দেশভাগের সময় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ চাইলে কি পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের সাথে থাকতো?

 আপনার প্রশ্নোটি সুন্দর এবং খুব অর্থবহ । এই বিষয়ে আলোচনার জন্য তথ্য উপাত্ত কম । তবে শোনা যায় এঘটনা সত্য । রাজনীতি অনেক জটিল জিনিস । এর পেছনে সামনে , আড়ালে অনেক সত্য থাকে যা কোণদিন সামনে আসেনা । বলা হয় সর্ব শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্ট ব্যটেনের সাথে নেহরু এবং জিন্নাহ উভয়ের ভালো সম্পর্ক ছিল । যেহেতু ভারত ভাগ বা পাক-ভারতের স্বাধীনতা আলোচনার মাধ্যমে নিস্পত্তি হয় । সিমানা কমিশনের মাধ্যমে সিমানা ঠিক হয় ।

এখানে তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রি শ্যামা প্রসাদ কেও অনেকে দায়ি করেন । জিন্নাহ যখন ভারত ভাগ চান তখন মহাত্মা গান্ধী চরম বিরোধিতা করেন , কিন্তু বাংলার নেতা শ্যামা প্রসাদ বাংলা ভাগ চান । ভারত ভাগ , পাকিস্তান দাবি আর বাংলা ভাগ সব এক নয় । লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের নেতাদের মতামত জানতে চাইলে বাংলা ভাগের ব্যাপারে বাংলার নেতাদের মতামত জানতে চান । তখন বাংলা প্রদেশের পরিসদে মোট সদস্য ২২৫। মুসলিম এলাকার সংসদ সদস্য ছিলেন সব মিলিয়ে ১২৪ জন । জাদের মধ্যে হোসেন শহিদ সোহ্রাওয়ারদি ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন । অপরদিকে হিদু এলাকার সদস্য ছিলেন ৯৫ জন , জাদের মধ্যে উদয় চাঁদ , শ্যামা প্রসাদ প্রমুখ ছিলেন । তখন আলচনা মোতাবেক পরিসদে ভোটাভুটি হয় । অধিকাংশ মুসলিম প্রতিনিধি বাংলা ভাগের বিপ ভট প্ক্ষেরদান করেন । বাংলা ভাগের পক্ষে মাত্র ৩৪ ভোট পড়ে । আর বাংলা ভাগের বিপক্ষে ১০৬ ভোট পড়ে । কিন্তু পড়ে দেখা যায় ভটের ফল্কে অগ্রাহ্য করে জিন্নাহ্র মতকে প্রাধান্য দেয়া হয় ।

বিভাজনের এই সময় জিন্নাহ চেয়েছেন পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বেশি সুবিধা । তাই তিনি পাঞ্জাবের অতিরিক্ত ভুখন্ডের বিনিময়ে বাংলার বিষয়ে ছাড় দিয়েছেন , এমন শোনা যায় । এগুলি পর্দার আড়ালের কথা । তবে এর মধ্যে বাস্তবতা হল জিন্নাহ সাহেব জোড়দার ভাবে চাইলে পশ্চিম বঙ্গ পুরাটা না হলেও কোলকাতা পাকিস্তানের ভাগে পরত । কিন্তু কলকাতা পাকিস্তানের ভাগে পরলে অবধারিতভাবে কলকাতা পাকিস্তানের রাজধানি হত । আর কলকাতা পাকিস্তানের রাজধানি হলে বাঙ্গালির দাপট তৈরি হবে যা জিন্নাহ চান নাই । তাই বাংলার ব্যপারে ছাড় দিয়ে জিন্নাহ পাঞ্জাবে বা পাকিস্তানের অন্তরগত পশ্চিম পাঞ্জাবের ভুমির পরিমান বাড়িয়ে নিয়েছেন । পর্দার আড়ালের এই সত্য হয়ত কোনদিন জানা যাবেনা । বা যদি কোনদিন ব্রিটিশ লাইব্রেরি থেকে যদি কোন ডকুমেন্ট বের হয়ে সত্য প্রকাশ পায় । তেমন সম্ভাবনা কম । তাই এটাও ইতিহাসের গভীরে হারিয়ে যাওয়া একটি প্রশ্ন অনেক গুলি যদি, কিন্তু, হয়তোবা হয়েই থাকলো ।

লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের সাথে জিন্নাহ ।

Comments

Popular posts from this blog

ভাড়াটিয়া-ভাড়াদার আইনের জটিলতা পার হওয়া: ভাড়াটিয়াদের জন্য একটি গাইড

একটি ভিত্তিহীন গুজব উড়িয়ে দেওয়া: বাংলাদেশী সাংবাদিকদের ফ্রেঞ্চ ভিসা প্রত্যাখ্যান করা হয়নি৷

অধ্যায় 2: বাংলায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন