Skip to main content

বিদেশ বা প্রবাস থেকে কিভাবে তালাক দেয়া যায় জেনে নিন

 

যে বিদেশ থেকে কিভাবে তালাক দেয়া যায়। আজ সে সম্পর্কেই আলোচনা করবো। 

বিদেশ থেকে তালাক দেয়া খুবই ঝামেলাপূর্ণ, সময় সাপেক্ষ ও ব্যয় সাপেক্ষ ব্যাপার। যদি সম্ভব হয় তাহলে সবদেশে এসে তালাক দেয়াই ভালো। তারপরও যাদের দেশে আসা সম্ভব নয় তারা স্ত্রীকে তালাক প্রদান করতে হলে দেশে কোন নিকটাত্মীয় কিংবা বিশ্বস্ত কাউকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করবেন। এই  ক্ষমতাকে আমরা পাওয়ার অব এ্যাটর্নী বা আমমোক্তারনামা বলি। এটি হচ্ছে একটি আইনগত দলিল। সহজ কথায় বলতে গেলে যে দলিল দিয়ে কোনো ব্যক্তিকে অপর কোনো ব্যক্তির পক্ষে হাজির হয়ে যে সকল কার্যাবলী সম্পাদন করার ক্ষমতা দেয়া হয় তাকে আমমোক্তারনামা দলিল বলে। এ ক্ষেত্রে যাকে আমমোক্তার নিয়োগ করা হলো তিনি আপনার পক্ষে দেশে আপনার স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠানো, সালিশ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা, তালাক রেজিষ্ট্রেশন করা ইত্যাদি কার্যাবলি সম্পাদন করবেন। বিদেশ থেকে তালাক দিতে হলে কয়েকটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন কর‍তে হয়। 


প্রথমত দেশে অবস্থিত কোন আইনজীবীর সাথে যোগাযোগ করে আইনজীবীর মাধ্যমে তালাকের নোটিশ এবং আম মোক্তারনামা প্রস্তত করতে হবে। 

এরপর আমমোক্তার নামাটি এবং তালাকের নোটিশটি আপনার কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আমমোক্তার নামাটি আপনার কাছে পৌঁছানোর পর আপনি সেখানে স্বাক্ষর করবেন না এবং তালাকের নোটিশেও আপনি স্বাক্ষর করবেন না। এ কাজটি করতে হবে বিদেশী নোটারী পাবলিক, আদালতের বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট বা বাংলাদেশ দুতাবাসের বাণিজ্যদুত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির সম্মুখে। 

সহজ করে বলতে গেলে মোক্তারনামা বিদেশ থেকে ড্রাফট করে দেশে পাঠানো যায় আবার দেশে কোনো আইনজীবী দিয়েও ইংরেজিতে ড্রাফট করিয়ে বিদেশে আমমোক্তারদাতার কাছে পাঠানো যায়। তবে দেশ থেকে ড্রাফটিং করে বিদেশে পাঠানো ভালো। দ্বিতীয়ত, যে দেশে ফরেন পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদিত হবে সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের কনস্যুলারের সামনে দাতা স্বাক্ষর করবেন এবং কনস্যুলার কর্তৃক তা সত্যায়িত হওয়ার পর আমমোক্তারদাতা তার ক্ষমতা আমমোক্তার গ্রহীতা বা অ্যাটর্নির বরাবরে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবেন। তৃতীয়ত, আমমোক্তার সাহেব ওই পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পাওয়ার পর তা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সহকারী সচিব বা কনস্যুলার থেকে সত্যায়িত করে নেবেন।

এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমমোক্তারনামাটি সত্যায়িত হওয়ার পর তা জেলা প্রশাসকের রাজস্ব কার্যালয়ে জমা দিয়ে ২০০ টাকার স্ট্যাম্প লাগাতে হবে এবং সেখানে আমমোক্তারনামা দলিলের ওপর একটি নাম্বার ও তারিখ পড়বে। 


