আরেকটি নীতি শক্তিশালীকরণ মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস করবে নাকি অর্থনীতিকে চাপিয়ে দেবে?
ভূমিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি পরিবর্তনের ওভারভিউ
জুন ২০২৩ সালে, বাংলাদেশ ব্যাংক তার মুদ্রানীতির দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন করেছিল। মুদ্রা সরবরাহ ভিত্তিক পদ্ধতি থেকে সুদের হার ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা ব্যবস্থায় পরিবর্তন করা হয়েছিল, যা অর্থনীতিতে বিরাজমান স্থায়ী মুদ্রাস্ফীতি পরিচালনা করার জন্য একটি বড় পরিবর্তন ছিল। এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ভারতের সফল বাস্তবায়নের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল, যা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আশাব্যঞ্জক ফলাফল দেখিয়েছিল।
নীতি পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট ও যুক্তি
নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তটি বেশ কয়েকটি কারণে গৃহীত হয়েছিল। প্রধানত, পূর্ববর্তী মুদ্রা সরবরাহ ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অকার্যকর বলে মনে করা হয়েছিল, যা স্থায়ীভাবে উচ্চ ছিল। ৬%-৯% এর মধ্যে সুদের হারের সীমা বজায় রাখা হয়েছিল যাতে টাকা সস্তা থাকে এবং বৃদ্ধি উৎসাহিত হয়, কিন্তু এটি অতিরিক্ত চাহিদা তৈরি করে মুদ্রাস্ফীতি বাড়াতে অবদান রেখেছিল।
সুদের হারের সীমা অপসারণ করে এবং একটি বাজার-চালিত রেফারেন্স হারের সূত্র প্রবর্তন করে, বাংলাদেশ ব্যাংক একটি আরও সংবেদনশীল ও কার্যকর মুদ্রানীতির পরিবেশ তৈরি করার আশা করেছিল। এই পরিবর্তনের ফলে সুদের হার বাজারের পরিস্থিতিকে আরও সঠিকভাবে প্রতিফলিত করতে পারবে এবং এভাবে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে যাতে ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত চাহিদা কমায়।
নীতি পরিবর্তন ও প্রাথমিক ফলাফল
সুদের হারের সীমা অপসারণ
সুদের হারের সীমা অপসারণ, যা ঋণের খরচ কৃত্রিমভাবে কম রেখেছিল, নতুন মুদ্রানীতির দিকনির্দেশনার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ ছিল। ৬% থেকে ৯% এর মধ্যে সীমা বজায় রাখা হয়েছিল, যা কার্যকর মুদ্রানীতির জন্য একটি বড় বাধা হিসেবে দেখা হয়েছিল। টাকা সস্তা রাখার ফলে একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছিল যেখানে মুদ্রাস্ফীতির চাপ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে পারে।
একটি বাজার-চালিত রেফারেন্স হারের সূত্র প্রবর্তন
সীমার পরিবর্তে, একটি নতুন বাজার-চালিত রেফারেন্স হারের সূত্র প্রবর্তন করা হয়েছিল। এই সূত্রটি অর্থনীতি পরিচালনার জন্য একটি আরও নমনীয় ও সংবেদনশীল টুল প্রদান করেছিল। ফলস্বরূপ, সুদের হার বাজারের গতিশীলতার উপর ভিত্তি করে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল।
উদাহরণস্বরূপ, গ্রাহক ঋণের সুদের হার, যা জুন ২০২৩ সালে ৯% ছিল, এক বছরের মধ্যে ১৬% এ উঠেছিল। এই ঝুঁকিপূর্ণ বৃদ্ধির অর্থ হল ঋণগ্রহীতারা এখন ঋণের জন্য অনেক বেশি পরিশোধ করছেন, প্রতি শতকের জন্য টাকা ৭ বেশি পরিশোধ করছেন। এটি ঋণের খরচ বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত চাহিদা কমানোর উদ্দেশ্যে নতুন নীতির প্রভাবকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ করে।
অব্যাহত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি
এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের পরেও, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক লক্ষ্যটি অর্জন করা যায়নি। জুন ২০২৪ সালে, মুদ্রাস্ফীতি এখনও ৯% এর উপরে ছিল, যা পূর্ববর্তী বছরের মতোই। বার্ষিকীকৃত গড় ব্যবহারকারী মূল্য সূচক (CPI) ২০২৩-২৪ অর্থবছরের (FY24) জন্য ১৩ বছরের সর্বোচ্চ ৯.৭৩% এ পৌঁছেছে, যা সংশোধিত লক্ষ্য ৭.৫% এর চেয়ে অনেক বেশি।
এই অব্যাহত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, নতুন মুদ্রানীতির ব্যবস্থার পরেও, বাংলাদেশের মতো একটি অর্থনীতি পরিচালনার জটিলতাকে উদ্ঘাটন করেছে। এটি মুদ্রানীতির শক্তি ও সীমাবদ্ধতার উপর জোর দিয়েছে।
বাজার দুর্নীতি ও সমন্বয়ের চ্যালেঞ্জ
ফাহমিদা খাতুনের অন্তর্দৃষ্টি
ফাহমিদা খাতুন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক, মুদ্রাস্ফীতিতে বর্তমান মুদ্রানীতির সীমিত প্রভাবের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার মতে, নীতি পরিবর্তনের সময় ও প্রকৃতি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল। ব্যবস্থাগুলি শুধুমাত্র জুলাই ২০২৩ সালে বাস্তবায়িত হয়েছিল, এবং তাদের ফলাফল তাত্ক্ষণিক ছিল না। আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে, তিনি ব্যবস্থাগুলির কার্যকারিতা হ্রাসকারী বাজারের ব্যবস্থাগত ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করেছেন।
ব্যাপক বাজার দুর্নীতি
চিহ্নিত প্রধান সমস্যাগুলির মধ্যে একটি ছিল বাজার দুর্নীতি। বাংলাদেশে, মূল্য নির্ধারণ কার্টেলগুলি প্রায়শই মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে, যাতে পণ্যের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়, যদিও তারা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয় এবং পর্যাপ্ত সরবরাহে থাকে। এই ধরনের বাজার বিকৃতি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োগ করা মুদ্রানীতির ব্যবস্থাগুলির প্রভাবকে গুরুত্বপূর্ণভাবে সীমিত করে।
উদাহরণস্বরূপ, সুদের হার বৃদ্ধির ফলে ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল হলেও, যদি কার্টেলগুলি মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে, তাহলে উদ্দেশ্যমূলক চাহিদা হ্রাস হতে পারে না। গ্রাহকরা এখনও উচ্চ মূল্যের সম্মুখীন হবেন, যা বাস্তব সরবরাহ ও চাহিদার গতিশীলতার পরিবর্তে এই কার্টেলগুলি দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম মুদ্রাস্ফীতি দ্বারা চালিত হবে।
সমন্বিত আর্থিক ও মুদ্রানীতির প্রয়োজনীয়তা
ফাহমিদা আরও জোর দিয়েছেন আর্থিক ও মুদ্রানীতির মধ্যে ভালো সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তার উপর। মুদ্রানীতি একাই, বিশেষ করে ব্যাপক বাজার দুর্নীতির পরিবেশে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হতে পারে না। আর্থিক নীতির ব্যবস্থা, যেমন সরকারী ব্যয় কমানো এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ উন্নত করা, মুদ্রানীতির প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেছেন যে সরকারের প্রশাসনিক ব্যয় এখনও উচ্চ ছিল, যা মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়িয়েছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে, শুধুমাত্র মুদ্রানীতি শক্তিশালী করা পর্যাপ্ত নয়। এটি আর্থিক ব্যবস্থার দ্বারা সমর্থিত হতে হবে যা মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণগুলিকে সমাধান করে, যেমন উচ্চ সরকারী ব্যয় এবং অকার্যকর বাজার নিয়ন্ত্রণ।
বিনিময় ও সুদের হার বৃদ্ধির প্রভাব
অর্থনীতিবিদ জাইদ বখতের বিশ্লেষণ
অর্থনীতিবিদ জাইদ বখত, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের প্রাক্তন গবেষণা পরিচালক, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে না এর আরও বিশ্লেষণ দিয়েছেন। তিনি দুটি প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন: বিনিময়ের হার বৃদ্ধি এবং সুদের হার বৃদ্ধি।
বিনিময়ের হার বৃদ্ধির প্রভাব
অফিসিয়াল ডলার হারের বৃদ্ধি টাকা ১১০ থেকে টাকা ১১৭ এ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল। এই বৃদ্ধি আমদানি ব্যয়বহুল করেছে, যা সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতিতে অবদান রেখেছে। বাংলাদেশ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের জন্য আমদানির উপর নির্ভর করে, সুতরাং একটি উচ্চ বিনিময়ের হার সরাসরি গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের জন্য উচ্চ ব্যয়ের দিকে নিয়ে যায়।
উচ্চ সুদের হার এবং তাদের অর্থনৈতিক প্রভাব
একইভাবে, সুদের হারের ঝুঁকিপূর্ণ বৃদ্ধির বহুবিধ প্রভাব ছিল। এক পক্ষে, এটি ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল করেছিল, যা অতিরিক্ত চাহিদা কমানো এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে ছিল। তবে, এটি ব্যবসায়িক অর্থায়নও ব্যয়বহুল করেছিল, যা শিল্প উৎপাদনে মন্দা ডেকে এনেছিল। এটি FY24 এর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি বৃদ্ধি ৩.৭৮% এ নেমে এসেছিল, যা প্রথম ত্রৈমাসিকের ৬.০১% থেকে কম।
বিনিময় ও সুদের হার বৃদ্ধির সংমিশ্রণ একটি চ্যালেঞ্জিং অর্থনৈতিক পরিবেশ তৈরি করেছিল। যদিও উদ্দেশ্য ছিল মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, এই ব্যবস্থাগুলি অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ধীর করার অনিচ্ছাকৃত পরিণতিও এনেছিল, বিশেষ করে উৎপাদন খাতে।
মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা
সুদের হার ভিত্তিক নীতিতে পরিবর্তনের পরেও, মুদ্রা সরবরাহ এখনও একটি সমস্যা ছিল। জাইদ বখতের মতে, মুদ্রা সরবরাহ এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল, যা মুদ্রাস্ফীতি ধরে রাখতে পারে। সুদের হার বৃদ্ধি সামগ্রিক মুদ্রা সরবরাহ কমানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না, যা শুধুমাত্র সুদের হারের সামঞ্জস্যের উপর নির্ভর করে মুদ্রাস্ফীতি পরিচালনার সীমাবদ্ধতাকে উদ্ঘাটন করেছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যালোচনা ও উৎপাদন খাতের মন্দা
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণ
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির পর্যালোচনা উৎপাদন খাতের প্রথম অর্ধেক FY24 এ একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্দা চিহ্নিত করেছে। ডেটা দেখায় যে এই মন্দার জন্য বেশ কয়েকটি কারণ ছিল, যার মধ্যে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, ইউএস ডলার সংকটের কারণে আমদানি বিধিনিষেধ এবং সাম্প্রতিক গ্যাস ও বিদ্যুতের ঘাটতি অন্তর্ভুক্ত।
উৎপাদন খাতের বৃদ্ধি
উৎপাদন খাতের বৃদ্ধির হার
উৎপাদন খাত FY24 এর জুলাই-ডিসেম্বরে ৩.৮৬% বৃদ্ধির হার নিবন্ধন করেছে, যা পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় অনেক কম। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের FY24 এর প্রথম অর্ধেকের মুদ্রানীতির বিবৃতি মুদ্রাস্ফীতি পরিচালনা এবং মুদ্রাস্ফীতির আশা স্থির করার জন্য একটি শক্ত মুদ্রানীতির অবস্থান বজায় রাখার উপর জোর দিয়েছিল, অর্থনীতির উৎপাদনশীল খাতে যথেষ্ট ঋণের প্রবাহ নিশ্চিত করে।
Q3FY24 এ পুনরুদ্ধার
এই চ্যালেঞ্জের পরেও, Q3FY24 এ পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখা গেছে। বাংলাদেশ ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক্স (BBS) দ্বারা প্রকাশিত ডেটা অনুসারে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ৬.১২% এ পুনরুদ্ধার করেছে, যা কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের শক্তিশালী পারফরম্যান্স দ্বারা চালিত হয়েছে। Q3FY24 এ শিল্প উৎপাদনের বৃদ্ধি ৭% এ পৌঁছেছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরের একই ত্রৈমাসিকের তুলনায় বেশি।
এই পুনরুদ্ধার শিল্প খাতের একটি পুনরুদ্ধারকে নির্দেশ করেছে, যদিও চলমান চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে এই বৃদ্ধির স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
অর্থনৈতিক ডেটা পুনর্মূল্যায়ন ও প্রভাব
রপ্তানি ডেটা গণনা ত্রুটি
একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (EPB) দ্বারা রপ্তানি ডেটা গণনার একটি বিশাল ত্রুটির উদ্ঘাটন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট ব্যালেন্স নম্বরের পুনর্গণনা দেখায় যে জুলাই-মে ২০২৪ এর জন্য রপ্তানি আয় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার কম ছিল যা EPB দাবি করেছিল।
ডেটা ত্রুটির প্রভাব
