Skip to main content

শিশুর ঘামাচি তাড়াতে কি কি করবেন?


গরমে অন্য সবার মতো ছোট্ট শিশুরাও নাজেহাল। প্রচণ্ড গরমে বড়দের মতো শিশুরাও ঘেমে নেয়ে একাকার হয়। আর অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। পানির সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণও বেরিয়ে যায়। এর সঙ্গে ঘাম আর ঘামাচির যন্ত্রণা করে তুলেছে অস্থির। তাই এ সময় ঘাম আর ঘামাচি থেকে শিশুকে একটু স্বস্তি দিতে বাবা-মাকে একটু বাড়তি যত্ন তো নিতেই হবে।
গরমে শিশুকে ঘাম আর ঘামাচিতে স্বস্তি দিতে করণীয় সম্পর্কে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মাহবুব মোতানাব্বি। তার সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন আঞ্জুমান আরা কেয়া। ফলে শরীরে রক্তচাপ কমে যায়, শিশুর দুর্বল বোধ হয়, মাথা ঝিমঝিম করে। পানিস্বল্পতা গরমের সাধারণ সমস্যা হলেও অবহেলা করলে তা মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং কিডনির সমস্যাও হতে পারে।

শিশুর গায়ের জামা

যেসব শিশু অধিক ঘামে এবং সেই ঘাম আবার গায়ে শুকিয়ে যায়, তাদের ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা বেশি। তাই শিশুর গায়ের জামা ঘামে ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা খুলে দিতে হবে। যাতে ঘাম গায়ে শুকিয়ে না যায় এবং শিশুর শরীর পাতলা সুতি কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে। এতে শিশু আরাম পাবে। তা না হলে এই গরমে ঠাণ্ডার কারণে শিশুর জ্বরও হতে পারে।

প্রতিদিন গোসল

গরমে প্রতিদিন শিশুকে গোসল করাতে হবে। অনেক সময় বৃষ্টি হলে বা একটু ঠাণ্ডা মনে হলে অভিভাবকরা শিশুকে গোসল করাতে চান না। কিন্তু গোসল না করালে ঘাম বসে ঠাণ্ডা লেগে যায়। তবে ঘামে জবজবা হয়ে স্কুল থেকে কিংবা বাইরে থেকে ফিরলে সঙ্গে সঙ্গে গোসল করানো যাবে না।
কারণ ঘাম শরীরে সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা পানি দিলেও ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে। ঘাম মুছে একটু জিরিয়ে নিয়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে। এ সময় যতটা সম্ভব শিশুকে রোদে কম নিতে হবে এবং রোদে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখতে হবে। গরমে একই পোশাক শিশুকে বেশিক্ষণ পরিয়ে রাখা উচিত নয়।

শিশুর চুল

গরমে শিশুদের চুলের গোড়াও খুব ঘামে। এ ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। অনেকেই মনে করেন, ঘামের কারণে চুল ভিজলে সেটা বাতাসেই শুকিয়ে যাবে। হ্যাঁ, বাতাসে শুকায় বটে। তবে বাতাসে শুকাতে যে পরিমাণ সময় লাগে, ততক্ষণে ঠাণ্ডা লেগে যায়। তাই বাতাসে শুকাবে এই অপেক্ষা না করে যত দ্রুত সম্ভব চুলের গোড়া ভালো করে মুছে দিন।
গরমের কারণে ঘামের সঙ্গে সঙ্গে শিশুর শরীরে ঘামাচিও দেখা দেয়। গরমে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি হয়, ফলে ঘর্মগ্রন্থি ও নালি ফেটে যায়। ত্বকের নিচে ঘাম জমতে থাকে। এটাই ঘামাচি। অনেক সময় ঘাম ও ময়লা জমে ঘর্মনালির মুখ বন্ধ হয়ে ইনফেকশন হয়। এতে ঘামাচি আরও বেড়ে যেতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে ঘামে গন্ধও দেখা দিতে পারে। ঘাম ও ময়লার কারণে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকজনিত রোগও এ সময় দেখা দেয়।

শিশুর ঘাম মুছে দিতে হবে

গরমে ঘামাচি থেকে বাঁচতে নিয়মিত শিশুর ঘাম মুছে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যাতে না ঘামে। ঘাম ও ধুলাবালি থেকেই ঘামাচির জন্ম। শিশুর ত্বক খুব কোমল, আর তাই শিশুর ত্বকে গরমে খুব দ্রুত ঘামাচি উঠতে দেখা যায়। এ সময় সকাল-বিকাল দুই বেলা গোসল শিশুকে ঘাম আর ঘামাচিতে অনেকটাই স্বস্তি দিতে পারে।

এক দিন পর পর চুলে শ্যাম্পু

গোসলের সময় শিশুকে প্রতিদিন সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে দিন আর এক দিন পর পর চুলে শ্যাম্পু করে দিন। ঘামাচি বেশি চুলকানো কিংবা নখ দিয়ে স্পর্শ না করাই ভালো। নরম কাপড় ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে মুছে দিলে ঘামাচি অনেকটাই কমে যাবে। গরমে শিশুর শরীরে ঘামাচিরোধক পাউডার বা ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তবে পাউডার দেওয়ার আগে গা ভালো করে মুছে দিন। ঘামে ভেজা শরীরে পাউডার দেয়া উচিত নয়।
মোটা করে পাউডারের প্রলেপ দিয়ে রাখা উচিত নয়। এতে ত্বকের রোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আরও বেশি ঘামাচি ওঠে। এ সময় খুব ছোট শিশুকে ডায়পার না পরানোই ভালো। গরমে শিশুর বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হতে পারে ভেজা ডায়পার। ত্বকে র‌্যাশও হতে পারে এ থেকে। খুব ছোট শিশুদের গরমের সময় মাথা ন্যাড়া করে দিন। এতে মাথায় ঘামাচি, খুশকিসহ নানা রকম চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

শিশুকে পানি পান করান

গরমে শিশুকে এমন খাবার দিতে হবে, যাতে শরীর ঠাণ্ডা থাকে। এ সময় শিশুকে বেশি বেশি পানি পান করাতে হবে। বেশি ঘামলে শুধু পানি নয়, এর সঙ্গে পান করাতে হবে লেবুর শরবতও। কেননা ঘামের সঙ্গে কিছু ধূষিত পদার্থ ও যথেষ্ট পরিমাণে সোডিয়াম এবং যৎসামান্য পটাশিয়াম ও বাইকার্বোনেট শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। খুব গরমে শিশুকে দুই-একদিন পর পর খাওয়ার স্যালাইনও খাওয়াতে পারেন। তবে প্রতিদিন নয়। গ্রীষ্মে তরমুজ, বেল, পেঁপে, কাঁচা আম, বাঙ্গি প্রভৃতি ফল খেতে শিশুকে আগ্রহী করে তুলুন।
সরাসরি খেতে না চাইলে ফলের শরবত, জুস প্রভৃতি করে খাওয়াতে পারেন। একই সঙ্গে হাতে তৈরি তরল খাবারও খেতে দিন। গরমে ভাজা পোড়া, বেশি তৈলাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার ও কেনা খাবার থেকে শিশুকে দূরে রাখুন।

Comments

Popular posts from this blog

How to Protect Your Intellectual Property Rights in Bangladesh

Banking Litigation and Dispute Resolution