এরপর আমমোক্তারদাতা ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৭(১) ধারার বিধান অনুযায়ী বিদেশে অবস্থানরত স্বামীর পক্ষে স্ত্রী যে এলাকায় বসবাস করছেন সে এলাকার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান/পৌর মেয়র/সিটি কর্পোরেশন মেয়রকে ওই তালাকের নোটিশ রাষ্ট্রীয় ডাকযোগে এডি সহযোগে প্রেরণ করবেন। সেই সাথে তালাক গ্রহীতাকে উক্ত নোটিশের নকল প্রদান করতে হবে। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে যে, তালাকের নোটিশটি কত সময়ের মধ্যে পাঠাতে হবে। আইনে বলা আছে তখনই/ পরবর্তী সময়ে/ যথাশীঘ্রই সম্ভব। এরপর আপনার তালাকের মেয়াদ শুরু হয়ে যাবে। তার ৯০ দিন পর আপনার তালাকটি কার্যকর হবে।

তবে নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার আগেই যদি তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী অন্য কারও সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে উক্ত বিয়ে অবৈধ বলে গণ্য হবে। কারণ তালাক সম্পূর্ন কার্যকরী না হওয়া পর্যন্ত পক্ষগন আইনসম্মতভাবে স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই থেকে যায়।  এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্বামী তার স্ত্রী কে ভরণপোষণও দিতে বাধ্য।


নির্ধারিত নিয়ম ও সময়ান্তে প্রদত্ত একটি তালাক যদি কার্যকর হয়, তখনই কেবল তা রেজিস্ট্রি করার সুযোগ আসবে। বিদ্যমান আইনের বিধানমতে, মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রি করানো বরের জন্য বাধ্যতামূলক হলেও তালাকের ক্ষেত্রে তা তালাকদাতার ইচ্ছাধীন।

তালাকের নোটিস

Comments

Popular posts from this blog

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918)

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918) Introduction The Ahmedabad Satyagraha of 1918 marks a significant chapter in India's struggle for independence. It was a labor strike initiated by the mill workers in Ahmedabad, Gujarat, demanding an increase in wages. The strike was not just a protest against economic injustice, but it also symbolized the fight against oppressive colonial rule. The term 'Satyagraha' was coined by Mahatma Gandhi, which translates to 'insistence on truth' or 'soul force'. It was a method of non-violent resistance, and the Ahmedabad Satyagraha was one of the early instances where this method was employed in the Indian independence movement. The Satyagraha in Ahmedabad was a turning point as it marked the beginning of Gandhi's active involvement in Indian politics. It was here that Gandhi first introduced his methodology of peaceful resistance and negotiation as a means to achieve political and social change. The event holds histori...

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন

বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সুচিপত্র ভূমিকা পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বছরগুলি (1757-1857) 1857 সালের বিদ্রোহ এবং এর প্রভাব প্রয়াত ঔপনিবেশিক সময়কাল (1858-1947) বঙ্গভঙ্গ (1905) ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত বিভাজন (1947) উপসংহার বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন (1757-1947) পরিচয় বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন 1757 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী বিস্তৃত ছিল। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন দেখা যায় যা এই অঞ্চলে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলার ইতিহাসের জটিলতা এবং ঔপনিবেশিকতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর স্থানকে উপলব্ধি করার জন্য এই ঐতিহাসিক যুগকে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ...

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড সূচিপত্র ভূমিকা অধ্যায় 1: ভাড়াটিয়া হিসেবে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব বুঝুন অধ্যায় 2: বহিষ্করণ ও ভাড়াদারি শেষ অধ্যায় 3: ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা অধ্যায় 4: রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত অধ্যায় 5: আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে ভাড়াটিয়া পরামর্শ দিতে পারে উপসংহার অতিরিক্ত সংস্থান যোগাযোগের তথ্য ভূমিকা ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইন বুঝতে ভাড়াটিয়াদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পূর্ণ গাইডের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের তাদের সম্পত্তি পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা। আপনি একজন অভিজ্ঞ ভাড়াটিয়া হোক বা শুরু করছেন, এই নিবন্ধটি আপনাকে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব, বহিষ্করণ প্রক্রিয়া, ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত, এবং আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে বিশেষজ্ঞ আইনি পরামর্শ দিতে পারে তা ব...