Skip to main content

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন করবেন যেভাবে (খরচসহ)

  হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন করবেন যেভাবে (খরচসহ)



হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২

এই আইনের আগে হিন্দুরা বিবাহ করলেও তার কোন আইনানুগ ভিত্তি তৈরির উপায় ছিল না। এখন অন্তত নিজেদেরকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে প্রমাণ দেওয়ার জন্য হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন কাজে আসবে। একটা আইনি ডকুমেন্ট তৈরির পথ অন্তত তৈরি হল। আসুন কিভাবে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন করবেন, আজ সেই সম্বন্ধে জানবো।
হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২ এর ৩ ধারার ১ উপধারা অনুসারে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং হিন্দু রীতিনীতি তথা শাস্ত্র অনুসারে সম্পাদিত বিবাহ সমূহকে নিবন্ধন করা যাবে। এখানে নিবন্ধন করতেই হবে এই ধরনের বাধ্যবাধকতার পরিবর্তে বলা হয়েছে নিবন্ধন করা যাবে অর্থাৎ আপনি ইচ্ছা করলে নিবন্ধন করতে পারবেন আবার ইচ্ছা অনুযায়ী নিবন্ধন না করে থাকতে পারবে। কেননা উক্ত আইনের ৩ ধারার ২ উপধারায় বলা হয়েছে যে, ৩ ধারার ১ উপধারায় যা কিছু বলা থাকুক না কেন, কোন হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সম্পন্ন হওয়া বিয়ে এই আইনের অধীন যদি নিবন্ধন করা না হয় তাহলে উক্ত বিয়ের বৈধতা ক্ষুণ্ণ হবে না। অর্থাৎ এই আইনের ৩ ধারার ১ উপধারায় বলা হয়েছে, হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সম্পন্ন হওয়ার বিবাহ সমূহ নিবন্ধন করা যাবে, কিন্তু কেউ যদি এই আইনের অধীন উক্ত বিবাহ নিবন্ধন না করে, শুধু হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী সম্পন্ন করে তাহলে উক্ত বিয়ের বৈধতা ক্ষুণ্ণ হবে না। অর্থাৎ নিবন্ধন না করলেও বিয়ের বৈধতা অটুট থাকবে। এখানে নিবন্ধনের চাইতেও হিন্দুশাস্ত্র বা হিন্দু রীতি নীতি অনুসারে সম্পন্ন হওয়াটাকেই বেশী জোর দেওয়া হয়েছে। 

তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে আপনি কেন আপনার বিবাহ নিবন্ধন করবেন?


কেন আপনি আপনার বিবাহটি নিবন্ধন করবেন, এর উত্তর আমরা হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২ এর ৩ ধারার ১ উপধারায় ৪টি শব্দের মাধ্যমে পেয়ে যাচ্ছে। ৩ ধারায় বলা হয়েছে, হিন্দু বিবাহের ‘দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে’ হিন্দু বিবাহ নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করা যাবে। এখানে ‘দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশ্যে’ বলতে আপনি বুঝতে পারছেন কেন একটি হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন করা যেতে পারে বা করা উচিত। হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী আপনার বিয়ে করা বউকে নিয়ে হানিমুনে গেলেন কক্সবাজার। হোটেলে পুলিশ আপনাদের সন্দেহ করল, তখন আপনি ডকুমেন্ট হিসেবে কি দেখাবেন?
হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২ এর ৫ ধারা অনুসারে একুশ (২১) বছরের কম বয়স্ক হিন্দু পুরুষ বা আঠারো (১৮) বছরের কম বয়স্ক হিন্দু নারী কোনমতেই এই আইনের অধীন বিবাহ সম্পন্ন করতে পারবেন না তথা নিবন্ধন করতে পারবেন না। এটা বলা বাহুল্য যে আমাদের রাষ্ট্রীয় আইন অনুসারে এখন পুরুষের জন্য ২১ আর নারীর জন্য ১৮, বিয়ের নূন্যতম বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে; সেটি এই আইনেও অনুসরণ করা হয়েছে। 

এখন প্রশ্ন হচ্ছে কে বা কারা এই নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারবে?

