Search This Blog

Stories with afzal

"Stories with Afzal" is a platform where Afzal Hosen Mandal shares insights, experiences, and narratives on various topics, including legal advice, personal growth, and community stories. It serves as a space for thought-provoking content, aiming to inform and inspire readers with professional expertise, personal stories, and meaningful discussions.

Followers

STORIES WITH AFZAL

আর্টিকেল গল্পের আকারে অডিও ফাইল।

Subscribe Us

Recents

{getWidget} $results={3} $label={recent} $type={list1}

Updates

{getWidget} $results={4} $label={recent} $type={list2}

Main Tags

JSON Variables

Comments

{getWidget} $results={3} $label={comments} $type={list1}

হেবা দলিল।

 

 

আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হেবা দলিল।



এ বিষয়ে পরামর্শ দিতে গিয়ে দেখেছি, শিক্ষিত অশিক্ষিত অনেকের মধ্যেই হেবা নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা আছে। সবার ধারণা হেবা দলিল একবার সম্পাদন এবং রেজিস্ট্রির পরেও চাইলেই মনে হয় বাতিল করা যায় অথবা একজন ব্যক্তি কেবল মাত্র ১/৩ সম্পত্তি হেবা করতে পারে? ইত্যাদি । একবার দলিল রেজিস্ট্রি হলে আদালতও উপযুক্ত গ্রাউন্ড ছাড়া বাতিল করেন না।

চলুন জেনে নেওয়া যাক, হেবার বিষয়ে

আইনের সরল ভাষায়, এক ব্যক্তি কর্তৃক অপর ব্যক্তির কাছে স্বেচ্ছায় এবং বিনা প্রতিদানে কতিপয় বিদ্যমান স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির হস্তান্তরকে দান বলে।

কোন মুসলিম হেবা করতে পারে? তার কী যোগ্যতা থাকা উচিত-

এর উত্তর হলো, নাবালক নয় এমন সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলমান হেবা বা দানের মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন।

দানের উদ্দেশ্য-

প্রত্যেক দানের ক্ষেত্রে দাতার মনোভাব সৎ হতে হবে। কাউকে প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে দান করা হলে উত্তমর্ণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ইচ্ছা অনুযায়ী তা বাতিল ঘোষিত হতে পারে।

কে হেবা গ্রহণ করতে পারে-

একজন মুসলিম তার সমগ্র ভূ-সম্পত্তি যেকোনো ব্যক্তি হোক সে অমুসলিম বরাবর দান করতে পারেন। অর্থাৎ গ্রহীতার ক্ষেত্রে সাবালক, নাবালক, পুত্র, অপুত্র, স্বামী কিংবা স্ত্রী, ধনী-নির্ধন বালাই নেই, যে কাউকে দান করা যায় এবং তিনি বা তারা নির্বিবাদে দান গ্রহণ করতে পারেন।

সীমারেখা-

মুসলিম আইন মোতাবেক একজন মুসলমান জীবদ্দশায় তার সমগ্র সম্পত্তি দান করে দিতে পারে। এমনকি তার উত্তরাধিকারীদের বঞ্চিত করলেও এই দান অবৈধ হবে না। তবে শুধু মরজ-উল-মউতের ক্ষেত্রে এই ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে। মরজ-উল-মউত হলো মরণ অসুখ যাতে মৃত্যুর খুবই সম্ভাবনা থাকে এবং যার ফলে শেষ পর্যন্ত ওই ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে।

মুসলিম আইন অনুযায়ী হেবা বা দানের বৈধতার জন্য দখল দানসহ যেসব শর্ত আছে, মরজ-উল-মউতের জন্যও একই শর্তাবলি প্রযোজ্য।

মরজ-উল-মউত বা মরণ অসুখের সময় একজন মুসলমানের প্রদত্ত দানটি দাতার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারীরা সম্মতি প্রদান না করলে দাফন-কাফন ও অন্যান্য দেনা পরিশোধের পর মোট সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশের অধিক কার্যকর হবে না। প্রাসঙ্গিক বিধায় উল্লেখ্য যে দাতার ক্ষমতার এই সীমারেখাটি উইল বা ওসিয়তের মাধ্যমে সম্পত্তি হস্তান্তরের সীমারেখার অনুরূপ।

বৈধ দানের আবশ্যকীয় শর্তাবলি-

কোনো হেবা আইনানুগ হতে হলে অবশ্যই সেখানে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। সেগুলো হলো-

(১) দাতা কর্তৃক দানের ঘোষণা বা প্রস্তাব (Offer).

