স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে অন্যকে বিয়ে করলে আইন কি বলে?
স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে অন্যকে বিয়ে করলে আইন কি বলে।
দণ্ডবিধির ৪৯৩ থেকে ৪৯৮ ধারা পর্যন্ত বিয়ে সংক্রান্ত অপরাধসমূহের সংজ্ঞা ও দণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৪৯৪ ধারা অনুসারে, স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পুনরায় বিয়ে করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উক্ত ধারা মোতাবেক, স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকাবস্থায় পুনরায় বিয়ে করলে, তা সম্পূর্ণ বাতিল বলে গণ্য হবে। এবং এই অপরাধ প্রমাণিত হলে, প্রতারণাকারী স্বামী বা স্ত্রীর ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হতে হবে।
তবে, এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। যদি স্বামী বা স্ত্রী ৭ বছর পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকেন এবং জীবিত আছে মর্মে কোন তথ্য না পাওয়া যায় এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় বিয়ে করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
এছাড়া, কোন স্বামী বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগণের অনুমতি নিয়ে বিশেষ কোন কারণ দেখিয়ে বিশেষ কোন পরিস্থিতিতে সালিশি পরিষদের নিকট আবেদন করলে, সালিশই পরিষদ তা আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে প্রতারণার মাধ্যমে যদি পুনরায় বিয়ে করে, যাচাই সাপেক্ষে পরবর্তী বিয়ের অনুমতি দিতে পারে। সেক্ষেত্রে পুনরায় বিয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে প্রতারণার মাধ্যমে যদি পুনরায় বিয়ে করে, তবে যাকে প্রতারণা করে বিয়ে করা হলো, তিনি অভিযোগ করলে তা ৪৯৫ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
আবার কেউ জেনে শুনে, অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করলে উক্ত বিয়ে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা মোতাবেক সম্পূর্ণ বাতিল হবে। এক্ষেত্রে, তা দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা মোতাবেক ব্যভিচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অপরাধ প্রমাণ হলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে।এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সাধারণত: ডিভোর্স কার্যকর হতে ৩ মাস সময় লাগে। তাই শুধু ডিভোর্স দিলেই হবে না । ডিভোর্স কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত পুনরায় বিয়ে করার সুযোগ নেই ।
মামলা কোথায় করবেন?
বিয়ে সংক্রান্ত অপরাধসমূহের শিকার হলে,সরাসরি আদালতে মামলা করতে হবে। এক্ষেত্রে, মামলার প্রমাণ হিসেবে, বিয়ের কাবিননামা ও অন্যান্য প্রমাণাদি সাথে জমা দিতে হবে এবং আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে।মামলা চালানোর সামর্থ না থাকলে, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের নিকট আবেদন করতে হবে ।
Comments