ছোটবেলায় যখন ক্রিকেট, ফুটবল বিশ্বকাপ দেখতে বসতাম আর অবাক হয়ে ভাবতাম এই বাচ্চাগুলো খেলোয়াড়দের সাথে কেন? প্রথম শৈশবে যখন এই জটিল প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, তখন মনে মনে এই সমাধান বের করসি যে এই বাচ্চাগুলো খেলোয়াড়দের সন্তান তাই সাথে নিয়ে যায়। এরপর একদিন দেখি অবিবাহিত খেলোয়াড়ও তো খেলে, তার মানে এই ব্যাখ্যা ঠিক না। বড় হয়ে এক লিখায় এর সম্পর্কে পড়েছিলাম।
১৯৯৪ কিংবা ১৯৯৮ বিশ্বকাপেও এই দৃশ্য দেখা যায় নি। সর্বপ্রথম ১৯৯৯ এফ এ কাপের ফাইনালে দেখা যায় খেলোয়াড়দের সাথে এই কোমলমতি অসীম সম্ভাবনার প্রতীক শিশুদের। এদেরকে বলা হয় মাস্কট বা প্লেয়ার ইস্কট বলে।
ছবিঃগুগল, হলুদ গেঞ্জি পড়া প্লেয়ার অফ ইস্কটেরা
এর আগে একটু বলি। জাতিসংঘের একটা শিশুদের অধিকার সংরক্ষণ করার জন্য ইউনিসেফ নামের একটি সংস্থা আছে। সারা বিশ্বব্যাপী তারা সুবিধা ও অধিকার বঞ্চিত শিশুদের জন্য লড়াই করে এই ইউনিসেফ। সারা বিশ্বেই তাদের কার্যক্রম বিদ্যমান। ২০০১ সালে ইউনিসেফ শিশুর জন্য হ্যাঁ বলুন একটি প্রোগ্রাম চালু করে। এর অংশ হিসেবেই ফিফা ২০০১ সালে ইউনিসেফ এর কার্যক্রম এ সংহতি প্রকাশ করে এরকম মাস্কট অথবা প্লেয়ার অফ ইস্কট প্রথা চালু করে।
২০০২ ফুটবল বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত বাধ্যতামূলক এই মাস্কট প্রথা চালু হয়। সারা বিশ্বকে শিশুদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করতে ফিফা এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তটি নেয় যার ফলশ্রুতিতে অন্যান্য খেলাতেও এখন এই মাস্কট দেখতে পাই। ক্রিকেটেও এর প্রচলন শুরু হয় এরপর থেকে৷ এখন ক্লাব পর্যায়ের খেলাতেও এই প্রথা আছে।
আপনি জেনে অবাক হবে কেবল শিশুরাই মাস্কট হয় তেমনটা না, ২০১৫ সালের মা দিবসে ডাচ ক্লাব অ্যজাক্স অ্যামস্টারডামের খেলোয়াড়রা মায়ের হাত ধরে মাঠে নামে। অন্যদিকে সাও পাওলো দলের খেলোয়াড়েরা একই বছরেই কুকুর নিয়ে মাঠে নামে।কেবলমাত্র কুকুরদের জন্য সচেতনতা বাড়াতেই তারা এই কাজ করে। আবার ২০১৬ সালে আরকেসি ওয়ালবিজেক নামের ডাচ ক্লাব ভ্যালেন্টাইন দিবস উপলক্ষে মাস্কট হিসাবে মডেলদের হাত ধরে মাঠে নামে।(অসমর্থিত সূত্র)[1]
আগামীর অপার সম্ভাবনা নিয়ে জন্মগ্রহণ করা প্রতিটি শিশুর ভবিষ্যৎ হোক সুন্দর, শোভনীয় ও উজ্জ্বল। সকলেই শিশুর প্রতি সদয় হোন আর ছড়িয়ে দিন ভালবাসা। এরাই আগামীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আরেকটা আগামীর কাছে।
Comments