মিথ্যা মামলা করলে কাউন্টার মামলা কিভাবে করতে হয় | মিথ্যা মামলা দায়েরের শা


মিথ্যা মামলা করলে কাউন্টার মামলা কিভাবে করতে হয় | মিথ্যা মামলা দায়েরের শাস্তি





মিথ্যা মামলা করলে কাউন্টার মামলা কিভাবে করতে হয়? আজকে এই আর্টিকেলে তা নিয়ে আলোচনা করবো৷


যখন আপনার নামে মিথ্যা মামলা হবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ১৭ ধারা অনুসারে মিথ্যা মামলার জন্য আপনি কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন মিথ্যা মামলা দায়েরকারীর বিরুদ্ধে৷

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ধারা ১৭ তে বলা হয়েছে-


যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে আইনগত মামলা দায়েরের ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না থাকা সত্ত্বেও এই আইনের অধীন কোন ধারা অনুসারে যদি মামলা দায়ের করে থাকে তাহলে তার শাস্তি হবে অনধিক সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন৷

যৌতুকের মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রেও আপনারা যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৬ অনুসারে মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন৷ 

যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৬ বলা হয়েছে-


যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ নাই জানিয়া এই আইনের কোন ধারা অনুসারে মামলা দায়ের করে তাহলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে বা উভয় দ্বন্দ্বে দণ্ডিত হতে পারেন ৷

অন্য কোন আইনের অধীন যদি আপনার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয় সেক্ষেত্রেও আপনি অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে দন্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ২১১ ধারার অধীনে কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন৷

দন্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ২১১ ধারাতে বলা হয়েছে-


যদি কোন ব্যক্তি অন্য কোন ব্যক্তির ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দায়ের করে থাকেন তাহলে তার শাস্তি হতে পারে অনধিক দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন৷ 

যদি এমন হয় যে অভিযোগকারীর দায়ের করা মামলার কারণে উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তির ৭ বছরের বেশি কারাদণ্ড বা যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ডের সাজা হওয়ার আশঙ্কা ছিল সেই ক্ষেত্রে উক্ত মিথ্যা অভিযোগকারী সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন৷

কাউন্টার মামলা কখন দায়ের করবেন?

ইতিমধ্যে আপনার বিরুদ্ধে যদি থানায় মামলা দায়ের করা হয়ে থাকলে সেই ক্ষেত্রে তদন্তের পর আপনার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা হবে৷ চার্জ গঠন করা হলে সে ক্ষেত্রে আপনি মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন৷ 



যদি মামলাটি আদালতে দায়ের করা হয় সেক্ষেত্রেও আপনি কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন৷ 

আদালতে দায়ের করা মামলায় চার্জ গঠন করা হলে সেটা বুঝবেন কিভাবে?


ম্যাজিস্ট্রেট যখন আপনাকে এজলাসে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে, আপনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় আপনি অপরাধগুলো স্বীকার করছেন বা স্বীকার করেছেন না? 

সে ক্ষেত্রে আপনি যখন উত্তর দিবেন আপনি অপরাধী না, আপনি নির্দোষ। সেই ক্ষেত্রে বুঝবেন আপনার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে৷ যখন চার্জ গঠন করা হয়ে যাবে তখন সাক্ষী গ্রহণের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হবে এবং সে সময় আপনি কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন৷ 

মিথ্যা সাক্ষী প্রদানের শাস্তি


কোর্টে অনেকে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে আসেন টাকার বিনিময়ে৷ যদি আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে আদালত মিথ্যা সাক্ষী প্রদানকারী ব্যক্তিকে সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং তদুপরি অর্থদণ্ডেও দন্ডিত করবেন৷ উক্ত মিথ্যা সাক্ষ্য যদি কোন ফাঁসির দণ্ডের মোকদ্দমায় দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে উক্ত মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদানকারীর সাজা ফাঁসি হতে পারে৷




আপনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা চলাকালীন সময় আপনি কাউন্টার মামলা দায়ের করতে পারবেন এতে কোন সমস্যা নেই৷ মামলা দায়ের করা আপনার আইনি অধিকার৷

Comments

Popular posts from this blog

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

একটি ভিত্তিহীন গুজব উড়িয়ে দেওয়া: বাংলাদেশী সাংবাদিকদের ফ্রেঞ্চ ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়নি৷

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন