বিএনপির নেতা কোথায়? ভোট পেলে আগামীতে প্রধানমন্ত্রী কে হবে?
গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্যই থাকে দেশের জনগনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশের জন্য কাজ করা। আর এজন্য একমাত্র উপায় হচ্ছে নির্বাচন। মানুষের ভোটের মাধ্যমে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে নীতি নির্ধারনের ক্ষমতা লাভ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হচ্ছে রাজনৈতিক দলের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সাম্প্রতিককালে আমরা দেখছি বাংলাদেশের যেকোন নির্বাচনে ছোট-বড় সব দল অংশগ্রহণ করলেও নিজেদের জাতীয়তাবাদী বলে দাবি করা, দুই মেয়াদে সরকার গঠন করা দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন। পৃথিবীতে রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত কোন সংগঠনের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার প্রবণতাটি খুবই বিরল। তবে বিএনপির অতীত কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করলে বোঝা যায় নির্বাচনে অংশ গ্রহন না করার কারন আসলে তাদের অন্ধকার অতীত। তাদের মনে ভয় ঢুকে গিয়েছে যে দেশের মানুষ তাদের বিনা বাক্যব্যয়ে প্রত্যাখ্যান করবে। এই ভয় মোটেই অমূলক নয়। যাদের কোন শীর্ষ নেতৃত্ব নাই, নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলে কোটি টাকা চাঁদা দিতে হয়, দুর্নীতি-জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের দায়ে ছন্নছাড়া যে দলের নেতৃবৃন্দের জীবন, সেই দলকে মানুষ কেন ভোট দেবে? আসুন দেখি এই ভয়ের কারণগুলো কি-
নেতৃত্বশুন্য দল
বর্তমানে বিএনপি'র পরিচালনায় কোন নেতা নেই। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া 'জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট' এর অর্থ আত্মসাতের দায়ে জেল খাটছে। আওয়ামী লীগ সরকার যদিও তার বয়স ও অসুস্থতা বিবেচনা করে জেলখানার বদলে নিজের বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। তার ছেলে তারেক রহমান থাকে লন্ডনে। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মামলা থেকে ছেলেকে বাঁচাতে খালেদা আপ্রান চেষ্টা করেছিল। পরে আর কোনদিন বাংলাদেশে রাজনীতি করবেনা এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অথচ এখন গুহানিবাসী সন্ত্রাসীদের মতো ভিডিও বার্তায় ভুলভাল ইতিহাস দিয়ে ভরপুর বড় বড় বক্তব্য দিয়ে নিজের অবস্থানের জানান দেয় প্রায়ই। এমন একটি নেতৃত্বহীন দলকে মানুষ কোন ভরসায় ভোট দেবে? দলই চালাতে পারে না, দেশ কিভাবে চালাবে?
এতিমের অর্থ আত্মসাৎ
এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে বিদেশ থেকে পাঠানো ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান। আদালত এজন্য খালেদা জিয়াকে ৫ বছর ও তারেক রহমানকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করে। প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিলে ইউনাইটেড সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে ১২.৫৫ লাখ মার্কিন ডলার আসে যা বাংলাদেশি টাকায় তৎকালীন ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ২১৬ টাকা। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ১৯৯১ সালের ৯ জুন থেকে ১৯৯৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ দেশের প্রতিষ্ঠিত কোনো এতিমখানায় না দিয়ে অস্তিত্ববিহীন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করে। অথচ কোনো নীতিমালা তৈরি করা হয়নি, করা হয়নি কোনো জবাবদিহির ব্যবস্থাও। অথচ খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল থেকে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা অস্তিত্ববিহীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে পাঠান। পরে ওই টাকা আত্মসাৎ করেন।
দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবরকে ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক প্রধান পরেশ বড়ুয়াকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। এই বিপুল পরিমান অস্ত্র আনা হয়েছিল উলফার জন্যই, এ তথ্য সাক্ষী ও আসামীদের জবানবন্দিতে প্রমাণ হয়। ডিজিএফআইয়ের তত্কালীন মহাপরিচালক অস্ত্র পাচারের কথা খালেদা জিয়াকে জানার পরেও তিনি কোন পদক্ষেপ নেননি।
অর্থপাচার ও দুর্নীতি
বিএনপি সরকারের ১৯৯১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত শাসনামলে দেশে আনুমানিক দুর্নীতির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা।২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে দেশে আনুমানিক দুর্নীতির পরিমাণ ৪২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।বিশ্বের কোন দেশ পরপর ৫ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি, যা পেরেছে শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার ২০০১ থেকে ২০০৬ এর শাসনামল।
মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে ঘুষ ও মানি লন্ডারিং নিয়ে তদন্ত করেছে এবং বাংলাদেশের আদালতে তাদের বিরুদ্ধে এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন এফবিআইয়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি। এফবিআইয়ের তদন্তে উঠে এসেছে যে, তারেক ও মামুন তাদের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নির্মান কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর পরিচালক এবং চীনের হারবিন ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন এর এদেশীয় এজেন্ট খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে ৭ লাখ মার্কিন ডলার ঘুষ নিয়েছিল।
২০১১ সালের ২৩ জুন কানাডার একটি আদালত বেগম জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তার সরকারের জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসাইনের দুর্নীতি মামলার বিষয়ে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়েছিল। নাইকোর এজেন্ট কাশিম শরীফের হাত থেকে ঢাকা ক্লাবের সভাপতি হয়ে এই টাকা পৌছে যায় তারেক রহমান ও তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের কাছে। এই ব্যাপারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন -এফবিআই’য়ের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি ডেবরা লাপ্রিভেট গ্রিফিথ তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দেন।
জঙ্গিদের সাথে নিয়ে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা
২০০৪ সালের একুশে আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এই হামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমান সহ ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন এবং ৩শ'র বেশি মানুষ আহত হন। এই হামলার পরিকল্পনায় তারেক রহমানের জড়িত থাকার প্রমাণ সুস্পষ্ট এবং আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করেছে। এই মামলার মূল আসামি উগ্র ইসলামপন্থী দল হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান। তার স্বীকারোক্তির মাধ্যমেই গ্রেনেড হামলা মামলায় মোড় ঘুরে যায়। মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির পর তারেক রহমান এবং লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেককেই এ মামলার আসামী করা হয়। জজ মিয়া নাটক সাজিয়েও পার পায়নি তারা।
জঙ্গিবাদের উত্থান
২০০৫ সালে দেশের ৬৩ জেলার ৫০০টি স্থানে একযোগে বোমা হামলা ঘটায় জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে এমন আরো অনেক জঙ্গি সংগঠন। শোলাকিয়া ঈদগাহেও বোমা হামলা করে এই জঙ্গি গোষ্ঠী, সিলেটে ব্রিটিশ হাই কমিশনারের ওপর হামলা হয় জোট সরকারের আমলে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে সারা দেশে পেট্রোল বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগের ফলে ২০১৪-১৫ অর্থবছরেই শুধু ক্ষতি হয় ১৭,১৫০ কোটি টাকার।
নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা
২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের বিরোধিতা করে বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু হয়। তারা সেসময় হাজার হাজার যানবাহন ভাঙচুর করে সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওই ঘটনায় তাদের পেট্রোল বোমা, হাতে বানানো বোমা এবং অন্যান্য সহিংসতায় ২০ জন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। নির্বাচনের দিন একজন প্রিসাইডিং অফিসারসহ মোট ২৬ জনকে হত্যা করে এবং সারাদেশে ৫৮২টি স্কুলে ভোটকেন্দ্রে আগুন লাগায় বিএনপি-জামায়াতপন্থীরা। এসব বাধা বিপত্তি থাকা সত্ত্বেও ওইদিন জনগণ গণতন্ত্রকে বজায় রেখে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।
২০১৫ সালের ৪ঠা জানুয়ারি নির্বাচনের ১ বছর পূর্তির দিন আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে সন্ত্রাসের রাজত্ব শুরু করতে চায় বিএনপি-জামায়াত জোট। ওই সময় ২৩১ জনকে হত্যা করে তারা। যাদের বেশিরভাগই পেট্রোল বোমা এবং আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যায়। ওই ঘটনায় আহত হন আরো ১ হাজার ১শ’ ৮০ জন। সেসময় ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি এবং ৮টি যাত্রীবাহী নৌযানে আগুন লাগিয়ে হামলা চালায় তারা। ওই সময় হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয় সরকারি অফিসগুলো। আর বিএনপি-জামায়াতের ভাঙচুর এবং আগুনে পুড়ে ৬টি ভূমি অফিসসহ ৭০টি সরকারি কার্যালয়ের যাবতীয় দলিলপত্র নষ্ট হয়ে যায়। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির মতে, হরতাল-অবরোধের প্রতিদিন দেশের ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (অথবা ১৯২.৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বা জিডিপি’র ০.২ শতাংশ ক্ষতি হয়। এর অর্থ ২০১৩, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধে দেশের ১.৫৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ ক্ষয় হয়। তবে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় যে সম্পদের ক্ষতি হয়েছে তা এরমধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়। তার পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঘিরে সহিংসতা
২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াত-শিবির সমর্থকরা ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দেশের অভ্যন্তরে ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। এ কারণেই ২০১৩ সালে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক সহিংসতার ৪১৯টি প্রধান ঘটনায় ৪৯২ জন নিহত হন এবং ২ হাজার ২০০ জন আহত হন।
সংখ্যালঘুদের নির্যাতন
২০০১ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি এবং জামায়াত জোট হিন্দুদের ওপর যে আক্রমণ করে তার বিভিন্ন খবরে ও প্রতিবেদনে অনেকবার উঠে এসেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের [Amnesty International] প্রতিবেদন মতে, “২০০১ সালের ১লা অক্টোবর বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগকে ভোট না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়, সেসময় বিএনপি জোটের হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিলো বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, যশোর, কুমিল্লা ও নরসিংদী। ওই সময় আক্রমণকারীরা হিন্দুদের বাড়িতে ঢুকে তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর, তাদের সম্পত্তি লুটপাট, দেশত্যাগে বাধ্য করা এবং অনেক হিন্দু নারীদের ধর্ষণও করে।” বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত বিচার বিভাগের তদন্ত অনুযায়ী, দেখা গেছে (বিএনপি) এবং জামায়াতের ২৬ হাজার ৩৫২ জন নেতা এবং সমর্থকের ওই দাঙ্গায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ২৬ জন মন্ত্রী এবং আইনপ্রণেতারা রয়েছেন।
বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন
বিএনপি-জামায়াতের সহিংস কর্মকাণ্ড যে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে তা বিদেশি আদালত তথা কানাডার ফেডারেল আদালতেও প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। জুয়েল হোসেন গাজী ও মোস্তফা কামাল নামের বিএনপির দুই নেতার দুটি পৃথক মামলার রায়ে দুই দফায় কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে রায় দেয়। অটোয়ায় কানাডার ফেডারেল আদালতে (সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন) (২০১৭ এফসি ৯৪)-তে বলা হয়েছে, বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আদালত মনে করে, বিএনপি হচ্ছে একটি দল যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে সশস্ত্র সংঘাত ও সহিংসতার আশ্রয় নেয়।
দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বর্তমান ধারা
বিএনপির এসব কুকীর্তির ইতিহাস মানুষের আর অজানা নয়। আর একথা বিএনপির নেতৃস্থানীয় কর্তাব্যক্তিরা ভালো করে জানেন। তারা জানেন নির্বাচনে আসার চেয়ে নির্বাচন নিয়ে দু-চারটে কথা বলে মাঠ গরম রাখাতেই উনাদের বেশি ফায়দা। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আমলে দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা বৃদ্ধি পেয়েছে সে কথা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। সারাদেশে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নির্বাচন সঠিক সময়ে সংগঠিত করা, নির্বাচনী সহিংসতার সংস্কৃতি থেকে দেশকে মুক্ত করার জন্য নিরলস কাজ করছে আওয়ামী লীগ। গত ১৩ বছর ধরে অব্যাহত আর্থিক-সামাজিক-অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সুশাসনের প্রতিষ্ঠা, দূর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ইত্যাদি জনবান্ধব কার্যক্রমের ফলে আওয়ামী লীগের প্রতি যেমন দেশের মানুষের আস্থা বেড়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিএনপি-জামাতের দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ দেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আবারো গোড়া থেকেই দেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই আমরা স্বল্প আয়ের দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিনত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আওয়ামী লীগ। দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারনে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন না পেলেও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বিরাট অবকাঠামো নির্মাণে পিছপা হয়নি শেখ হাসিনার সরকার। দেশের প্রতিটি কোনায় পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। সড়ক যোগাযোগ, ইন্টারনেট, শিক্ষা, চিকিৎসা, সকল আধুনিক সুযোগ সুবিধা পৌঁছে গিয়েছে। ২০০১-০৬ সালের মতো বিভীষীকাময় দিন এখন আর বাংলার মানুষের যাপন করতে হয় না। মানুষ এখন জানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে কেমন দিন আবার ফিরে আসবে। আর সেটাই বিএনপির ভয়ের কারন। কারন তারা জানে দু'বেলা প্রেস কনফারেন্স করে সরকারের দুর্নাম করে আর গুজব রটিয়ে নিজের অতীত মুছে ফেলা যায় না। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে তারা যা করেছিলেন এখন আর সেটা সম্ভব নয়।
বাংলার মানুষ বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। তাঁরা জানে কীসে তাঁদের মঙ্গল। তাই বিএনপি নামের রাজনীতির পরাকাষ্ঠাকে তাঁরা অনেক আগেই ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। নির্বাচন এখন বিএনপি'র কাছে আতঙ্কের নাম।
Comments