(২) দানগ্রহীতা কর্তৃক উহা গ্রহণ (Acceptance).

(৩) দাতা কর্তৃক দানগ্রহীতাকে দানের বিষয়বস্তুর দখল প্রদান করতে হবে। এই শর্তগুলো যদি পালন করা হয়, তাহলে হেবাটি আইনানুগভাবে সিদ্ধ হবে ।

রেজিস্ট্রেশন-

মুসলিম আইন অনুযায়ী হেবা লিখিত এবং রেজিস্ট্রি করার কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও ২০০৫ সালের ১ জুলাই থেকে সরকার অস্থাবর সম্পত্তির হেবা রেজিস্ট্রিকরণ বাধ্যতামূলক করেছে।

যেসব ক্ষেত্রে হেবা অবৈধ-

১. অজাত ব্যক্তিকে হেবা : ভূমিষ্ঠ হয়নি(Unborn Child) এমন ব্যক্তিকে দান করা অবৈধ। উল্লেখ্য, Unborn Child বরাবর দান হিন্দু আইনে শর্ত সাপেক্ষে বৈধ।

২. ভবিষ্যতের হেবা : ভবিষ্যতে সম্পন্ন হবে এমন কোনো কিছুর হেবা বৈধ নয় অথবা ভবিষ্যতে কোনো নির্দিষ্ট কিংবা অনির্দিষ্ট তারিখে সেটি কার্যকর হবে এই মর্মে প্রদত্ত দানও অবৈধ।

৩. দুই বা ততোধিক গ্রহীতাকে হেবা : বিভাগযোগ্য কোনো সম্পত্তি ভাগ না করে দুই বা ততোধিক ব্যক্তিকে দান করলে হেবাটি অবৈধ হবে, তবে প্রত্যেক দানগ্রহীতা আলাদাভাবে সম্পত্তির দখল পেলে বা পাওয়ার ব্যবস্থা করে নিলে, দানটিকে বৈধ করা যেতে পারে।

৪. দাতার বেদখলি সম্পত্তির হেবা : হেবাদাতা যতক্ষণ পর্যন্ত তার বেদখলি সম্পত্তি উদ্ধার করে দানগ্রহীতাকে তার দখল প্রদান না করবে বা দানটিকে সম্পূর্ণ করার উদ্দেশ্যে দখল লাভ করে সেটি যাতে দানগ্রহীতার ক্ষমতার আওতাভুক্ত করার জন্য সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা অবলম্বন না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দাতার বেদখলি সম্পত্তির হেবা বৈধ হবে না।

৫. পাওনাদারদের প্রতারিত করার জন্য হেবা করা অবৈধ।

৬. দানগ্রহীতার উওরাধিকারী নিয়োগের ক্ষমতা : কোনো সম্পত্তির দানগ্রহীতাকে উওরাধিকারী নিয়োগের ক্ষমতা প্রদান করা মুসলিম আইনে অবৈধ।

৭. অনিশ্চিত হেবা : দৈবক্রমে কোনো কিছু ঘটলে কার্যকর হবে এমন কোনো দান বৈধ নয়।

হেবা সাধারণত দুই প্রকার-

ক. সাধারণ হেবা (Simple Hiba ) : যে হেবায় আদৌ কোনো প্রতিদান নেই এবং দাতা অবিলম্বে দানকৃত সম্পত্তি গ্রহীতার কাছে হস্তান্তর করেন ।

খ. হেবা-বিল-অ্যাওয়াজ (Hiba-bil-awaz): এটি হলো কোনো রকমের মূল্য ব্যতিরেকে মালিকানা হস্তান্তর। কিন্তু হেবা-বিল-অ্যাওয়াজ হলো মূল্যের বিনিময়ে হেবা। হেবা বা দানের রকমের ক্ষেত্রে এটি একটি বিশেষ ব্যতিক্রম। প্রকৃতপক্ষে এবং দৃষ্টত এটি বিক্রয় সমতুল্য (as good as sale). এতে ক্রয় চুক্তির যাবতীয় উপাদানই বিদ্যমান। যা হোক, এই দানটিকে বৈধ করতে হলে দুটি শর্ত অবশ্যই পালন করতে হবে, যথা-

ক. দানগ্রহীতা কর্তৃক বিনিময় মূল্য প্রকৃত বা বাস্তবিক পক্ষেই দিতে হবে।

খ. দাতার মালিকানা পরিত্যাগকরত দান করার আন্তরিক অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে হবে।

একটি পবিত্র কোর আন কিংবা জায়নামাজ ও একটা ‘তসবিহ’ হেবা-বিল-অ্যাওয়াজের জন্য উত্তম বিনিময় (Consideration)। তবে এর মান যাই হোক না কেন, কার্যত এটি পরিশোধ করতে হবে, শুধু মুখে বললেই হবে না।

কি কি ক্ষেত্রে হেবা বাতিল করা যেতে পারে অথবা বাতিল করা যায় না-

একটা হেবা দলিল সকল শর্ত প্রতিপালন করে একবার রেজিস্ট্রি হলে সেটা আর সাবরেজিস্টার বা জেলা রেজিস্টার কেউই এই দলিল বাতিল করতে পারে না।

বাতিল করতে হলে একজন আইনজীবীর মাধ্যমে যথাযথ এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতে মামলা করতে হবে। সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন ১৮৭৭ সাল অনুযায়ী, আংশিক বাতিল চাইলে ৪০ ধারা অনুযায়ী, সম্পূর্ণ বাতিল চাইলে ৩৯ ধারা অনুযায়ী এবং ভুল হয়েছে এবং এটা রদ করতে চাইছেন তাহলে ৩৬ ধারায় মামলা করতে হবে।

নিম্ন ক্ষেত্রে হেবা বাতিল করা যায় না-

১. দখল হস্তান্তর হয়ে গেলে।

২ . হেবা গ্রহণ করে বিক্রি করে দিলে এবং হেবা গ্রহণকারী যদি অন্য কাউকে হেবা করে দেয়

৩. হেবাকৃত সম্পতির দাতা গ্রহিতা স্বামী বা স্ত্রী হলে।

৪. হেবাকৃত সম্পতি হারিয়ে বা ধ্বংস হয়ে গেলে।

৫. হেবাকৃত সম্পতি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেলে।

৬. হেবাকৃত সম্পতি বিনিময় দান বা হেবা বিল এওয়াজ হয়ে থাকিলে।

উল্লেখ্য বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি কোন দলিল রেজিস্ট্রি হওয়া মানে দলিলের গর্ভে দখল অর্পণের বিষয়টা উল্লেখ করেই রেজিস্ট্রি হয়।

কখন হেবা বাতিল বা রদ যোগ্য?

মুসলিম আইন অনুযায়ী নিম্ন বর্ণিত অবস্থায় দাতা হেবা বা দান বাতিল করতে পারেন।

১. দখল প্রদানের আগে যেকোনো সময় দাতা হেবা রদ করতে পারে। কারণ দখল প্রদানের আগে হেবাটি পূর্ণ ভাবে কার্যকর হয় না।

২. হেবা দাতাই শুধু হেবাটি বাতিল করতে পারেন। দাতার মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারীরা এটি বাতিল করতে পারবে না। অর্থাৎ দান রদে বা বাতিলে গ্রহীতার ইচ্ছা নহে, দাতার অভিপ্রায়ই মুখ্য এবং প্রযোজ্য।

৩.দান গ্রহণের পূর্বে দাতার মৃত্যু হলে দান বাতিল বলে গণ্য হবে।

এছাড়া অনেকেই একটা বিষয় জানেন না যেটা বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য যে, পাওয়ার অফ এটর্নি বিধি, ২০১৫ এর বিধি ৪ অনুযায়ী পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে দান বা হেবা সম্পর্কিত ঘোষণা বিষয়ে কোন ক্ষমতা অর্পণ করা যায় না।

 


Post a Comment

0 Comments