প্রথমত হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২ এর ৬ ধারা অনুসারে যেকোনো পক্ষ অর্থাৎ বিবাহের যে কোন পক্ষ বর বা কনে আবেদন করলে বিবাহ নিবন্ধন করা যাবে।

 নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে কার কাছে?

আবেদন করতে হবে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধকের বরাবর। সরকার সিটি কর্পোরেশন এরিয়ার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় এবং সিটি কর্পোরেশনের বাহিরে প্রত্যেক উপজেলায় একজন করে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক নিয়োগ দিবে। আপনি যদি আপনার বিবাহ নিবন্ধন করতে চান, সেক্ষেত্রে আপনাকে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে আপনার এলাকায় হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক কোথায় রয়েছে, তারপর আপনাকে তার বরাবর আবেদন করতে হবে। তখন তিনি ওনার নিয়মকানুন মেনে আপনাদের বিবাহ নিবন্ধন করে দিবেন। 

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন করতে কত টাকা খরচ হয় বা সরকারি ফি কত?

হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন ফি সম্বন্ধে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২ এর ৭ ধারায় বলা হয়েছে, সরকার সময়ে সময়ে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন ফিস নির্ধারণ করতে পারবেন। এই মুহূর্তে সরকারি ফ্রি হচ্ছে এক হাজার (১০০০/-) টাকা।




Comments

Popular posts from this blog

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918)

Ahmedabad Satyagraha in Gujarat (1918) Introduction The Ahmedabad Satyagraha of 1918 marks a significant chapter in India's struggle for independence. It was a labor strike initiated by the mill workers in Ahmedabad, Gujarat, demanding an increase in wages. The strike was not just a protest against economic injustice, but it also symbolized the fight against oppressive colonial rule. The term 'Satyagraha' was coined by Mahatma Gandhi, which translates to 'insistence on truth' or 'soul force'. It was a method of non-violent resistance, and the Ahmedabad Satyagraha was one of the early instances where this method was employed in the Indian independence movement. The Satyagraha in Ahmedabad was a turning point as it marked the beginning of Gandhi's active involvement in Indian politics. It was here that Gandhi first introduced his methodology of peaceful resistance and negotiation as a means to achieve political and social change. The event holds histori...

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন

বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন সুচিপত্র ভূমিকা পলাশীর যুদ্ধ (১৭৫৭) ব্রিটিশ শাসনের প্রাথমিক বছরগুলি (1757-1857) 1857 সালের বিদ্রোহ এবং এর প্রভাব প্রয়াত ঔপনিবেশিক সময়কাল (1858-1947) বঙ্গভঙ্গ (1905) ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভারত বিভাজন (1947) উপসংহার বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন (1757-1947) পরিচয় বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন 1757 থেকে 1947 সাল পর্যন্ত প্রায় দুই শতাব্দী বিস্তৃত ছিল। এই সময়কালে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তন দেখা যায় যা এই অঞ্চলে স্থায়ী প্রভাব ফেলে। বাংলার ইতিহাসের জটিলতা এবং ঔপনিবেশিকতার বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে এর স্থানকে উপলব্ধি করার জন্য এই ঐতিহাসিক যুগকে বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ...

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড সূচিপত্র ভূমিকা অধ্যায় 1: ভাড়াটিয়া হিসেবে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব বুঝুন অধ্যায় 2: বহিষ্করণ ও ভাড়াদারি শেষ অধ্যায় 3: ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা অধ্যায় 4: রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত অধ্যায় 5: আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে ভাড়াটিয়া পরামর্শ দিতে পারে উপসংহার অতিরিক্ত সংস্থান যোগাযোগের তথ্য ভূমিকা ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইন বুঝতে ভাড়াটিয়াদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পূর্ণ গাইডের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের তাদের সম্পত্তি পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করা। আপনি একজন অভিজ্ঞ ভাড়াটিয়া হোক বা শুরু করছেন, এই নিবন্ধটি আপনাকে আপনার অধিকার ও দায়িত্ব, বহিষ্করণ প্রক্রিয়া, ভাড়া ও নিরাপত্তা জমা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত, এবং আফজাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস কীভাবে বিশেষজ্ঞ আইনি পরামর্শ দিতে পারে তা ব...