এই চমকপ্রদ ত্রুটি পূর্ববর্তী ডেটার উপর ভিত্তি করে সমস্ত অর্থনৈতিক মূল্যায়নের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অর্থনীতিবিদরা দাবি করেছেন যে রপ্তানি ডেটা ত্রুটির কারণে প্রধান অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলি, যেমন রপ্তানি সংখ্যা, সরকারী ঋণ এবং জিডিপি বৃদ্ধির পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর সঠিক রপ্তানি ডেটা এবং খারাপ ঋণের তথ্য প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন, যাতে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়। এই পুনর্মূল্যায়ন নীতিনির্ধারকদের সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এবং প্রধান প্রকল্পগুলি পুনর্মূল্যায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ভবিষ্যত মুদ্রানীতির দিকনির্দেশনা
পরবর্তী মুদ্রানীতি বিবৃতি (MPS)
ভবিষ্যতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইঙ্গিত দিয়েছে যে পরবর্তী মুদ্রানীতি বিবৃতি সম্ভবত একটি সংকোচনমূলক অবস্থান বজায় রাখবে। গভর্নর ইঙ্গিত দিয়েছেন যে নীতিটি নতুন অর্থবছরে (FY25) মুদ্রাস্ফীতি ৭% এর নিচে নামানোর জন্য আর্থিক ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
মুদ্রাস্ফীতি পরিচালনার জন্য সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যালোচনা দেখায় যে FY24 এর পরবর্তী অর্ধেকের জন্য একটি শক্ত মুদ্রানীতির অবস্থান বজায় রাখা বুদ্ধিমান হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি মুদ্রাস্ফীতি পরিচালনা এবং মুদ্রাস্ফীতির আশা স্থির করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছিল, অর্থনীতির উৎপাদনশীল খাতে যথেষ্ট ঋণের প্রবাহ নিশ্চিত কর
করে।
পূর্ববর্তী ব্যবস্থাগুলির কার্যকারিতা
যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুই বছর ধরে সংকোচনমূলক অবস্থানে ছিল এবং এক বছর ধরে সুদের হার ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়িত করেছিল, প্রতি মাসে প্রকাশিত মুদ্রাস্ফীতির সংখ্যাগুলি ইঙ্গিত দিয়েছিল যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সীমিত সাফল্য পাওয়া গেছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছিল যে আরেকটি মুদ্রানীতি শক্তিশালীকরণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কার্যকর হবে কিনা।
উপসংহার
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মের সারাংশ
গত দুই বছরে, বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সিরিজ মুদ্রানীতির ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এই ব্যবস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে সুদের হারের সীমা অপসারণ, একটি বাজার-চালিত রেফারেন্স হারের সূত্র প্রবর্তন এবং একটি শক্ত মুদ্রানীতির অবস্থান বজায় রাখা।
তবে, এই প্রচেষ্টার পরেও, মুদ্রাস্ফীতি অব্যাহত উচ্চ থাকার কারণে, এই সমস্যার জটিল ও বহুমুখী প্রকৃতিকে উদ্ঘাটন করেছে। বাজার দুর্নীতি, উচ্চ সরকারী ব্যয় এবং বিনিময়ের হারের উত্থান-পতন সহ বহিরাগত কারণগুলি মুদ্রানীতির কার্যকারিতাকে সীমিত করেছে।
চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা
বাংলাদেশ ব্যাংক আরেকটি মুদ্রানীতি শক্তিশালীকরণের জন্য প্রস্তুত হয়েছে, এই চ্যালেঞ্জগুলি বিবেচনা করা এবং একটি আরও সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। মুদ্রানীতির ব্যবস্থাগুলিকে আর্থিক নীতির সামঞ্জস্য এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের উন্নতির সাথে সংযুক্ত করা মুদ্রাস্ফীতির সমস্যার জন্য একটি আরও সম্পূর্ণ সমাধান প্রদান করতে পারে।
চূড়ান্ত চিন্তা
ভবিষ্যতের নীতি ব্যবস্থাগুলির কার্যকারিতা মুদ্রাস্ফীতির মূল কারণগুলি সমাধান করার উপর নির্ভর করবে এবং অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে। একটি সন্তুলিত দৃষ্টিভঙ্গি যা তাত্ক্ষণিক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা এবং দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্যগুলিকে একত্রিত করে, বাংলাদেশের মুদ্রানীতির প্রচেষ্টার সাফল্যের জন্য অপরিহার্য হবে।
Comments