাংক একাউন্ট নম্বর পে-অর্ডারে উল্লেখ থাকে। গ্রাহক পে-অর্ডারটি তার একাউন্টে জমা দেবার কতক্ষন পর টাকা তার একাউন্টে টাকা জমা হবে?
১) যদি একই ব্যাংক হয়:- কোন দাতা সোনালী ব্যংক বনানী শাখা থেকে ১ লক্ষ টাকার পে-অর্ডার তৈরি করে গ্রহীতাকে দিলেন। গ্রহীতা সেই পে-অর্ডার তার যাত্রাবাড়ী সোনালী ব্যংক শাখা্য় তার একাউন্টে জমা করলেন। কতক্ষন পর গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা হবে?
২) যদি দুটি ভিন্ন ব্যাংক হয়:– কোন দাতা সোনালী ব্যংক বনানী শাখা থেকে ১ লক্ষ টাকার পে-অর্ডার তৈরি করে গ্রহীতাকে দিলেন। গ্রহীতা সেই পে-অর্ডার তার যাত্রাবাড়ী প্রাইম ব্যংক শাখা্য় তার একাউন্টে জমা করলেন। কতক্ষন পর গ্রাহকের একাউন্টে টাকা জমা হবে?
৩) ডিসঅনার: দাতা পে- চেক গ্রাহক কে দিয়েছেন। কোন কারনে দাতা অসন্তুষ্ট হলেন, ভাবলেন যে, পে-অর্ডারের টাকা যাতে গ্রাহক না পায়, এখন দাতা কি কোনভাবে যে পে-অর্ডার চেক দিয়ে দিয়েছেন তা কি কোনভাবে আটকাতে পারবেন/ তিনি কি ব্যংক-কে অনুরোধ করে তার প্রদানকৃত পে-অর্ডারটি যাতে গ্রহিতা নগদায়ন করতে না পারে সে জন্য অনুরোধ করতে পারেন?? পে-অর্ডার চেক কি ডিসঅনার করা যায়???
যারা এ বিষয়ে জানেন তারা দয়া করে জানান।
আমি যতদূর জানি মানি ট্রান্সফার হইতে টাইম লাগে । যারা এই ধরণের লেনদেন করেন তারা আরও ভাল বলতে পারবে ।
দুইটা ভিন্ন সরকারী ব্যাংকের মধ্যে পে অর্ডার করা যায় বলে মনে হয় না । বেসরকারীগুলোতে চার্জ দিতে হয় ।
ডিসঅনারের বিষয়টা আমি জানিনা ।
আমি যতদূর জানি মানি ট্রান্সফার হইতে টাইম লাগে । মিনিমাম দুইতিনদিন।
বলেছেন: প্রথমে বলে নেই- শব্দটি শুধু পে- অর্ডার, পে- অর্ডার চেক না। এখন মূল প্রশ্নে আসি।
যদি পে- অর্ডার ইস্যুকারী ব্যাংক ও গ্রাহকের একাউন্ট একই বাঙ্কের ভিন্ন শাখায় হয় তবে- অনলাইন বাঙ্কগুলো গ্রাহক পে- অর্ডার জমা দেওয়ার সাথে সাথেই পে করতে পারে। আর ব্যাঙ্ক যদি অনলাইন না হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাংক চাইলে ফোনের মাধ্যমে ইস্যুকারী ব্যাংক থেকে নিশ্চিত হওয়ার পর পে করতে পাড়েন। ফোন না করলে তাঁরা advice (ব্যাংকিং টার্ম) আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন এবং টাকা জমা করবেন।
আর গ্রাহক যদি অন্য ব্যাঙ্কে পে- অর্ডারটি জমা করেন, তবে এই ব্যাংকটি টাকা সংগ্রহের জন্য clearing house (যেখানে clearing house বসে, সাধারনত থানা পর্যায়ে, যেখানে একাধিক ব্যাংক আছে, সেখানেই বসে)-এর মাধ্যমে সংগ্রহ করবে। এক্ষেত্রে সরবওচ্চ তিন কার্যদিবস লাগবে। তবে এখন কিছু কিছু ব্যাংক এক দিনের মধ্যেও টাকা গ্রাহকের হিসেবে জমা করে। সেক্ষেত্রে প্রথম ক্লিয়ারিং হাউজ (দিনে দুবার ক্লিয়ারিং হাউজ বসে) বসার পূর্বেই প্রাহক কে তার হিসাবে পে – অর্ডারটি জমা করতে হবে। যেখানে ক্লিয়ারিং হউসে বসে না সেখানে সময় বেশি লাগে, তা দুই দিন থেকে এক মাসও হতে পারে (ডাক বা কুরিয়ার – এর উপর নির্ভর করতে হয়)।
৩ য় প্রশ্নের উত্তর – যদি সবকিছু ঠিক থাকে (যেমন- তারিখ, সিগনেচার, টাকার পরিমান অঙ্কে ও কথায়) তবে পে – অর্ডারের টাকা না দেওয়ার কোন নিয়ম নেই। এটি সাধারনত নগদ টাকা হিসেবে বিবেচিত হয়।
২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে দলিল সম্পাদনের জন্য স্ট্যাম্পের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে পুরনো মূল্যের স্ট্যাম্প দিয়ে দলিল লেখা হলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে ও কোনো রকম আইনগত ভিত্তি থাকবে না। কোন দলিলে কত টাকার স্ট্যাম্প ব্যবহার করতে হবে তা তুলে ধরা হলো:
•অছিয়তনামার কপির জন্য ৩০ টাকার স্ট্যাম্প;
•নকলের কবলা, বন্ড, বণ্টননামা, সার্টিফায়েড কপির দলিলের জন্য ৫০ টাকার স্ট্যাম্প;
•অনুলিপি, খাস-মোক্তারনামা দলিলের জন্য ১০০ টাকার স্ট্যাম্প;
•হলফনামা, বায়নার হলফনামা, হেবার ঘোষণাপত্র, না দাবি পত্র, বাতিলকরণ দলিলের জন্য ২০০ টাকার স্ট্যাম্প;
•চুক্তিনামা দলিল, অঙ্গীকারনামা, বায়নানামার দলিল, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাগ্রিমেন্ট, রিডেম্পশন, সোলেনামা বা আপসনামার দলিলের জন্য ৩০০ টাকার স্ট্যাম্প;
আমমোক্তারনামা দলিল ও সাফকবলা দলিলের জন্য ৪০০ টাকার স্ট্যাম্প;
•তালাকের হলফনামার দলিলের জন্য ৫০০ টাকার স্ট্যাম্প;
• রাজউকের প্লট ও ট্যাক্সের দলিলের জন্য মোট মূল্যের ওপর ২ শতাংশ টাকার সমমানের স্ট্যাম্প;
•ট্রাস্ট ডিড ক্যাপিটাল দলিলের মূল্যের ওপর ২ শতাংশ টাকার সমমানের স্ট্যাম্প;
• অংশীদারি দলিলের জন্য ২ হাজার টাকার স্ট্যাম্প;
• মর্টগেজ বা বন্ধকের দলিল সম্পাদনের ক্ষেত্রে—
ক. ১ টাকা থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ২ হাজার টাকা;
খ. ২০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা;
গ. ১ কোটি ১ টাকার ওপরের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকার ও প্রতি লাখের জন্য ২ শতাংশ হারে মোট টাকার মূল্যমানের স্ট্যাম্প লাগবে।
Comments