হাজার বছর আগে আজকের এই দিনেই কড়ি ও কোমলের প্রেম আস্বাদন করার লোভে সেদিন বেড়িয়ে পড়েছিলাম দিগন্তের পাণে। আর ঠিক আজকের এই দিনেই আমি প্রেমিকরুপে আবির্ভূত হয়েছিলাম। আমি স্বর্গ দেখেছি, নরক দেখেছি, দেখেছি দেবতা ও মানুষের মেলবন্ধন। তবু পিপাসার্ত মনের ক্ষুধা মেটেনি সেদিনতক। শপথ নিয়েছিলাম- আমার প্রেম চাইই চাই, স্বর্গীয় নিগুড় প্রেম।
প্রেম সাধক বলেই আমার প্রেমসাধনায় ভোগলালসার উদ্দীপকগুলোকে দলাইমলাই করেছি, দেহভোগ কামনাকে দিয়েছি বিসর্জন। মুগ্ধ থেকেছি লাবণ্যময়ী মুখের সৌন্দর্যে। আমার স্থুল রক্তমাংস দেহ ভাবের এক বৃহৎ ভাবের অপার্থিব আলোককে ম্লান করে মন্ডিত হয়েছে অপরুপ মাধুর্যে!
ভরা যৌবন যখন বিশ্ব রঙিন, আমার চোখেও খেলা করেছিল বিশ্বপ্রকৃতির অপার লীলা। আমার হৃদয়াবেগ উদ্দাম নৃত্যে আপ্লুত হয়ে প্রেম অনুরাগে কেলী করেছে বারংবার। আমার প্রেমসংগীতের মোহে অবশেষে মানবাত্মার সে স্বর্গীয় প্রেম নেমে আসে মর্ত্যে, আমার নিউরনের অনুরণনে।
শিউলি মালা খোঁপায় বেঁধে শিশিরকণার আগমনী স্পর্শে আমার শৃঙ্খলিত বাহুডোরে বয়ে চলে মুক্তির সুবাতাস। নন্দনের সে ফুলকে কি করে ধূলায় মিশে যেতে দেই? আমি প্রেমসাধক, বোকাতো নই! সেতো আমার দেহভোগের বস্তু নয়, সে আমার তারকাময়ী পবিত্র বিবসনা সৌন্দর্যমূর্তি।
আজ আমি পুর্ণতায় আচ্ছন্ন, আমার মনে সীমাবদ্ধ প্রেমের অতৃপ্তি বেদনা আর নেই। নবপল্লবের মতো হৃদয়ের বিস্মৃত বাসনাগুলি প্রস্ফুটিত করে সে আমাকে দিয়েছে পূর্ণতা, প্রাপ্তির মহাসমুদ্রকে আঁজলাভরে মিটিয়েছে আমার প্রেমতৃষ্ণা। ধন্য তুমি হে বালিকা!
শিশিরকণা, তুমি ইন্দ্রিয়জ মিলনের উর্ধ্বে। তুমি ঐশ্বরিক প্রকৃতির সৌন্দর্যে নিজেকে প্রকাশ করে পরমমনোহর কাব্যরুপে আমাকে করেছ আলিঙ্গন। আমি বসন্ত সমীরণে প্রেমসাধনার কাব্য লিখছি আজ। হতে চেয়েছিলাম প্রেমসাধক, অথচ হয়েছি প্রেমকাব্যের লেখক।
আজকের এই দিনেই হাজার বছরের অতৃপ্ত বাসনাকে কড়ি ও কোমলের বিনি সুতোর মালায় গেঁথে সাধক থেকে তুমি আমাকে করেছ প্রেমিক, বিশ্বপ্রেমিক। প্রেমসংগীতের মূর্ছনায় মোহাচ্ছন্ন হোক সকল প্রেমিক, সব সাধকেরা সাধু থাকে রুপান্তরিত হোক প্রেমিকরুপে।
একরাশ পদ্ম-কোরকের ভালবাসা হে বালিকা।
ছবিঃ আমার ক্লিক
Comments